কির্সফ
চারটে
রাস্তা দিয়ে চারজন দৌড়ে এসে এক ধাক্কায় মিশে গিয়ে অন্য একজন পাঁচ নম্বর পথ ধরে
ছুটে চলে গেল। এই স্বপ্নটা মৌরি রোজ দেখে, ভোররাতে। ভোরের স্বপ্ন কি সত্যি হয়? চোখ
ছোট করে ও স্বপ্নের আরেকটু ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে, ওরা কারা? তখনি কেউ হাতের ওপর
চিরুনি রেখে লোম খাড়া করে ওর ঘুম ভাঙিয়ে দেয়।
ঐ
চারজন কি দুজন মেয়ে, দুজন লোক? তিনজন মেয়ে, একজন লোক? নাকি তিনজন লোক, একটা মেয়ে? পাঁচ
নম্বর জন কে? কোথা থেকে এল? বাকিদের কি হল? কোথায় গেল? তবে কি তিনজন লোক ঐ
মেয়েটাকে...? মৌরির চৌত্রিশ সাইজ বুক হাপরের মত ওঠানামা করতে থাকে। ওরা কি
জামাকাপড় পড়েছিল? ওদের হাতে কি ধারাল অস্ত্র থাকে? মেয়েটার সঙ্গে ধাক্কা লাগার পর
ওরা কি মেয়েটার সালোয়ার ঐ ছুরি দিয়ে টুকরো টুকরো করে পেঁজা মেঘের মাঝে উড়িয়ে দেয়? মৌরির
বুকের খাঁজ বেয়ে কুলকুল করে ঘামের স্রোত নামতে থাকে, ওকে ভিজিয়ে দেয়।
রোজ
মৌরি এক স্বপ্ন দেখে, ঘুম ভেঙে উঠে বসে, রোজ নিজেকে এক প্রশ্ন করে, উত্তর পায় না,
ঘামে ভিজে যাওয়া নাইটি পাল্টে পড়তে বসে। বাইরের আবছা লাল আকাশ ঘন হতে হতে ওর চশমার
ভেতর দিয়ে সামনের খোলা বইতে দুটো ছোট ছোট সূর্য বানিয়ে দেয়। ওর বিজ্ঞান বইয়ের অচেনা
চিহ্নগুলো মাথার চারপাশে খেলা শুরু করে, দূরে পুকুরধার থেকে হরিনাম ভেসে আসে, এই দুয়ের
মাঝে মৌরি চেপ্টে গিয়ে ছোট, আরো ছোট।
মৌরি
সামেশন বোঝে না। ও শুধু জানে ভোররাত্তিরে কিছু লোক ‘কির্সফ কির্সফ’ কীর্ত্তন গেয়ে রোজ
এক পা করে ওর চারতলার পূবখোলা জানালার দিকে এগিয়ে আসে, পেছনে থেকে দৌড়ে আসে তিনজন লোক, একটা মেয়ে,
আর ধাক্কা লাগার পর কে কাকে গিলে খায় সেটা বোঝার জন্য ও আজরাতে আবার তৈরি হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন