শুক্রবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৭

ব্রততী সান্যাল

জীবনসাথী

অনায়াস সম্পর্কের তাগিদে প্রেম হেঁটেছে বহুদূর,
আঁখি মেলানোর একদা আছিলায়
পদচিহ্নে অতিক্রান্ত অগণিত বিকেল-রোদ,
নৈমিত্তিকতার নিঃশ্বাস ফেলেছে অভ্যাসের গাছতলায়

অন্যায্য অভিমানের আচমকা তাগিদ
প্রথাগত জোৎস্নায় অশ্রুছাপ রেখেছে,
আপাত বিচ্ছেদের সশব্দ দাবিতে
কখনো বা যুক্তি সাজিয়েছে প্রাণপণে

মোহময়ী ভোর তবু আবেগ খুঁজেছে আবার,
জাপটে ধরেছে বর্ষীয়ান মেলবন্ধনের শিকড়--
শার্সি ভেদ করা উদয়রেখা দেখেছে অমোঘ যুগলবন্দী

বিধ্বংসী তুফানের অন্তিমতম পর্যায়ে
স্নিগ্ধ বৃষ্টিস্নাত দুই ঠোঁটের সংজ্ঞায়,
ঘুমন্ত সোহাগ রঙ মেখেছে আবার

ব্যস্ততার চোরাবালিতে, চিরনতুনের খামে
অধ্যুষিত হয় মুহূর্তের স্রোতে অবিচল দায়ভার,
খেয়ালী শহরতলীর অচেনা অ্যাভিনিউ ছুঁয়ে


গোধূলির উপান্তে

পড়ন্ত বিকেলের ব্যক্তিগত আঙিনায় হৃদয় মেলে দিই
ধোঁয়া ওঠা পেয়ালায় নিঃশেষিত চুমুক 
ঘনিয়ে আসা অন্ধকারের চিবুক ছুঁয়ে,
অবচেতনার মায়াকুঠী স্থাপন করে

ঝাউগাছের ফাঁকে আকাশ জমে আছে,
পরিযায়ী মেঘ যেন ঢেউ-ভাঙা সমুদ্রঅবয়ব বদলে কেবলই ঝরতে চায়
অবাধ্য হাওয়া বুঝি চিঠি দেয় কাউকে
খামে লেগে রুপোলি জোৎস্নার স্বাক্ষর

কঘ যেন বলার ছিল কত পথ একান্তে চলার ছিল
প্রসাধনে নৈর্ঋতের রঙ মেশানোর ছিল,

চিরচেনা ফ্রেমটা খুঁজে পাই না আর ধূসরাভনীল অভিমান মেখে ছাতে এসে দাঁড়াই
অযুত তারার গায়ে রূপকথা লেগে থাকে

সময়স্রোত বাস্তব খচিত কাঁকর-পথে চলতে শেখায়, আর
কার্নিশ ঘিরে বেড়ে ওঠা নিস্তব্ধ রাত,
কল্পনা বুনে চলে রোজ কলমবন্দী আবেগ সযত্নে আঁকতে শেখায়


It's all about the journey

মন খারাপের চেনা সিঁড়ি বেয়ে নামে মুহূর্তের ঢল...

কিছু একান্তই ব্যক্তিগত,
অস্বস্তির মোড়কে সন্তর্পণে খামবন্দী

কিছু অনায়াসে হেসেখেলে বেড়ায় স্মৃতির উঠোন জুড়ে,
ব্যস্ততায় অভ্যস্ত শহরতলীতে তার খোঁজ রাখে না কেউ

অভ্যাসের রেলগাড়িটা বুঝি আচমকা থামে একলা কোনো দুপুরে,
সিঁড়িটা প্রকট হয় ক্রমশ
স্টেশন জুড়ে ছড়িয়ে থাকে পূর্বরাগস্মৃতি...

দু এক পা ফেলতেই ফুরোয় সময়যানের মেয়াদ,  
ফ্রেমবন্দী দার্শনিকতার হাতছানি এড়াই, অনিবার্য গন্তব্যে ফিরি আবার

বাস্তবের রুক্ষ রাজপথে সুখকণা সন্ধানে প্রত্যহ ইতি টানে বেলাশেষের সূর্যাস্ত...


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন