দুটো আলোর প্রেম
মেয়েটা
তখনও বিছানায় শুয়ে।
সাদা
বিছানায় ফুলের মতো শান্ত। ছেলেটা
তার মাথার কাছে। বসে আছে। দেখে ফুলের শরীর থেকে রঙিন আলো উড়ে উড়ে চলে যাচ্ছে গাছের
পাতায়,চাঁদের ওপর, তারাদের ঝকমকানিতে। আলোগুলো উড়েই
যাচ্ছে, ফিরছে না।
দূরবীনে
চোখ রেখে খোঁজে দূরে, আরও দূরে। ছেলেটা জানে আলো বড়
বিচিত্রগামী। সোজা বাঁকা ভাঙাচোরা সমস্ত রাস্তায় আলো চলে। সরু একটা সুচের ডগা পেলে
আলো বেঁকে যায়। ভারী কালো শরীর নিজের দিকে টেনেও নেয়
অনেক আলো। হাঁসফাঁস করলেও সেখানে আলোর মৃত্যু হয়। ছেলেটার মন খারাপ হয়ে যায়।
সে
দেখল জল টলমল সবুজ ক্ষেতে একদল লোক কাজ করছে। তাদের কোনো দিকে তাকাবার সময় নেই।
পৃথিবীর সব আলো চরাচরে ছড়িয়ে যায়। লোকগুলো এসব কিছুই দেখে না। ছেলেটার মনে হল এরা
সব জীবন্ত স্ট্যাচু।
সে
দেখল একদল সৈন্য আইপিসের সামনে ধাক্কা খাচ্ছে। বাকি সব অন্ধকার হয়ে যায়। শুধু
অস্ত্রের ঝমকানি। শরীর আলোহীন। দলা দলা কালো অন্ধকার। আইপিস খারাপ হয়ে গেল কিনা
বুঝতে পারে না। দূরবীন থেকে চোখ সরিয়ে নেয়। সরতে সরতে
চাঁদের দিকে বাড়িয়ে দেয় চোখ। একটানা সাদা আলো। ফুলের মতো মেয়েটার আলো ওখানে পায়
না।
সে
জানে দুটো আলো মিশে বিচিত্র তরঙ্গ,তার কোথাও আলো
থাকে কোথাও থাকে না। ছেলেটা আলো খোঁজে। চাঁদের সাদা আলোয় কোনো অন্ধকার মিশে থাকে
না। এমন নির্ভেজাল আলোয় নিজেকে হারিয়ে ফেলা যায় না। হারিয়ে না গেলে আলো
আঁধারির ভালবাসা বোঝা যায় না। সে জানে মেয়েটার শরীর থেকে আলো বেরিয়ে চলে গেছে। সেই আলো তাকেই
খুঁজেই বেড়াচ্ছে। কিন্তু তার দূরবীনের আইপিস খুঁজে পাচ্ছে না।
খুঁজতে
খুঁজতে ছেলেটা এগিয়ে যায় তীব্র গতিতে।
আর...
ঘরের
জানালার সবাই দেখল বিছানায় দুটো আলাদা রঙের আলো খেলে বেড়াচ্ছে। এক আলোর শরীরের
মধ্যে অন্য এক আলো। কেউ এমন কখনো দেখেনি। প্রচণ্ড কৌতূহলে সবাই আলো দুটোকে ছুঁতে
চায়। আলো দুটো থমকায়। যেন শান্ত হয়ে দেখল ভিড়টাকে। আর একটা দমকা হাওয়ায় দুটো
বিচিত্র রঙ দরজা দিয়ে উড়ে কোথায় চলে যায়। পড়ে থাকে জানালা
দিয়ে উড়ে আসা দুটো ফুল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন