শনিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৬

বিতস্তা ঘোষাল

আরশি

জানালার কাচে প্রতিবিম্ব
কারোর ভ্রু যুগলের উদ্ধত চাউনি
কারোর ঠোঁটে এক চিলতে হাসি
কেউ বা আনমনা চোখে উদাসী
কেউ ব্যস্ত মোবাইলে, কানে হেডফোন
অকারণে কেউ বকে যায়,
কারও কাজের মাসী আজ আসেনি,
কলিগের সাথে কারও লুকিয়ে প্রেম 
কে মন্দারমণি, কে দীঘায় পড়ল ধরা
কাকে বাঁশ দিতে হবে, কার সেক্রেটারির বুক খোলা,
মেলা চলছে, কে যেন কিনেছে সাত হাজারের শাড়ি
কাঁথা স্টিচ গতবারে কেনা, এবার গরদে আড়ি,
প্রাইভেট টিচার
মাইনে চার হাজার, সপ্তাহে তিনদিন,
মোবাইলেই ব্যস্ত, পড়ায় কি?
এ টি এম-এ সব দু’হাজার, সব এখন ক্যাসলেশ, পে টি এম, আরো কত কী!
জানালায় ছায়া, এলোকেশী লালচুল
টপলেস,
হঠাৎ চিৎকার...  
যত সব লোফার, সুযোগ বুঝেই গায়ে পরা, মারব এক চড়
কাচের ভিতর দিয়েই দেখি নানান মাথা, মুখোশ পরা...
  
আরশির দিকে তাকিয়েই থাকি... 
সহসা ঘোর ভেঙে শুনি পরবর্তী স্টেসন...
আ: বাইরে কত আলো!


আলোর সন্ধানে


(১)

একটা একটা করে খুলে ফেলছি মনের ভাঁজ,
এর মধ্যে লুকানো ছিল কৈশোরের স্বপ্ন
কিশোরীর ভীরু প্রেম
যৌবনের উচ্ছ্বাস
যুবতীর সংসার
একটা নিটোল ঘর।

সবটাই বুঝি ছিল রামধনু
মোহময়, সোনার পাথরবাটি

খুলে ফেলছি সব গোপন ইচ্ছেদের,
উড়িয়ে দিচ্ছি, ঝোরো বাতাস নিয়ে যাক
তাদের সাগর পার করে

আমি ফিরে যেতে চাই ইনকা কিম্বা মায়ায়
চোখের কোণে বিদ্যুৎ হেনে 
আমিই হতে চাই প্রথম মানবী।

যুগান্তর পার করে এসো
ভেঙে ফেলো সব শৃঙ্খল
মুক্ত করো আমায়...


(২)

তোমার উত্তাপে কখনো জমে যাই
বরফ
কখনো গলে জল,

আমার কোনো আকার নেই
পাত্রে বদলে ফেলি নিজেকে
তালু থেকে পরতে পরতে
নি:শেষ, তবু থেকে যাই।
থেকে যাই মাটির গভীরে
শিরা উপশিরায়, রক্তের সাথে
মিশে যাবার ব্যর্থ বাসনায়




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন