বুধবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৮

উমা মন্ডল




ডাক


(১)

বাড়িগুলি চুপকথার সারিতে প্রতীক্ষায়,
ভেতরের ভাঙন কখনও প্রবল কখনও অন্তঃসলিলা ঝড় তোলে,
চিনচিন করে ধমনীর গুহামুখ
'স্রোতকে বইতে দাও
আপন খেয়ালে'...

চিৎকার শুনি ঈশানের ওয়াচটাওয়ারে কালোমেঘ ডাক দেয়, চেনা শব্দের বন্ধনীগুলো ফাঁকা
অণুতে-পরমাণুতে বিভক্ত হয়ে
উড়ে যায় চেনা বারমাস্যা,
আর অর্বাচীন প্রশ্নের আশ্চর্য চিহ্ন।
ছাইজন্মের প্রতিবিম্ব কেঁপে ওঠে
বলিরেখার দর্পণে,
অক্ষরের স্তূপে হাত ডুবিয়ে
বন্ধ করে দিই দরজা...


(২)

আঙুল দিয়ে ঘেরা একটা কাঁটাতার কতটা নিরাপদ?
জানি নাঅন্ধকার গহ্বরে চোখ রেখে দেখি
প্রাচীন খড়, বিচুলি
কাঠামো বার করা ঘরের দেওয়াল
পাথরের খাঁজে খাঁজে জীবাশ্মের বসতি।
শুধুই শূন্যতার ঠান্ডা হাওয়া-
ভেসে যাই...

অতিরিক্ত শব্দটি যুক্তাক্ষরের মতো জটিল
কাঁপিয়ে দেয় প্রকান্ড গুঁড়ির মস্তিষ্ক,
খেয়ে নিয়েছে কালের পোকা জীবনের প্রতিষেধক
বড় চাপ লাগে ইঁটের গাঁথুনিতে।
ঝুরঝরে নিউরোনের রাতও জ্যোৎস্নাহীন
অক্ষরের মতো,
একটা সরবিটেট্ বা ভেলনা-এক্স-আর...
যদি বান ডাকে
জলের সাথে গহ্বরে ভাসিয়ে দেবো।
বাকী সব পুরাতন
শুধুই অতীত,
অন্তর্জলী যাত্রার চিত্রনাট্য তৈরী
ডাকের অপেক্ষায় বসে আছে ইতিহাস...


মুক্তি চাই


ইজিচেয়ারে বসে মাঘীরোদ পোহাই
এতগুলো শিকড় গজিয়ে উঠেছে
খেয়াল করিনি,
ছাদ ডাকে তার ঐশ্বর্যর বিস্তার নিয়ে
অসহায় শিকলের ভেতর
হাতদুটোকে মুঠো করে অন্তরীক্ষকে জাগাই

জাগে না অবধূত
তার হাঁড়িকাঠে রোদ নেই,
শ্যাওলার আস্তরণে এক বিকলাঙ্গ জরা
ঘিরে ধরেছে।
শুকনো জবার শৃঙ্গারে
পোড়ামাটির পুতুল দাঁড়িয়ে আছে
দন্ডকারণ্যে,
'জল চাই নর্মদা'...

সতীপিঠ জাগুক ডমরুর ছন্দে,
অভিশাপ এক অসুখ
ঔষধি বানাই আকন্দের বীজ থেকে,
কবর থেকে উঠে বসা জ্যোতিষ্ক
আমাকে ছাদে নিয়ে যাবে...


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন