ঈশ্বরী কথন
যে ঈশ্বরীর দু’চোখের পলক স্মরণ করে আকাশের নীল রঙের গোলাপী হয়ে ওঠার গল্প
সে চোখের দৃষ্টিতে এতই গভীরতা যে-
ডুব দিলে শান্ত নদী দেখা যায়
ছলাৎছল জলে পা ডুবিয়ে এপার-ওপার করা যায় অনায়াসে!
এত জল ঘেঁটে কাদামাটি মেখে একরাশ স্বপ্ন নিয়ে হেঁটে যায় প্রত্যাশা।
পাঁচ আঙ্গুলের ভাঁজে ঈশ্বরীর সতীত্বের মেঠো গেরস্থালী
কলমির গন্ধে ভরা পুণ্যবতীর পাখপাখালী।
সুতরাং আলতারাঙা পায়ে ধীরে এসে বসো
লক্ষ্মীর পাঁচালি আর সাঁঝবাতির ফুটফুটে আলোর মাঝে, অধিকারে।
এত নিমগ্নতায় রাত্রিকালীন কণ্ঠনালীতে
বেজে ওঠে ললিত সুর
আভোগের মূর্চ্ছনায় জারজ স্বপ্নে ডুব দিলে দেখা যায় ঈশ্বরী পাটনির ভৈরবী ভোর।
ফিরে আসা
চলে যাওয়া সংসারের সিদ্ধতম নিয়ম
মানি, কিন্তু ফিরে আসা,
ঠিক জানি না! আমি ফিরেছি
কিছুটা বিরুদ্ধতায় কিছুটা অস্থিরতায়।
মাথা গুঁজে বসে থাকা সময়
মিহি মিহি বিষণ্নতা, যেন চিনির দানা
ছড়িয়ে আছে মেঝেময়
কাল নীল - আজ একাদশী
ফলাহার, কে কবে রেখেছে খবর
বারোমাস্যা ফুল্লোরার!
তবু মুহূর্তরা মুহূর্তে বদলে যায়
কিছুটা বিরুদ্ধতায় কিছুটা অস্থিরতায়।
দেখিনি কখনও ভাঁড় ভাঙা মাটির
টুকরোতে কেঁচোর সংসার
চূর্ণ আলোয় ঠোঁট লাগিয়ে কন্যাভ্রূণ
জীবন হাতড়ায়।
কিছুটা বিরুদ্ধতায় কিছুটা অস্থিরতায়।
কথা দিয়েছিলে ফিরে আসার
মনে হয় — ভুলেছো,
না হয় স্বপ্ন ফিরিয়ে দেবে আবার তোমায়।
জন্মলগ্ন থেকেই আমার ভিতর নিশ্চিন্ত এক কন্যারাশি ঘুমায়।
মেঘলা দিনগুলো
মাঝে মাঝে কেমন অচেনা লাগে মেঘলা দিনের দুপুরগুলো
হঠাৎ ঝুপ করে নেমে আসা ছায়া ছায়া ভাব, কড়কড় আওয়াজে, মন বিষণ্ন!
দরজা-জানলা লাগায় অজানা আশঙ্কায় আশেপাশের মানুষজন
জমে যাওয়া খেলা ছেড়ে ছত্রভঙ্গ তখন মাঠ-ময়দান।
তোমার জন্য তেল-নুন-হলুদে জড়ানো আম’মাখা কত সাধে চুপ করে বসে ছিলো
ওদের বিশ্বাসে এক ঘটি জল ঢেলে হুড়মুড়িয়ে বৃষ্টি এলো
শুকনো কাপড়চোপড় অগত্যা আবার ভিজে চুপচুপে হলো।
রুশ বিপ্লব-ফরাসি বিপ্লব ইতিহাসে যত বিপ্লব ঘটেছে এখনও পর্যন্ত
সব ঘটিয়েছো শুধুমাত্র তুমি তোমার মতো,
পৃথিবী কি চায় একবারও জানতে চাও নি কখনও।
ঠিক যেমন মেঘলা দিনের দুপুরগুলো
অচেনা হয় শুধু নিজের ইচ্ছেমতো।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন