শিরোনামহীন
(২৪)
এই যে দেখে যাচ্ছি দেখাকেই
অমূল্য মানদণ্ডে রেখে
রি রা রো করে উঠছে শরীরের রোমকূপ
স্বরতন্ত্র ফুলে উঠছে
ফেঁপে উঠছে উ আ আহা ওফ
তাকে ঘুমিয়ে পড়তে দিও না
দেখা, কিন্তু দেখা-নয়ও একরকমের চোখ
মণিপদ্মের এলে-বেলে
ভাবে ফসকে যায়
তার জন্য কোনো আহা আহাই
যথেষ্ট নয়
রুটি বেলনার সময় কেই-বা তার দিকে সবসময় তাকিয়ে থাকে
ফসিল থেকে উঠে আসছে
একেকটা শরীর
চোখ ভাবছে ভ্রূণ থেকে, আরও বাড়তি এক শরীর কল্পনা
চোখের কী ভুল!
তারও কিছু পূর্বানুরাগ থাকে
আর যে চোখকে দেখায় সামিল
করাই গেল না
তার জন্য অনুকম্পা নয়, পারো-তো একটু আলো রেখো
ভীষণ অন্ধকারেও বলা
যায় না না-দেখা-চোখ
আমাদের রাস্তা দেখিয়ে নিয়ে চলল দিকভ্রষ্টতাকে হনন করে
(২৫)
হারিয়ে ফেললেও এমনকিছু
থেকে যায়
যাতে পিপল গাছ পল্লবে পল্লবে ভরে দিতে পারে মধ্যবর্তী আকাশ
রূপান্তরে রয়েছে যে
তার কাছে কোনও নিষেধই যথেষ্ট নয়
ফিরে পাপড়ির গান গাইবেই বাতাসে
আলুথালু বেশ বেয়ে নেমে
যাবে বিষাদতারাগুলো
অধিকেরও বেশি গালগল্পে সামান্যই ইস লেগে থাকবে
খামোস বললেই থেমে যাবে
ঘূর্ণনের শিরদাঁড়া এমনটা নয়
বরং বেগের জোয়ারে ফুলকলি রাত-দিন পেরোতে থাকবে স্বপ্নের ঘাট
কোথাও যাব না বললেও
এমনকিছু যাওয়া অবশ্যই মনে হয়
যাতে আমৃত্যু এক ঝাড়লণ্ঠনের দুলে যাওয়া সঙ্গি হয়ে থাকে
আমাদের ভেতরবাড়ি আর
বাইরের ঘরের ফাঁকের মধ্যে বসে থাকা টিয়াটি
কৃষ্ণনাম ভুলে আসুন বসুন ভালো থাকুন-এ মত্ত রসিয়া
উলঙ্গ হওয়ার আগে কে
না চায় বেশবাস হাত দিয়ে একবার ঠিক করে নিতে
হয়তো পারে হয়তো পারেও না
খাটের চারপায়ে আঁটোসাঁটো
রজনীগন্ধার দাঁড়া বেয়ে নেমে যাওয়া একটা কীটকল্পনা
তার পক্ষে আর কঠিন না-ও মনে হতে পারে
(২৬)
আমাদের পোষা প্রিয় চৌকোগুলো
আর চৌকো থাকছে না
গোলগুলো পেছনফিরে তাকাতে চেয়ে হারিয়ে ফেলছে কেন্দ্র
অথচ কোনো বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ
ছিল না, ছিল না বিপদচিহ্ন
বেহুদাই ডিসেপ হওয়ার মত্তামি আর রূপান্তরের জেদ
আমি ও আরও অনেকেই চেয়েছিলাম
প্রাণ দিই আকৃতিগুলোকে
যাতে সন্ধেবেলায় ওরা প্রদীপ জ্বালতে পারে তুলসীবেদিতে
যেন পথ ভুললেও গান গেয়ে
জানান দিতে পারে অবস্থান
আর প্রতিটি দরজা খোলার আগে জামাকাপড় গুছিয়ে রাখে আলনায়
তোয়াজ চেয়েছিল, দেদার দিয়েছিলাম। নীতিকথা বলত খুব,
শুনতাম
বাঁশির সঙ্গে মিল ছিল না কোনোদিনই যতই সে সুরে বাজুক
হাঁড়িয়া পানে তুষ্টি
ছিল না, যতক্ষণ না নেশা টলমল পাত্রখানা
শান থাকুক আর নাই থাকুক নাচের মুদ্রা বানাতো শরীরে
আমি মাতাল হওয়ার ভান
করে ওদের গঠনের দিকে চেয়ে থাকতাম
বিনিদ্র বিছানার কোনায় কম্বলের ভাঁজে ওদের অস্তিত্ব টের
পেতাম
আজ প্রকৃত মাতাল হয়ে
ওদের গঠনের ভিন্নতা লক্ষ্য করি
আমাকে বিবশ করে ওরাও পালটাতে থাকে অসহ যন্ত্রণায়
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন