ঋতু
ও যৌনতা
টুটাফুটা শীতের একটা পুরুষালি রূপ আছে ঠিক যেমন ভাব ও আখরের বাণিজ্য করে ফেরা ইন্সকিওরড সওদাগর। ঝরা পাতার বর্ম গায়ে টাটকা শীত পাশের পাড়ায় নিষ্প্রভ রোদের বাগানে ঝিমোয়।
জামরুল বনে বসন্তসুন্দরী হবিষ্যান্ন ত্যাগ করে বহুকালের অরন্ধন হেঁশেলে পবিত্র ভাত ফোটায়। কমন্ডলুর জল ছুঁয়ে পাপবোধের প্রক্ষালন ঘটায়। শীতের পৌরষ দেখে রজঃস্বলা বসন্ত লেহাজ খুলে জানুদাগ পুঁতে রাখে হাওয়ার শিকড়ে।
রূপোলি তারার আগুনে ভিজে যায় অম্বরকার্নিশ। ঢাকনা সাঁটা কেটলির মুখে জমা হয় মেয়েলি বুদবুদ। স্তনে যৌবন রঙ মেখে বসন্তকুমারী ঘন সূপের সাথে ঘৃতচাঁদ ঘেঁটে খায়। পুরুষ্ট শীত বসন্তফুল থেকে ঘ্রাণ ছিঁড়ে নিয়ে দুখিয়ালি ছাই হয়ে মেশে তাজা রসস্রোতে।
নিভে যাওয়ার সমন মুলতুবি রেখে বসন্তসুন্দরী আলোর নূপুর হয়ে বাজে বেয়াদব শীতের পায়ে। নিরামিষ আয়নার গা বেয়ে সধবা টিপ খসে পড়ে।
মা
তোমাকে
তুমি নেই বলে শীত এখন দেরিতেই আসে বরাবর..
ড্রয়িং খাতার প্রথম পাতায় জাহাজ আঁকি,
দ্বিতীয় তে রঙিন মাছ,তৃতীয় পাতায় ফলের বাগান,
চার নম্বর পৃষ্ঠায় তোমায় আঁকতে গিয়ে
ঘেঁটে ফেলি খাতা..
বিধবা ভাত টগবগ করে ফুটলে সহজ আঁচল উড়তে দেখি।
গোলাপি চিনির সুতো ভেবে
চিবোতে থাকি নুড়ি,কাঁকর ও বালির দানা।
আগের বছর টবের ছোট্ট পরিসরে যে চারাগাছ
পুঁতেছিলে বংশরক্ষার তাগিদে,
শাকান্ন খেতে গিয়ে তা আজ কাঁটাগাছ হয়ে
বিঁধে গলার কাছে।
স্নেহজল ঢেকে রাখি কুয়াশার লেপে,
জলের গেলাসে ঘুমোয় বাউলানী চাঁদ চুপচাপ।
কুলুঙ্গিতে ঝিমোয় সন্ধেপ্রদীপ।
ওৎ পেতে থাকা মেয়ে রঙের পায়রাদের একদিন খই বিলোতে আদর করে,
আজ তাদের চোখেই হেমন্তের ঘ্রাণ
হয়ে সেঁধিয়ে গেলে মা..
বালতি উপচে চলকে পড়ে অনুভূতির বুদবুদ।
চৈ চৈ পাখি উড়ে যায়..
তুমি নেই বলে শীত এখন দেরিতেই আসে বরাবর..
বর্ণপরিচয়
হলুদ
অপেক্ষার বাড়িরা শীতের রঙ মেখে বরফ হওয়ার আগেই ফিনাইল গন্ধে ভরে যায় ঘর।জানলা খুলে চুল মেলে দিই কার্নিশে। তুলসীপ্রদীপ ছুঁয়ে পুতুলঘর থেকে উড়ে আসে ঝিমধরানো আলো। ঠোঁটে,মুখে,চোখে মেখে নিই আলোর পবিত্র স্নান।
অ্যাসফোডেলের চিবুক বেয়ে ঝরে পড়ে ঘাম।মৌনতার ভেতর ঘুরতে থাকে হলদে স্মৃতির আর্মেচার।
লাল
টার্টারাসের পাশে জেগে ওঠে অন্ধকারের সিংহদুয়ার। মেঝেতে শুয়ে থাকা মৃতদেহের সারি,বারবার টিমটিমে লাল আলো ভেবে ছুঁয়ে ফেলি ভুল করে। শিয়রে চুপিচুপি বসে নিরামিষ আয়না।
শিশিরের নাভি চিরে ছুটে চলে রাতের ট্রেন।
সাদা
গঙ্গাস্নান সেরে ফেরা থান পরিহিত স্ত্রীলোক দেখলে, বোগেনভেলিয়ার চূড়ায় ভেঙে পড়া মেয়েলি চাঁদের কথা মনে পড়ে...
মধুক্ষরা জোছনা বিলিয়ে নিঃস্ব হতে শেখায় সে আলো..
বিধবা ভাতের গায়ে জমাটবদ্ধ মাখনের স্তর..
লজ্জাবস্ত্র ছিঁড়ে কেউ কেউ
প্রিয় বসন্তের খোঁজ করে এখনও বিষভান্ড ভেঙে..
আসলে সাময়িক ঢেউয়ের সাদা সুতোয় ঘর নয় গোটা সংসার বুনে ফেলে অনেকে নির্দ্বিধায়..
কালো
শঙ্খমেঘে ঢেকে যায় বিবিক্ত আকাশ।
পাথরে পাথরে গাঁথা জীবাশ্মের প্রিয় ভাষা।
সরসীকোলে নিভে আসে সলতেপ্রদীপ..
বাইরে ঝরে পড়ে হিমের কুঁড়ি লুকিংগ্লাসের গায়ে।
ভিতরে সাপের পোশাক বোনা হয় পুরুষ্ট শীতের উলে।
তিলং রাগ সন্ধ্যাকালীন এক অসুখের নাম..
জানলার কাঁচে জমা টাটকা স্মৃতিফুল।
লেবেল সাঁটা দুধের দামে জলের প্যাকেট কেনে কৃষাণী।
দূরে কোনও এক সামুদ্রিক চিল
নো ম্যান্স আইল্যান্ড দেখবে বলে অপেক্ষায় প্রহর জাগে..
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন