ছুটি
ঝুমকা কাজের স্তুপ থেকে মাথা তুলে চা বানাতে যায়। বড্ড মাথা ধরেছে। চা বানিয়ে জানালার ধারে বসে সে। মন টুকরো হতে লাগে দু’সেকেন্ড। আর তাকে কুড়িয়ে জড়ো করে জোড়া দিতে দিতে দিনের আলো ফুরাচ্ছে। তবু মসৃণ মিলাচ্ছে না দাগগুলো, ফ্যকাসে হয়ে রয়ে গেছে। মাঝে মাঝে মনে হয় এত জবরদস্তি মেলানোরই বা কিবা দরকার! অনাবশ্যক বনিবনায় বশ মানে না ঋতুও।
গাঢ করে শীত আসবে রোদের আলো মিউট করে দিতে। ফার দেয়া সব ওম ওম পোশাকে ভরে যাবে ব্যালকনি থেকে সুপারমল। বদলে যাবে ফুডকোর্টের স্ট্যাটাস। ফাঁকা হয়ে যাবে গাছের পাতাসমগ্র। গুচ্ছের কোলাহল থেকে মুখ বার করে সারাদিনের আদর নেবে দূর থেকে আসা রিংটোন। বোহেমিয়ান সময় চলে যাবে বিনাশর্তে। সারা দুপুর যতটা ঘুমঘুম, নিস্তেজ, তার চেয়েও অলস গতিতে আঁকা হয়ে যাচ্ছে লক্ষণরেখা। পালাতে চাও?
একবার মন ঠিক করে ফেললেই নড়েচড়ে উঠবে দলিল দস্তাবেজ, কোর্টকাচারী। সহপাঠী উকিল অভয়
দিয়েছে বন্ধুত্ব রাখবে সকল সহযোগিতায়। বিছিন্ন হতেও সহযোগিতা লাগে।
চা শেষ করে ফের টেবিলে এলো ঝুমকা। জানালার বাইরের অগাধ স্পর্ধা দেখতে দেখতেই হুট করে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়ে গেলো। নির্ভার লাগছে। মাস শেষেই ঠিকানা বদলে যাবে তার। যা শেষ হবার তা শেষ হোক তুরন্ত।
চা শেষ করে ফের টেবিলে এলো ঝুমকা। জানালার বাইরের অগাধ স্পর্ধা দেখতে দেখতেই হুট করে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়ে গেলো। নির্ভার লাগছে। মাস শেষেই ঠিকানা বদলে যাবে তার। যা শেষ হবার তা শেষ হোক তুরন্ত।
ছুটিতে একের পর এক সিনেমা দেখে কাটছে মানসের, হাতে মোবাইল। মনে
হয় বাড়িতে কেউ নেই। অথচ পাশের ঘরেই দিব্যি তারই
সংসারে ব্যস্ততার সহবাসিনী। একের প্রতি অন্যের কোন আসক্তি নেই, নেই বৈপরিত্বের সামঞ্জস্য।
যেন ফোটার জন্য ফোটে ঝরার জন্য ঝরে। তারা বুঝে গেছে তাদের সম্পর্ক থেকে চলে গেছে বন্ধুত্ব।
বহু বছর তারা গল্প করতে করতে কফি বানায় না, একসাথে নতুন কোন
সুন্দর দৃশ্য দেখা হয়ে ওঠে না। বৈধ বাঁধা পড়েছে
অবৈধ ভাবেই।
এই দ্বিতল ভবনে আরও আছে একজন মালি যোগসূত্র হয়ে। মনযোগ দিয়ে মাটি আলগা করে, মাটিকে খাবার দেয়। শীত আসার আগেই মাটির ভেতরে জেগে থাকে ডালিয়া জিনিয়া।
এই দ্বিতল ভবনে আরও আছে একজন মালি যোগসূত্র হয়ে। মনযোগ দিয়ে মাটি আলগা করে, মাটিকে খাবার দেয়। শীত আসার আগেই মাটির ভেতরে জেগে থাকে ডালিয়া জিনিয়া।
বাড়িতে বসবাসরত দুই নারীপুরুষ আলাদা হতে চায় বেশক। তবু তাদের
একত্রে থাকতে হয় পরম অনিচ্ছায়। ঝুমকা মন থেকে সরিয়ে ফেলে অপেক্ষা কিংবা উপেক্ষাও। মানসের কোন চাওয়া অপূর্ণ থাকে
না দিনের শেষে। কিন্তু তার গুমোট ধাত। অনায়াসে উপেক্ষায় অভ্যস্ত। মোবাইলে দ্রুত
আঙ্গুলে গেম। একের পর এক ধাপ পার হয়ে যাচ্ছে। সে উচুঁতে আরো উচুঁতে স্কোর তুলে ফেলছে, ঝুমকা পাশে বসে ভাবছে কখন তাকে জিজ্ঞেস করবে পার্শে মাছের ঝোলটা
কেমন হয়েছিলো। কিম্বা কবে লং ড্রাইভে যাবে। সুযোগে জেঁকে বসে দূরত্ব। শীতলতা তার শহরে না,
মনে অবস্থান করে।
ভর সন্ধ্যায় কে যেন কলিংবেল বাজিয়েই চলেছে। টুংটাং টুংটাং। ঝুমকা ধীরে সুস্থে দরজার দিকে
এগোয়। আজ সে এক ডিসিশন জানাবার জন্য উকিলবন্ধুকে সময় দিয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন