অবন্তিকার ডায়েরি
(১)
অবন্তিকা
জানিস মনের মধ্যে অথৈ কথা
বিচ্যুত
ভাবনার মাঝে প্রতিনিয়ত ছবি
সেদিনের
স্মৃতি জমা আছে মনের সিন্দুকে
তোর
আর আমার অমল সৌহার্দ্র্যের ভাষা
জানি
কেউ বোঝে না,
তবু
মাছের চোখের নির্লিপ্ততা ছুঁয়ে থাকে
অব্যক্ত
কষ্টের ত্রিভুজ
তখন
ছিল ফুল কুড়োনোর বেলা
পিডব্লিউডির
রাস্তা জুড়ে এক্কা দোক্কার ঘর!
মাখনের
আইসক্রিমের বাক্সের হাতছানি
বুড়ি
দিদিমণির হাতের বেত নামতার ক্লাসে
সেইই
বড় গাছের তলায় গোল হয়ে বসা
সবকিছু
শুধু তোর আর আমার
মনে
আছে তো সই সেই সেদিনের কথা?
(২)
নীল
পাহাড়ের গায়ে উদিত সূর্য ভাস্বর
নিচে
বহু দূরে আদিবাসী গ্রাম
ভেসে
আসছে উদাস করা লৌকিক সুর
এমন
সময় পথের বাঁকে তোকে খুঁজে
পাওয়া, অবন্তিকা সেই মুহূর্তে বালিকা
বয়স, হাঁটুর ওপর ফ্রক
আর
অন্তহীন সময়ের সিঁড়ি
সত্যি
বলছি তোকে ভালোবাসা নদী হয়!
মেয়েটির
রুখে দাঁড়ানোর ভঙ্গিতে
আমাদের
অতিক্রান্ত দিনের ছাপ!
পাহাড়িয়া
বাঁশির তালে ঝরনা উচ্ছল
এই
অমিত উচ্চারণ ঝরে পড়ে হ্লাদিনী
মায়ায়, এইভাবে পথ চলা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
(৩)
অবন্তিকা
মনে খুব অস্থিরতা
অসহায়
মেয়েরা শরীর
মৃগ
মাংস সম নিজের শত্রু
বুভুক্ষু
হায়নার দল ওৎ পেতে
কচি
কিংবা প্রবীণা কেবলি খাদ্য!
শৈশব
চিহ্ন বোঝে না
নারী
পুরুষ সবই এক গোত্র
তবু
বারংবার আমাদের সন্তান
বিধিবদ্ধ, বিষাক্ত নখের খোঁচায়
ফালাফালা
মেয়েবেলা।
সখি
এবার নারীরাই যুদ্ধবাজ হবে
সুরক্ষিত
সমাজ করতে।
(৪)
রান্নাঘরে
হাতা খুন্তির প্রকৃত লড়াই
প্রবল
গ্রীষ্মে ঘাম ঝরে
অক্লান্ত
সংসার কর্ম মহাকাল জুড়ে,
চল
সই অবন্তিকা নৌকা বিহারে যাই
খোলা
আকাশের নীচে দু মুহূর্তের শান্তি
ছিপ
নৌকায় ভেসে যাওয়া মাঝি
পিদিম
জ্বেলে বসা--
দূরে
বাতিঘর অজানা তথ্য নিয়ে
দাঁড়ানো, সব সুখ পুঞ্জীভূত অভিমানে
মুঠো
থেকে মাটিতে লুটিয়ে
অবন্তিকা
একটা আয়তক্ষেত্র সীমা
জড়িয়ে
ধরেছে বাহুমূল!
রক্তমাখা
সকাল
সবিতৃর
ধ্যানমগ্ন রূপ আরাধনা করি
'জবাকুসুম সঙ্কাশন' মন্ত্রে উদ্দীপ্ত
বিশ্বভুবন
জুড়ে প্রশান্তি-
রৌদ্রের
ঘ্রাণ বুক ভরে নিতে নিতে
বিরহী
মেয়েটি ফুঁপিয়ে ওঠে
বিষাদের
কালাপাহাড় ঠেলে
ক্রমাগত
দিন গুজরান।
বৃষ্টির
ধারায় সিক্ত মুখ উঁচিয়ে
সে
জানতে চায় রুদ্ধ কপাট
খুলে
মুক্তির কথা...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন