শকুন
দিনগুলি উড়ে আসে...
চারিদিকে
ঈশ্বরকণা, দশ-বিশ কেজি ওজনের রুই কাতলা, ঐ যে
উঠানে পারিজাত সন্ধ্যা নামে। আসলে আমরা ভুল
করে ছুঁয়ে থাকি সামন্তবাদের বাতাস। একবার বৃত্তবন্দি জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে গেলে
ছোটখাটো খাল কিংবা নদী পার হওয়াও অসম্ভব। সেদিন
এক বুড়ো শালিক এসেএই নিমতেতো কথাটি বুঝিয়ে দিয়ে গেল অনায়াসে। আসলে আমাদের
জীবন এক শিক্ষাক্ষেত্র। এখানে শিক্ষক হিসাবে যে
কেউ বৃত্তটুকু ভরাট করতে পারে। হয়ত ক্ষুদ্র বিবর্ণ এক পাতা চুপিসারে অনেক কিছু
শিখিয়ে দিয়ে চলে যায় বাজারের
পথ ধরে। আমি জানি, তোর এই কথাটা বিশ্বাস
হচ্ছে না।
- আসলেও হচ্ছে না।
-ধর, এলেমেলো বাতাসে একটা পাতা এখানে সেখানে শোকতাপ পোহাচ্ছে। যাকে বলে যত্রতত্র চলাফেরা। তখন কি তোর মনে হয় না, জীবন একটা ঝরাপাতা ছাড়া কিছু নয়?
-এমন তো সবাই ভাবে।
-যখন গাছের সব পাতা একসাথে নাগরিক দোল খায় তখন কি তোর ভেতরে দোলাচল সৃষ্টি হয় না?
-হবে না কেন? হয় তো...
-তাই তো বললাম, শিক্ষকের ভূমিকায় যে কেউ অবতীর্ণ হতে পারে। এই যে তুই, সারাদিন হাড়ভাঙা খাটুনির পর একজন অক্ষমের পাশে বসে থাকিস তাতে তোকেও শিক্ষক মনে হয়। এটা হাসির কিছু নয় বিপ্লব। আমি তোর কাছে থেকেও অনেক কিছু শিখি। শিক্ষার ক্ষেত্রে ছোট-বড়, পরধর্ম বলে কিছু নেই। ম্যাট্টিক পাশ করার পর তুই একটা চাকরি করছিস। শুধু চাকরিই নয় একটা সংসারও। অথচ আমাকে দিয়ে কিচ্ছু হল না। বিলাসবহুল জীবন আমার সমস্ত ক্ষমতাকে চূর্ণ করে দিয়ে গেল। একটা বৃত্তের চক্রে পড়ে ক্রমাগত হাঁপিয়ে উঠছি অথচ দেয়াল ভাঙার ক্ষমতা নেই। অনেক রক্তপাত, চুরমার, উপেক্ষা তবুও পৃথিবীর দিকে পা চলে না। এই ক্ষমতাহীন জীবন খুব কষ্টের। জানালা দিয়ে তাকালে চোখে পড়ে, চুড়ির দোকান। কোথা থেকে জানি, উড়ে আসে মাংস পোড়া গন্ধ। চারদিকে জিলেপির প্যাঁচ। নৈতিকতার দরপতন ঘটছে। একসময় মনে হয়েছিল, বঞ্চিত মানুষের হাতেই বুঝি শোভা পায় কলম। পথ চলতে চলতে বুঝেছি, একজন লেখককে কতটা অবর্ণনীয় টানপোড়েন আর প্রশ্নোত্তর পর্বের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সেদিনের বোকামির কথা মনে পড়লে এখন হাসি পায়। নিজের ভুল বুঝতে পেরেও এখন আর ফিরতে পারি না। প্রায় মনে হয়, ফেরা উচিত। কিন্তু শব্দেরা আটকে রাখে। এই যে ব্যর্থতা এর দায়ভার শুধুই আমার। কোন কোনদিন এইভাবে বেঁচে থাকাকে অর্থহীন মনে হয়। অবশ্য ঔষধ কোম্পানিগুলির অনেকখানি উপকার হচ্ছে। এসব থেকে ডাক্তারদের ভিজিটও বাদ যায় না। এ যেন ব্যর্থতার সাতকাহন।
প্রতিদিন কতশত মানুষ চলে যায় জাহাজঘাটে। কেউ কেউ উঁকি দিয়ে দেখে, প্রসাদতুল্য বাড়ি। কিন্তু ঐ পর্যন্তই। সাড়ে তিনহাজার বর্গফুটের ভেতর যে ভূতপ্রেত আর আজরাইলের সাথে দ্বন্দ্বযুদ্ধ তার খবর কেউ রাখে না। সুদৃশ্য ভারি পর্দা সব আড়াল করে। আসলে কি জানিস, মানুষ জলরঙ দেখে না। তারা মনে রাখে, আন্দোলন। বিপ্লব এবং যুদ্ধকে। এই যে সংসার, বাচ্চাকাচ্চা ফেলে তোর বউ পালিয়ে গেল এই কৌশল সবাই জানে না। নতুনের মধ্যেই যত ভয়। পুরাতন আঁকড়ে ধরে থাকার মধ্যে কোন সাহস নেই। বিপ্লব, তুই কি কখনো অচল মুদ্রা দেখেছিস? আমি হলাম সেই অচল মুদ্রা। এই চোখ বন্ধ করে শুধু যে বাস্তবতাকে অস্বীকার করি তা নয়। চোখ বন্ধ করে রাখলে নিজেকে মৃত ভাবতে তেমন কষ্ট হয় না।
- আসলেও হচ্ছে না।
-ধর, এলেমেলো বাতাসে একটা পাতা এখানে সেখানে শোকতাপ পোহাচ্ছে। যাকে বলে যত্রতত্র চলাফেরা। তখন কি তোর মনে হয় না, জীবন একটা ঝরাপাতা ছাড়া কিছু নয়?
-এমন তো সবাই ভাবে।
-যখন গাছের সব পাতা একসাথে নাগরিক দোল খায় তখন কি তোর ভেতরে দোলাচল সৃষ্টি হয় না?
-হবে না কেন? হয় তো...
-তাই তো বললাম, শিক্ষকের ভূমিকায় যে কেউ অবতীর্ণ হতে পারে। এই যে তুই, সারাদিন হাড়ভাঙা খাটুনির পর একজন অক্ষমের পাশে বসে থাকিস তাতে তোকেও শিক্ষক মনে হয়। এটা হাসির কিছু নয় বিপ্লব। আমি তোর কাছে থেকেও অনেক কিছু শিখি। শিক্ষার ক্ষেত্রে ছোট-বড়, পরধর্ম বলে কিছু নেই। ম্যাট্টিক পাশ করার পর তুই একটা চাকরি করছিস। শুধু চাকরিই নয় একটা সংসারও। অথচ আমাকে দিয়ে কিচ্ছু হল না। বিলাসবহুল জীবন আমার সমস্ত ক্ষমতাকে চূর্ণ করে দিয়ে গেল। একটা বৃত্তের চক্রে পড়ে ক্রমাগত হাঁপিয়ে উঠছি অথচ দেয়াল ভাঙার ক্ষমতা নেই। অনেক রক্তপাত, চুরমার, উপেক্ষা তবুও পৃথিবীর দিকে পা চলে না। এই ক্ষমতাহীন জীবন খুব কষ্টের। জানালা দিয়ে তাকালে চোখে পড়ে, চুড়ির দোকান। কোথা থেকে জানি, উড়ে আসে মাংস পোড়া গন্ধ। চারদিকে জিলেপির প্যাঁচ। নৈতিকতার দরপতন ঘটছে। একসময় মনে হয়েছিল, বঞ্চিত মানুষের হাতেই বুঝি শোভা পায় কলম। পথ চলতে চলতে বুঝেছি, একজন লেখককে কতটা অবর্ণনীয় টানপোড়েন আর প্রশ্নোত্তর পর্বের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সেদিনের বোকামির কথা মনে পড়লে এখন হাসি পায়। নিজের ভুল বুঝতে পেরেও এখন আর ফিরতে পারি না। প্রায় মনে হয়, ফেরা উচিত। কিন্তু শব্দেরা আটকে রাখে। এই যে ব্যর্থতা এর দায়ভার শুধুই আমার। কোন কোনদিন এইভাবে বেঁচে থাকাকে অর্থহীন মনে হয়। অবশ্য ঔষধ কোম্পানিগুলির অনেকখানি উপকার হচ্ছে। এসব থেকে ডাক্তারদের ভিজিটও বাদ যায় না। এ যেন ব্যর্থতার সাতকাহন।
প্রতিদিন কতশত মানুষ চলে যায় জাহাজঘাটে। কেউ কেউ উঁকি দিয়ে দেখে, প্রসাদতুল্য বাড়ি। কিন্তু ঐ পর্যন্তই। সাড়ে তিনহাজার বর্গফুটের ভেতর যে ভূতপ্রেত আর আজরাইলের সাথে দ্বন্দ্বযুদ্ধ তার খবর কেউ রাখে না। সুদৃশ্য ভারি পর্দা সব আড়াল করে। আসলে কি জানিস, মানুষ জলরঙ দেখে না। তারা মনে রাখে, আন্দোলন। বিপ্লব এবং যুদ্ধকে। এই যে সংসার, বাচ্চাকাচ্চা ফেলে তোর বউ পালিয়ে গেল এই কৌশল সবাই জানে না। নতুনের মধ্যেই যত ভয়। পুরাতন আঁকড়ে ধরে থাকার মধ্যে কোন সাহস নেই। বিপ্লব, তুই কি কখনো অচল মুদ্রা দেখেছিস? আমি হলাম সেই অচল মুদ্রা। এই চোখ বন্ধ করে শুধু যে বাস্তবতাকে অস্বীকার করি তা নয়। চোখ বন্ধ করে রাখলে নিজেকে মৃত ভাবতে তেমন কষ্ট হয় না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন