আত্মহত্যা
পাখির তখনো সর্বনাশের নেশা কাটেনি। বর্ষার শেষ বিকেল। বুকের
ভিতর এক অদ্ভুত মনের মেঘলা ছায়া নিয়ে সে কেঁপে কেঁপে উঠছিল। সকাল থেকেই পাখিকে
ক্ষয়রোগ পেয়ে বসেছিল। সারা বাড়ির লাল নীল হলুদ পর্দা ভিজে হাওয়ায় দুলছিল। রং
নিজেকে আরো রং মাখাচ্ছিল। তবু তা যেন কিছুতেই ছোঁয়া দিতে পারছিল না। হাসি উড়ছিল,
খুশি ভাসছিল। পাখি এককোণে চুপটি করে। মনের ভিতর পাখির বসত, তার আনাচ কানাচ ধোঁয়াময়। অস্পষ্টতাই ওর
জীবন জুড়ে। শহরের বুক চিরে যে রাস্তাটি চলে গেছে তাকে নদী বলে ভুল করে। নদীর জলের
বয়ে যাবার শব্দ বিচলিত করে। কোণে কোনো আলো নেই। অথচ দেওয়ালের সবুজ ম্যাট ফিনিশ মৃদু নিয়নে ছলকে উঠছে। ছোট শহরের বুক চিরে
বয়ে যাওয়া রাস্তাটি সোজা অশোক আর কৃষ্ণচূড়ার মাঝখান দিয়ে শাল জারূলের জঙ্গলে মিশে
যায়।
পাখি নদী ভাবতে ভাবতে পশ্চিমের কমলায় বিগলিত হয়ে আসলে
নিশ্চিহ্ন
হয়ে যেতে চাইছিল। সারা বাড়ির পর্দার রং বদলে যায়। রাত গাঢ় হয়। ছায়ার মতো
কিসের ছায়ায় জড়িয়ে যাচ্ছে আরো অন্ধকারের ভিতর। পাখি নিজেকে
টের
পায় না।
সীমার বাড়ি থেকে বেহালার ছড় ভেসে আসে। অসময়ে। সিনেমার মতো!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন