সাইকো অ্যানালিসিস
মন ও শরীরের বিদ্রোহ কখনও কখনও বিচলিত করে। এক-একদিন
বেশ কাজের দিন হয়ে যায়। আবার উল্টোটাও ঘটে। কিন্তু প্রত্যেকের ব্যস্ততা আগের
তুলনায় বেশ অনেকটাই বেড়ে গেছে বলে আমার মনে হয়। ফোন-কল বেড়ে গেছে আজকাল। এক কাপ চা
আর খবরের কাগজ নিয়ে সকালের শুভ সূচনা। এত কম্পিটিশন
কেন ইম্পর্ট্যান্ট হয়ে উঠছে! ভালোবাসার ঝর্ণাধারায় পজিটিভ থিংকিং অতি অবশ্যই জরুরি
পদক্ষেপ। চেক রিপাব্লিক-এর প্রাগ-এ সিগ্মন্ড ফ্রয়েড-এর ঝুলন্ত স্ট্যাচু বেশ ভাবায়।
মানব মনের আত্মহত্যার প্রতি আকর্ষণ –– উঁচু বিল্ডিং থেকে নিচে লাফ দেবো নাকি দেবো
না –– এই ফ্রয়েডিয় দর্শন-এর নিদর্শন দেখে আতংকিত হই।
বিকেলের সোনাঝরা রোদ্দুর গায়ে মেখে রীমা এসেছে। আমি
সীমা, ওর লাইফ এবং বিজনেস পার্টনার। আমরা একসঙ্গে বিউটিপার্লার চালাই। আজ থেকে
প্রায় দেড়শ বছর আগে সিগ্মন্ড ফ্রয়েড হোমোসেক্শুয়ালিটি নিয়ে প্রগতিশীল চিন্তা
করেছিলেন। তখন হোমোসেক্শুয়ালকে অসামাজিক মনে করা হতো। কোথাও কোথাও মৃত্যুদন্ড
পর্যন্ত হতো। কিন্তু ফ্রয়েড বিশ্বাস করতেন যে হোমোসেক্শুয়ালিটি কোনো রোগ নয়, একটি
স্বাভাবিক প্রাকৃতিক ঘটনা। বর্তমানে বিভিন্ন দেশ এই বিষয়ে কানুনি সহমতি দিচ্ছে।
আমি আর রীমা দুজনে জমিয়ে সংসার করছি। সংসারে একজন
ছোট্ট সদস্যও এনেছি, নাম রেখেছি চম্পা। অনাথালয়ের ঠিকানা ছেড়ে আমাদের চম্পা, এখন
আমাদের কন্যাসন্তান। এই বাচ্চা দত্তক নেওয়া নিয়ে কত যে টানাপোড়েন যাচ্ছে! চম্পা পার্কে খেলা করছে। ওর শৈশব হাতে মাখছি।
মানুষের ব্যক্তিত্ব নির্মাণ একটি জটিল প্রক্রিয়া। ফ্রয়েডের ‘সাইকো অ্যানালিটিক
থিওরি’ অনুসারে ‘ইড’, ‘ইগো’, ‘সুপার ইগো’ –– ব্যক্তিত্ব নির্মাণে আলাদা আলাদা
ভূমিকা পালন করে। জন্মগতভাবে আমরা ‘ইড’ পেয়েই থাকি। ‘ইগো’ ‘ইড’কে সামাজিক রূপে
স্বীকার্য-রূপ দেয়। ব্যক্তিত্ব নির্মাণের শেষ পর্যায় হল ‘সুপার ইগো’। ‘সুপার ইগো’
সমাজ ও অভিভাবকের সঙ্গে মিলে, নৈতিক মূল্যের উপর কাজ করে।
যেমন কৃষ্ণগহ্বর অত কালো নয়, তেমনই মনের আনাচে কানাচে
বিচ্ছুরিত আলোক-বিকিরণ দেখতে থাকি আরও একটু ঘনিষ্ঠ ক্ষেত্র-আয়তনে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন