বুধবার, ১ নভেম্বর, ২০১৭

তৈমুর খান

প্রাত্যহিক বদল


প্রাত্যহিক বদল হয় রোজ
স্বতন্ত্র রাস্তা থেকে নিজেকে তুলে আনি
তারপর একই রাস্তায় গতানুগতিক ভোর

নিবেদনের দুপুরে কিছুটা নিঃস্ব বোধ
সত্যের দরোজায় দাঁড়ানো ছায়ায়
নেমে আসে কালাগ্নি মুহূর্ত সম্ভব
যা থেকে সচকিত পরোয়ানা

আজ সব ঘাসজন্মে শিশির আলাপ
রোদের করতালি পেয়ে ছড়ায় সোহাগ
তবুও অশ্রুর বাক্যে লুকোনো তরবারি
খণ্ড খণ্ড ভিজে যায় প্রত্যয়ের পাখি

গড়তে গড়তে ভাঙা জীবনের রাগ
প্রাত্যহিক বদল হলে মেঘের সন্তাপ
বর্ষণের মুগ্ধ থেকে বর্ষার আগমনী
নিদাঘের চক্রে ঘোরে পিনাকী শঙ্করী


আলোর মুদ্রা



ঘরে ঢুকে যাচ্ছে আলো
আমিও পরাঙ্মুখ আলোর ছোবলে
উদ্ভ্রান্ত শহরের ছোট্ট কুটিরে
জেগে আছি নীরবে, নিজের সন্নিধানে

কী ওষুধ আছে দাও
ঠাণ্ডা জল অথবা বাতাস
সহিষ্ণু জ্বরের তাপে পুড়ে যায় বিছানা বালিশ
সন্ধেবেলায় তবু রাগ বাজে বিসমিল্লা খাঁ-

দারুণ অকপট হয়ে খুলে দিই বুক
এসো আলো, আমার অসুখ
সারিয়ে নিই শহরের জটিল পরামর্শ ভুলে
যা কিছু অবশিষ্ট আছে সব দিই তুলে

কেবল নতুন বন্দনায় প্রতিদিন তোমার বিকেল
আর রাত্রির জলে ধুয়ে নেওয়া চোখ
তাকাই, তাকিয়ে দেখি চারিদিক
বিক্রি হয়ে যাচ্ছে সব রাধা, আমি শুধু কিনে নিচ্ছি শোক



নিমিত্ত



নিমিত্ত হতে হতে একদিন নেমে যাই
পৃথিবীর মেঘলা কোনও অধ্যাবসায় থেকে
দুরন্ত রোদের শতক আমরা দেখি
গার্হস্থ্য বিবেকে লুকিয়ে নিই সমর্পণ
তারপর ব্রাত্যবিকেলে নিজের সন্ধান

উন্মুখ জানালাগুলি খোলা হয়
আলোছায়ার ক্রন্দনে মৃদু অভিশাপ
এইসব পেয়ে পেয়ে মর্মের ভেতরে
উদিত ফাল্গুন মাস ডাকে
কাননে কাননে তবু রাখালিয়া গায়

ঘোর অন্তরায়গুলি আজও কোনও দ্বীপে
সেখানেই নির্বাসন থাকে, জলীয় বারান্দা
খুঁড়ে খুঁড়ে অন্তরঙ্গ ঢেউয়ের সঞ্চার
কলরবে মুছে দিই সত্যের সত্তাকে
নিমিত্তের সিঁড়িতে উঠে বলে দিইফিরব না আর


দুঃসঙ্গ



সহায়তা চাইতে এসে দরজায় দাঁড়িয়েছি
পথে সব আয়না ভাঙা জল
আমার ছায়ারা ভাঙা কাচে
দুর্ভর জীবন গড়ায়

রাস্তায় রাস্তায় বিহ্বল অভিনব
আমাকে চেনে না বলে মারে করুণায়
যদিও অন্বেষাহীন আলস্য যাপন
পোড়ে না কেউ, পোড়ে না শব
অথচ আগুন জ্বালায়

মাংস গন্ধের জীবনী পাঠ
অথর্ব আলোর সন্ধিনী চতুর্মুখে
জোছনা প্লাবন এনে পৃথিবী সাজায়
কে দ্যাখে নগর? কে দ্যাখে নগরী?
জরা তুলসীর মঞ্চে নষ্ট অভিবাদন
চরিত্র হারায় শুধু সভ্যতা কুমারী

বিকল্প ঝড়ের মুখে হল্লা ওঠে :
আমরা টিকিট পাইনি ব্ল্যাক মার্কেটে!





1 টি মন্তব্য: