প্রবাল মানে পলা
একটাই তো গ্লোব। কিছু জল আর কিছু মাটি কিছু সবুজ কিছু ঊষর
বালিয়াড়ির মধ্যে কোথাও কেউ থাকে কারো জন্য। কখনো ছিল আবার কেউ। কখনো আবার কেউ
থাকে না জানালার পর্দা খানিকটা সরিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে। কোথাও দিন সরে যেতে যেতে রাত্রিকে বলে বাই বাই... সি
ইউ...! কোথাও সৈকত শরীরের ওম নিতে আসে
সফেন মেখলা পরা ঊর্মি। কোথাও বৃষ্টি সবুজ বারোমাস। কোথাও লক্ষ্মী
নদী পঞ্চাশের দশকের নারীর মতো। বাতাস তার সঙ্গে বয়ে চলে। নিরব ওঠাপড়া
গোপনে রেখে সোঁতার কাছে যত পাওয়া হারানোর ছলাৎ ছলাৎ গল্প বলে যায়। অন্ধকারের
উল্টোপিঠে তখন ক্যালিফোর্নিয়ায় অফিস আওয়ার। সোমবার সকাল সাড়ে এগারোটা। আর এদিকে
কলকাতায় মঙ্গলবার রাত বারোটা। পঞ্চান্ন বছরের যুবক তার চুয়ান্ন বছরের যুবতী না বলে
বালিকাই বলা যায়। তাকে
কলকাতার বাড়িতে রেখে গেছেন ক্যালিফোর্নিয়ায় নিজস্ব আই টি ফার্মের কাজে। চুয়ান্নর
বালিকার কাছে কি বা দিন কি বা আলো অন্ধকার! সম্প্রতি তাদের ছেলে মেয়েও চাকরিসূত্রে সিঙ্গাপুরে অস্ট্রেলিয়ায়।
চুয়ান্নর যাবতীয় অনুযোগ অভিযোগ তাই পঞ্চান্নর কাছেই। তার ইচ্ছে হবে
তো মাঝদুপুরে ফোনে জাগিয়ে তুলবে ক্যালিফোর্নিয়ায় নির্ধারিত সেই পঞ্চান্নকে। যেমন এখন
পঞ্চান্ন একটা ডি আর এম টেস্ট নিয়ে মাথার ঘাম পায়ে ফেলছেন। এদিকে কলকাতার
নির্ধারিত চুয়ান্নর কথা পেয়েছে। তাকে কথা বলতে হবে এখনই পঞ্চান্নর সঙ্গে। ফেলে রেখে যায়
কেন এমন করে? এ যেন ইডের ইদুলফিতর!
হাঁপিয়ে দাপিয়ে কাজ ফেলে এসে কথা বললে
তখন চুয়ান্নর শান্তি। রাগও হয়ে যায় এক এক সময় পঞ্চান্নর। বকেও দেন খুব
তখন। কলকাতায় মধ্যরাতে এইমাত্র চুয়ান্ন শুরু করে দিল, একটা ছোট্ট মিষ্টি গল্প বলো শিগগির না হলে খাব না ঘুমবো না
কিচ্ছু করব না। পঞ্চান্নর
অফিসের ডি আর ডি তখন পোস্টপণ্ড কিছুক্ষণের জন্য। হোয়াটস্
অ্যাপে টাইপ করে চলেছেন দুজন:
-- এক রাজার এক মেয়ে। তার
নাম ঝুলুম। কেন না শুধুই ঝুলোঝুলি করে। বড় জিদ তার।
-- তারপর!
-- ঝুলুমের বন্ধু উলুমের
বিয়ে হয়ে গেল হালুমের সঙ্গে। ঝুলুমকে কেউ নেয় না।
-- তারপর!
-- তারপর আর কী! রাজপুরোহিতের
বিধান মেনে বটগাছের সঙ্গে ঝুলুমের বিয়ে দিয়ে
দিলেন রাজা। বটগাছের
গোড়ায় বসে ঝুলুম কাঁদে, এই ছিল তার
কপালে।
-- হি হি হি... তারপর?
-- বটগাছ ক্যালিফোর্নিয়া এসে
হার্ডওয়্যার চেঞ্জ করে হলো প্রবাল, আর ঝুলুম হয়ে গেল পলা। বাকিটা স্বপনদোলা...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন