বিরস বেলায়
(১)
নদীর
দিকে তাকালে
দেখি, জল বয়ে যায়
রূপো
রূপো মাছ
মাছরাঙার
ছোঁ
পার
ছোঁয়া নৌকা
আর
তোমার
দিকে তাকালে
দেখি
সূর্যাস্ত!
(২)
ধানরঙা
হৃদরোগে
পড়ে
থাক বসন্তছায়া
আর
কত অশ্রু বিলাবে
জলহীন
পাহাড়ি গ্রামে
(৩)
খেয়ালী
বাতাসে ঝরছে
সোনালী
ঘুঙুরের শব্দ
শুকনো
পাতারা
বলে
যায়
জীবনের
ইতিহাস
(৪)
সমুদ্রগামী
যুবক
নোনা
ঢেউ জমাও
আমার
কাঁধে,
বুকে
(৫)
পৃথিবী
সব ঋতু ধারণ করলে
অ্যান্
হেদোয়ানা আবার
কবিতা
লিখতে বসবে,
গিরিপথে
ফুটবে
গোলাপ
(৬)
আফ্রোদিতি
আফ্রোদিতি
বৃষ্টিতে
ধুয়ে নাও
তোমার
সৌরভী নাভি
আকাশলীনা
যোনি
পায়রা
স্তন
নদীসম
উরু,
শুধু
জেগে থাকুক
ভালোবাসা
এরিথ্রিনার
সংবাদ!
সিরিয়া তুমি আমারও
একটা
দীর্ঘ ডার্ক কবিতা ঝরছে সিরিয়ার রাতে
আমি
দুয়েকটা তারার আলো দিতে চাই শিশুপথে
চরম
বিষাদের চন্দ্রগ্রহণ মুছে দেবো স্বচ্ছ জোছনায়
জানি
না অই মৃত্যু সংখ্যাটা ঠিক কত তে ঠেকেছে
আকাশ
কতটা লুকিয়েছে মুখ বালিভূমির বুকে
আহা, দুধের আলপনা এখনও লেগে শিশুদের ওষ্ঠে
বৃদ্ধ
মানুষটির সঞ্চয়ে ছিলো আরও দামাস্ক গোলাপ
ইউফ্রেটস্
নদী লিখছে একটা দীর্ঘতম অনাম্নী বিষাদ গাথা
ক্ষমাহীন
বারুদে ঝলসে যাচ্ছে আঙুরের নির্মল আভা
মেহরিন
কিশোরী,
বুকে আগলায় বিবর্ণ প্রজাপতি
ঈগলের
চোখে চোখ রেখেছে অন্ধ শতকের ধর্ষকেরা
পুড়ছে
শহর,
পাথুরে বাড়ি, পুড়ছে মানব সভ্যতা
রাষ্ট্রসঙ্ঘ
মুখ লুকিয়ে দেখছে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা
আর্তনাদে
কাঁপছে নাকি আলোর শহর দামাস্কাস্
গণসঙ্গীত
শিল্পী আজ মৃতদের বিষণ্ণ তালিকায়
আমার
অক্ষরেরা ছুঁতে চায় সেই বিপন্ন হলুদ দেশ
আজ
সময় হয়েছে গড়ে তোলার কঠিন মানবশৃংখলের
বসন্ত পেয়ালায়
ভোরের
দরজা খুলে দেখি বন হারানো বসন্তকালে ছেয়েছে শহর। স্বচ্ছ শিশিরের উল্কি আঁকা, বৃক্ষের কৃষ্ণ পেশিতে। আমাদের বসে
থাকা নিভৃতে আম্রমুকুল প্রভায়। সামনে রাখা চায়ের পেয়ালায় উড়ছে সবুজ মেঘ। ডায়াবেটিক
বিস্কুট ভাঙছে নীরবতার পাহাড়। আহ্! ঠোঁট ছুঁয়ে যায় মেঘমালা চা। আমাদের এভাবেই যেন
পাখি হয়ে বৃক্ষ ছুঁয়ে থাকা। পলাশ পলাশ দুপুরে শ্রীখোলের তালে তালে দোলে আমাদের
প্রজাপতি আত্মজা। পাখিরালয়ে ঝরছে অবিরাম রাসনৃত্য প্রেম, মধুর
বিরহে। আমার বাতিঘরে পড়ে আছে অনাবিল
নক্ষত্রেরা, জোনাকি হয়ে।
মধ্য যৌবনের নীল ঘুম জমে আছে
ময়ূরাক্ষীর অতলান্তিক জলে। সূর্যচূর্ণ ছড়িয়ে পড়ছে শহরের আধফোটা রাস্তায়। তুমি
পাথরের গায়ে আঁকো কৃষ্ণচূড়ার আদিবাসী উৎসব। আমি শ্বেতশুভ্র প্লেটে সাজাতে থাকি
হলুদবনের ক্লান্ত প্রাতরাশ। আমি আর তুমি যেন একজোড়া আকাশী পায়রার উড়ান, মধুমাস পার করি দহনে দহনে। মাঝেমাঝে তুমি আমার শ্যামল যুবকটি, বাঁশিতে ললিত রাগ অভিসার। কখনও
ঝিনুকের পাখায় লুকিয়ে রাখো আমার মুক্ত আকাশ। বাতাসে মেশাও অহংকারের বীর্য।
আমার একতারাটি ধুলোয় লুটোয় একান্তে। এইরকমই দিন আমার, চোখের
মধ্যে বইছে এক ঝাপসা আকুল নদী। প্রতি রাতেই মৃত আমি, প্রতি
সকালেই হতে চাই সোনার আগুন পাখি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন