শিরোনামহীন
(১)
কোথায় বাড়ালাম পা, অন্ধকার যে, প্রায়
সবই চোখ এড়ানো
কিন্তু বুঝতে পারছি কিছু আছে
শুধু জড় নয়, অজড় কিছুর উপস্থিতিও অনুভবে আসে
কী হতে পারে তারা!
ঘন বাদামি রঙের যকৃত নড়ছে চড়ছে এমন
নয়তো
কিংবা ফুসফুসের একটা অংশ আরো লাল হচ্ছে
কিছু পাথর একটা হাতুড়ি কিছু লোহার রড
কোনোটাই হাতে ধরে নয় শুধু অন্ধকারের ভেতর নিজস্ব আলো জ্বালিয়ে
অনুভবে নিয়ে আসা
একটা গাছও আছে কালচে সবুজ পাতার
পাতাটা একটু মোটা মতন কিন্তু গন্ধ নেই
তবু বুঝে যাই গাছটি এখন পাতা ঝরাচ্ছে না
তবে ডালপালা নড়ছে খুব ধীরে
আসলে আমি এই গাছ দিয়েই সব কিছুকে দেখছি
বা অনুভব করছি
নিজের মধ্যে একটা গাছ বাঁচিয়ে রাখতে পারলে
এই এক সুবিধে, অনেক কিছুই অনুমান করে
ঠিক মিলিয়ে নেওয়া যায়, একটা গাছের আপেক্ষিকে।
(২)
অবসরে নিজের মাথাটা খুলে শিয়রের পাশে
রাখি
একটু রেস্ট দরকার ওর
সব সময় তো শুধু আমার হয়ে কাজই করে যাচ্ছে
বিনিময়ে আমারই কিছু দেওয়া হয় না ওকে
অনেকেই বলে খুলে রাখলে ভোঁতা হয়ে যায়
ঘুমেও সে সমান সচল
আর চলতে চলতে ক্ষুরধার হয়ে ওঠে
আমি কিছুটা স্নেহের বশেই ওকে দম ফেলে
একটু জিরোবার
সুযোগ করে দিই
বলি, নে আরাম কর তারপর নতুন বেগে আর বেশে
এসে ধরা দিস আমার চলমানতায়
এখন এভাবেই সে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে
আর বেগার খাটুনির জন্য আমাকে কোনো
চেতাগ্নি দেয় না
আমিও অবসর শেষে তাকে প্রতিস্থাপিত করি নতুন সম্মানে।
(৩)
কোথাও না-থাকাটাকেই উপভোগ করে কলের মানুষ
কেউ না-থাকাটাকে চেয়ার
কলের মানুষ চেয়ারে বসে না
চেয়ার চায় রক্ত মাংস
রক্ত-মাংসকে কেউ ডাকে না
কলের মানুষ সব জায়গায় জানান দেয় কেজো
হাসি
একটা টেবিলের এ-পাশে শতেক কলের মানুষ
আর উলটো দিকে একটা রক্ত-মাংস-হাড়-মজ্জা আর প্রাণ
এ-পাশে কেউ কাউকে চেনে না জানে না
যদিও এক ডাইসে তৈরি
আর রক্ত-মাংসের এতই হেরফের
যে অচেনা অজানা হয়েই থাকে সারাটা জীবন
সবাই বাদ দিয়ে দিলেও তার কিচ্ছু যায়
আসে না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন