বৃহস্পতিবার, ২২ জুন, ২০১৭

সোনালি বেগম

ওয়াজিরাবাদ-এর চাঁদনি রাত


আজ সবুজ ঘাঘরা চোলি পরেছে সাহানা। আমান লাল পাঞ্জাবি সাদা চুড়িদার। চাঁদনি রাতে যমুনা কিনারে ওরা দুজন বসে আছে। দিল্লির ওয়াজিরাবাদ। প্রায় ৭০০ বছর পুরনো এই মসজিদ ও মকবরা।

‘ফিরোজশাহ তুঘলকের শাসনকাল ১৩৫১ থেকে ১৩৮৮। তাঁর শাসনকালেই এই মসজিদ ও মকবরা তিনি নির্মাণ করিয়েছিলেন।  আমান বলছে
‘কত কত বছর, হয়ত পুনর্জন্ম আমাদের’ সাহানা ভাবছে   
‘মসজিদের উঠোনে চৌকো মকবরা। শোনা যায়, ফিরোজশাহ তুঘলকের সময় ফকির শাহ আলমের এই মকবরা
‘এই চাঁদ, হালকা সাদা মেঘের চাদর আর আমাদের ঘোরাফেরা
‘৭০০ বছর আগে মসজিদের পেছনের দিকে তৈরি এই ব্রিজ, দিল্লির সব থেকে পুরনো ব্রিজ
‘এতগুলো বছর বার-বার আমাদের এই আসা যাওয়া, কেউ কেউ বলে যে আমরা নাকি উন্মাদ

আর্কিওলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া সংরক্ষিত এই ঐতিহাসিক স্থান। সারাদিন মকবরার চারধারে গ্রে স্যান্ড স্টোন লাগানোর কাজ চলছে। মসজিদে প্লাস্টারের কাজও। সাহানা আর আমান ঘুরে ঘুরে ঘাসের চাদরে বসে পড়েছে।
ফকির শাহ আলমের কণ্ঠস্বর ভেসে আসছে –– ‘এই জনহীন রাতের অন্ধকার ছেড়ে তোমরা দুজন মিশে যাও জনসমুদ্রে
ক্যায়ফি আজমি-র লেখা নজ্ম ওরা দুজন জোরে জোরে আবৃত্তি করতে লাগল —

‘আজ কী রাত বহুত গর্ম হাওয়া চলতী হ্যায়,
আজ কী রাত ন ফুটপাথ পে নীদ আয়েগী।
সব উঠো, ম্যাঁয় ভী উঠুঁ, তুম ভী উঠো,
তুম ভী উঠো,
কোঈ খিড়কী ইসী দীওয়ার মেঁ
খুল জায়েগী

অসংখ্য ঘোড়ার খুরের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। গরম বাতাসে পায়েলের ঝুমঝুম শব্দ।
‘চারদিক ভূত-প্রেতে ভরে গেল গো! ধর্-ধর্... হঠাৎ একদল নারী পুরুষ তাদের দিকে ছুটে আসতে থাকে।

সাহানা আর আমান পরস্পরের হাত ধরে যমুনার জলে ঝাঁপ দিল।   
      
           

  

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন