বৃহস্পতিবার, ২৫ মে, ২০১৭

উমা মন্ডল

অকাল সুবর্ণরেখা

চোখের গা দিয়ে একটুকরো সুবর্ণরেখা আজ বাড়িতে  উপস্থিত
চিঠি পাইনি একলাপুরের নক্ষত্রজন্মের
তবুও,
এত বিষাদ্ ....

ভিতরের বোশেখ রোদ কখন পুড়িয়ে দিয়েছে ,কখন জল জমেছে রাস্তার ক্ষতে
তিরতির করে বয়ে যাওয়া নীল মেঘ কি জানতো
জানি না মাত্রাবৃত্ত,
তবুও বেঁধে রেখেছিলাম পুঁটলি ভর্তি বারমাস্যা
বুঝিয়েছিলাম গহণ অরণ্যের ঝিঁঝিঁকে,
তবুও
ঝরেছে অশ্বারোহীর ঘাম খুরের গর্ভ থেকে
এমন অনাগত জন্ম চাইনি কৃষকের হাত,
আগাছা বলে তুলে ফেলো না
একটা খামে চাবি পরিয়ে দাও,অন্ধকারেই থাক...

এখন এই অকাল সুবর্ণরেখা আমাকে ভিজিয়ে দিলো জন্মঋণে...


জীবন্ত ঈশ্বর

দিন রাতকে দু’হাতে লোফালুফি করতে ভালো লাগতো
কিংবা কাটাকুটি খেলা...
একটা শূন্যের মধ্যে জীবন লুকিয়ে থাকে জানতাম না
পছন্দ ছিলো গুণিতক চিহ্ন, আজ স্কোয়ারে দুঃখ মাপি
এগিয়ে চলে বাকল খুলে বৃক্ষের সংসার!

শিকড়ে শুনতে পাই দুখু মিয়া গজল গাইছে
আমি কিনে নিয়েছি বারবণিতা সুর,
ঝাড়বাতির স্ফটিক চোখ মায়োপিক, ঝাপসা দেখি পৃথিবীর গতি...
শুধু ইঁটের দেওয়ালে গুমরে ওঠে উড়ন্ত ক্যালেন্ডারের রঙীন জীবন,
ঘুম পাচ্ছে, ঘুম পাচ্ছে-
আমার শরীর ক্রশিফায়েড, বেথলেহেমের এক খড়ের গাদায় শুয়ে আছি,
সামনে জীবন্ত ঈশ্বর...

ভাটিয়ালী শব্দ

তোমার হাত ধরে দাঁড়িয়েছিলাম
মাঝখান দিয়ে নদী বয়ে গেলো,
এখন দুই পাড়ের মাটিতে পড়ে আছি দুটি ভাটিয়ালী শব্দ...
নৌকার দাঁড় যখন ছলাৎছল
সুরে বাজতে থাকে-
বুকে বেজে উঠি কাঙালের পদ্য হয়ে,
লালমাটির চন্ডীমন্ডপের একতারা কেঁদে ওঠে দিকশূন্যপুরের কবির জন্য
শুনতে পাও, পৃথিবী
এখন লালন সাঁইয়ের দরবারে ধূপ হয়ে পুড়তে থাকি একটু একটু করে
প্রতিদিনের এক-একটি ছাই কপালে মুছে নেয় ধর্মগ্রন্থের প্রচ্ছদ্!
নিরাকার দেখি বিবিধমাত্রা,
একই লয়ে গেয়ে ওঠে প্রার্থনাগান
রেওয়াজী অক্ষর-
ঈশ্বর, প্রেমিকের যুগলবন্দী!
নদী বয়ে যায়
আমরা বেদুইন কলমে নকশী কাঁথার বিচ্ছেদ লিখি হৃৎপিন্ডে...





কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন