শুক্রবার, ৫ এপ্রিল, ২০১৯

সুমনা পাল ভট্টাচার্য




প্রিয়মুখ


()

যে আঙুলে এতো বৃষ্টির জাল তার কি উদ্যত হওয়া মানায়?
জল সে তো চিরদিনই নিম্নগামী,
তাইই কি চোখ তুলে তাকানোর আগেই ধুলো-ঝড়ে ঘর ভাঙে?

যাপনের নাম যদি দিই একতারা,
তবে মন তোমার গেরুয়া বিছানায় রেখে এসেছি আমার আজন্মের বাউল ভ্রমণ...

পথিক হয়েছো প্রিয়মুখ, খুঁজেছো নিশ্চল ছায়া তাপের জঙ্গলে
জীবনের প্রচ্ছদে মাটি কামড়িয়ে শিকড় হোক এই জড়-জীবন
বুনোগন্ধ মেখে আমিও যেন বৃক্ষ হতে পারি...


()

মাংসল জঙ্ঘায় ক্ষুধার্ত বাঘের ধারালো নখ বসিয়ে বেপরোয়া ভালবেসো একটিবার...
যত্ন করে গুছিয়ে রাখা তুলোর নরম পালক ভেজানো ঠোঁটে দোক্তা পাতার দাগ
আর কতো বারুদ পুষবে বন্ধ কপাটের শিথিল মুঠিতে?

একবার এ প্রান্তে এসে দ্যাখো, ঘন অরণ্যের অন্ধকার  ঘাড়ের আল বেয়ে বুকের দামাল ঝর্ণার পায়ে ফুটন্ত জ্বরের মত হাঁটু মুড়ে বসে আছে...
অপেক্ষা কি এতোই তরল তবে?
শুধুই অস্থির স্রোত আঘাতে আঘাতে পাঁচিল ভাঙে বলেই বুঝি অভিমান এতো শীতল!

গুহামুখ খুলে গেলে, পাথরে পাথর ঘষে আগুন জ্বালো
আদিমতার স্বাদ দাও প্রিয়মুখ...

স্বজনের ছায়াঘেরা সংসারে, এক অসহ্য উষ্ণতার অদম্য সকাল আসুক না হয়,
একটিবার...


()

অন্ধ গলির শেষে দেউলিয়া ফকির জীবন
কৌটোভর্তি সঞ্চয় সিকি আধুলির ঝংকার,
কর্ণকুহরে মন্ত্র ঢালা ভোর আবহ...
রগড়ে রগড়ে রোজ মুছি বাতাসের কান্না

ঘুমের এপারে-
ঝিমধরা তিতকুটে জ্বর আসা রাত
আর
এক নিরন্তর যাপন...

দোর খোলো প্রিয়মুখ
দুয়ারে সাজাও মঙ্গলঘট
মৃত্যুর আকাশ উপুড় করে দাও সবটুকু

প্রতি শেষের বৃত্তে এভাবেই মাপা থাক শুরুর পরিধি।


()

গ্রহণ করো এই বেবাক ভ্রম পেয়ালা
নির্দ্বিধায় পান করো গভীরে রোপিত ব্যকুল নদী
দু’হাতে ঝাপট দিয়ে ঠেলে দাও ঢেউয়ের ক্ষণজন্ম
এমন করেই, হ্যাঁ ঠিক এমন করেই লিখে দাও এক নির্ধারিত  মৃত্যুর ফরমান

ফড়িং জন্মের প্রতি পরতে ডানা ছেঁড়ার শব্দ
পরিমাপে শূন্য আসে ফিরে...

তবু,  বে-নকাব করো এই অস্থির ঘোর
মাতাল হোক স্থিতধী বিজ্ঞতা,
হোক পাগল সরল স্বাভাবিকতা

সরলরেখা চাই না, চাই এক মুঠো তরঙ্গ
জোয়ার, আরো জোয়ার প্রিয়মুখ।


1 টি মন্তব্য: