প্রতারক
কাল
তোমার ছোটকন্যা আর তোমার ছবি দেখে একটা কথা বারবার মাথায় দুলছিল। ভাবছিলাম, এমন চিন্তাকে প্রশ্রয় দেয়া উচিত হবে কিনা! বিশ্বাস কর, তোমার প্রতরণার দায় মেয়েদের ওপর বর্তাক এতটা নিষ্ঠুর আমি নই। তবুও প্রকৃতি বিরূপ। তুমি
বুঝি শুনতে পাওনি বাতাসের ফিসফিসানি? আসলে বিছানা থেকে সরে
গেলে শুনতে পেতে নির্মম সত্যগুলি বাতাস উচ্চারণ করে মন্ত্রের মত।
সেদিন
কী বার,
কত তারিখ এমনকি সালটাও টুকে রাখিনি। কোনো
লাল দাগ নেই ক্যালেন্ডারে। প্রতারণার বোধহয় কোনো দিনক্ষণ থাকে না। আর ঐ যে জানালার পাশের বৃক্ষ ওরা পাপ লিখে রাখে, পাতায় পাতায়। প্রার্থনা
কর,
যেন উল্টে না যায় পৃষ্ঠা। উল্টে গেলেই সর্পের আকার। তখন প্রতারকের কন্যাদের বাঁচাবে কোন
ঈশ্বর!
হে নিয়তি, স্থির থাকো। বেঁধে রাখো নৌকা। কোনো ঘাটে ভিড়িয়ে, চিরকুটে লিখে দিও না নতুন ছলনার ইঙ্গিত। একজন বাবা হয়েও প্রতরণার বিশাল, বিস্তৃত যে ফাঁদ
পেতেছিলে তা থেকে রক্ষা পেয়েছিলাম সত্যি। কিন্তু মন ছিল অরক্ষিত। তাই কোনো ফাঁকে তোমার মিথ্যাকে সত্য
ভেবে ঘর এঁকেছিলাম। ঠিক ঘর নয়। একটা স্বপ্ন। আকাশ, নদী,
অরণ্য দেবার দায় ছিল তোমার। আজ যখন সুঘ্রাণ নেই তখন আঁচল ধূলায় লুটাচ্ছে
কিনা সে প্রশ্ন অবান্তর।
অরণ্যে
কোকিল ডাকবেই। তবে তুমি কোকিল
নও। কাক।
এখন
স্বপ্ন দেখতে গেলে সেই কাক ডেকে ডেকে শোনায়, বহুগামিতার গল্প। কী হয় তোমার মত একজন বাবা না থাকলে! বাবা বলতে যে শুভ্র মুখ ভেসে ওঠে
আয়নায়, সেই চেহারা তোমার নয়। তবুও মেয়েরা নিবিড় অরণ্যে বেড়ে উঠুক। আমার সব কষ্ট না হয় চোখের কোণে অনাদরে, অবহেলায় খামচে ধরুক শার্টের কলার। যেখানে আমি ছুঁতে চেয়ে সরে গেছি জানালার
পাশে। অরণ্যের দিকে
ছুঁড়ে দিয়েছি হরিণদৃষ্টি। কী গাছ ওখানে? জানি ক্যাকটাস নয়। সব
কাঁটা তো বিঁধে আছে হৃদয়ে।
মাঝে
মাঝে সব ভুলে যাই। মনে পড়ে না
সন্ধ্যার পালক, চাঁদ কিংবা মাঠের গল্প। একদম হঠাৎ কে যেন খুলে দিয়ে যায় স্মৃতির
দরজা। অগোচরে প্রবেশের
পর তোমাকে না পেয়ে ফেলে আসি ক্লান্তি। এসব
ছুঁতরোগ যেন তোমায় না ছুঁয়ে যায়, কোনোদিন। একদিন কল্যাণীদের চাঁপাফুলগুলি ছুঁয়েছিল
যাকে সে আজ দু' কন্যার পিতা। প্রকৃতির লীলাচক্রে কোনো প্রতারকের কন্যা
সন্তানের পিতা হতে নেই।
যখন তুমি কন্যার জনক
তখন প্রেমিক না হলেই পারতে!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন