শুক্রবার, ১ মার্চ, ২০১৯

দেবলীনা চক্রবর্তী




বৈরাগ্য 


ঋতু বদলের এই সময় 
চারিদিকে যখন বসন্ত দোল খায় তখন হলুদ ছায়াবিতানে ঘুরে বেড়াতে মন চায়। 
কিন্তু -
এ আমার এক অপারগতা, বারে বারে ফিরে আসে গভীরে - বিরহ
আর তুমি বলো এ আমার নাকি গোপন অসুখ!

চারিদিকে থৈ থৈ হাঁটু জল, সহজেই পার হওয়া যায় 
তবু আমি ঐ অনড় জল কুমিরের মতো রক্তশূন্য - মৃতবৎ হয়ে ডুবে থাকি। 

সারাদিন ঐ জলজ তীক্ষ্ণ চঞ্চুগুলো আমার  শরীরময় আঁচড়াচ্ছে কামড়াচ্ছে সূচ ফোটাচ্ছে
আমি নির্বিকার;
এ আমার একরকম স্থবিরতা,
ভীষণরকম ফুরিয়ে যাওয়া

তবু একাগ্র পানকৌড়িটির  মতো মুখ গুঁজে 
পড়ে থাকি - 

 নীল শীতলতার খোঁজে 

 অথচ এই জল আমার তৃষ্ণার নয়, বৈরাগ্যের।

  
মাঘী পূর্ণিমা  


বিগত দিনের সমস্ত শীত জড়িত বিষাদ-বেদনা জলাঞ্জলি দিয়ে ফিরে আসতে
ইচ্ছুক আজকের মাঘী রোদ। 

পঞ্চমী তিথির শুদ্ধ গন্ধক রূপ উপচে পরছে চারিপাশে,
কয়েক মুঠো সাজানো রঙে আকাশ আঁকতে গিয়ে দেখি ক্যানভাসে ফুটে ওঠে
বাসন্তি কারুকাজ।

যদিও ইঁটের পাঁজরে এখনও শীতকালীন ভিজে গন্ধ 
পেয়ালা ভরা উষ্ণিক ছোঁয়া ছিল মাত্র ঠোঁট-মুখ-গলা পর্যন্ত!

তবুও,
এই মুহূর্তে রোদ বিলাসিতা আর নেই কোন
দেওয়াল জুড়ে এখন পলাশ পলাশ গন্ধ,
নৈর্ঋত মুহূর্ত, দেখতে দেখতে সূর্যাস্ত!
  
 তারপর বিকেলের কোল ঘেঁষে 
 নেমে এসে ঈশ্বরী পূর্ণিমা,
 এঁকে দেবে সাদা আলপনা - বিস্তৃত চরাচরে। 
    
আর আমি, 
শূন্যতায় বসে খুঁজে ফিরবো আমার অক্ষর দীনতা!



বিভ্রম 


 বিষণ্নতার ঘেরাটোপে দিন থেকে রাত কেমন ছন্দহীন কাটে
 হলুদ ঝাপসা আলোর দিন 
 আর কুয়াশাচ্ছন্ন নীল অন্ধকার,
গায়ে মেখে কেটে যায় রাত;

জন্মঅসুখের ঝাঁঝ এখনও জড়িয়ে আছে শীত শরীরময়!

মাঘের শেষ বেলার অশ্বারোহী সূর্য 
যেতে যেতে বারবার ফিরে তাকায় 
সমর্থ বিকেলের কাছে বলে যেতে চায়,
একটাই কথা -
বন্ধ দরজার পিছনে অপেক্ষায়,
শুশ্রুষার পরিশ্রুত জল ---



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন