বাবা
সময় কীভাবে সময়কে আক্রমণ করে
বাবা আমাদের বোঝাবার
চেষ্টা করতেন
আমাদের পেটে তখন রাক্ষুসে
ক্ষিদে
আমরা বুঝতেই চাইতাম না
বাবার ওইসব তত্ত্বকথা…
শুধু লঙ্গরখানার শক্ত রুটি
চিবুতে চিবুতে
হাঁ কোরে চেয়ে থাকতাম বাবার দিকে
আর বাবা গম্ভীরভাবে বলে যেতেন
নেহরুর সাথে তাঁর ডিনার খাওয়ার গল্প
মা
ওই আমার উপবাসক্লিষ্ট মা মলিন বসন
তুলসীতলার নীচে নতজানু সন্তর্পণে প্রদীপ জ্বালান
কল্যাণ কামনা করেন আমাদের
আমি তার অপদার্থ মূর্খ সন্তান
কিছুই দিই নি তাঁকে সুখ শান্তি তুচ্ছ উপহার
শুধুই কবিতা লিখে নষ্টামি করি
কবিতা কি তাঁর পায়ে নৈবিদ্যির ফুল হয়ে
ঝরে পড়ে
শৈশব
ফুটন্ত হাঁড়িকে ঘিরে বসে থাকি আমরা ক’জনা
মায়ের ক্ষয়াটে মুখে হাসি নেই
ঘুমন্ত ভায়ের চোখে শুকনো জলের দাগ
তোলা উনুনের আঁচে চড়বড় কোরে ফোটে
একমুঠো চাল
সতৃষ্ণ নয়নে আমরা চেয়ে থাকি শার্দুলের মতো
আমাদের চোখের পলক পড়ে না
গরম ভাতের গন্ধে উপে যায় দু চোখের ঘুম
ফুটন্ত হাঁড়িকে ঘিরে
এ ভাবেই কেটে যায় আমার শৈশব
গরু
পেছন ফিরে সে একদিন হঠাৎ
আবিষ্কার কোরে ফেলে
গু নয় গোবর
কিছু দুরে কাদাডোবা
তার মাঝে দেখা যায় চিলতে আকাশ
চারপাশে কোথায় ভাতের খনি
শুধু ঘাস শুধু ঘাস
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন