অন্ধ কিরাত
আজ হাওয়ার গতি একটু বেশি। সন্ধে থেকে গা ম্যাজম্যাজ করছে অপালার। ঝিমলির আজই আবার অফিস থেকে ফিরতে দেরি হবে বলে গেছে। দেরাজ খুলে প্লাস্টিক বাক্সটা থেকে ওষুধ বের করে খেতেও ইচ্ছে করছে না। খুব গোছানো মেয়ে ঝিমলি। ঘরের সবকিছু টিপটপ গুছিয়ে রাখতে ওর জুড়ি মেলা ভার। এই অতিরিক্ত খুঁতখুঁতুনি মাঝে মাঝে অপালাকে বিরক্ত করে তোলে। ঘরের মধ্যে একটা অকারণ কৃত্রিমতা ওকে হতাশ করে। ক্লান্ত করে কিছুটা মেঘলা দিনের মতো। তখন দেওয়ালের দিকে তাকিয়ে চুপ করে বসে থাকতে ভালো লাগে। জানালা দিয়ে ঢুকে পড়া বেহায়া আকাশটাকে দু’হাত দিয়ে হুশ হুশ করে তাড়াতে থাকে। ঘরের গোলাপি দেওয়ালে ঘন পীতরঙা ছাপ পড়তে থাকে দশ আঙুলের। কনিষ্ঠা, অনামিকা, মধ্যমা, তর্জনী, বৃদ্ধাঙ্গুলি, বৃদ্ধাঙ্গুলি, তর্জনী, মধ্যমা, অনামিকা, কনিষ্ঠা। সমরেশ চলে যাবার পর অপালা ঝিমলির কাছে চলে আসে। দুই অসম বয়সী নারী। অথচ সুখে দুঃখে পরস্পরকে জড়িয়ে থাকলে কোথাও কোনো অসামঞ্জস্যতা নজরে পড়ে না। রাতে ঝিমলির শরীরের রহস্য খুঁজতে খুঁজতে, ঠোঁটে ঠোঁট মিশিয়ে উষ্ণতা নিতে নিতে অপালার কখনো মনে হয়নি ঝিমলি তার চেয়ে বারো বছরের ছোট। বরং শরীরী খেলায় ঝিমলি অপালাকেও হতভম্ব করে দেয়।
একটা ভীষণ চেনা গান মনে পড়ি পড়ি করেও মনে পড়ছে না অপালার। গুলজারের কোনো গান সম্ভবত। অথবা শাবানা আজমির বর, নামটা কী যেন তারও হতে পারে। সমরেশের সাথে প্রায়ই সুরে সুর মিলিয়ে গেয়েছে গানটা। কতদিন হবে আর! বড় জোর বছর দুই। এর মধ্যেই ভুলে গেছে দেখে অপালা অবাক হলো। ছোট থেকেই তার স্মৃতি শক্তি ভয়ানক প্রখর। কিন্তু আজ কিছুতেই গানটা মনে পড়ছে না। অস্থির অপালা ঘরের একটা কোণ বেছে নিয়ে বসে পড়লো। ফরাসে ছড়িয়ে রাখা দিনগুলো ছুঁতে চাইলো একটা একটা করে। ভাবতে চেষ্টা করলো সমরেশের সাথে কাটানো দশ বছরের দাম্পত্য জীবনটাকে। কিচ্ছু মনে পড়ছে না অপালার। ওর শুধু মনে হতে লাগলো গলি পেরিয়ে আসা অন্ধকারটা তখন ওর গায়ে জড়িয়ে দিচ্ছে শ্যাওলার চাদর। আরও গুটিশুটি অপালা মিশে যেতে লাগলো পীতছাপের আঙুলগুলোর ভেতর।
আজ হাওয়ার গতি একটু বেশি। সন্ধে থেকে গা ম্যাজম্যাজ করছে অপালার। ঝিমলির আজই আবার অফিস থেকে ফিরতে দেরি হবে বলে গেছে। দেরাজ খুলে প্লাস্টিক বাক্সটা থেকে ওষুধ বের করে খেতেও ইচ্ছে করছে না। খুব গোছানো মেয়ে ঝিমলি। ঘরের সবকিছু টিপটপ গুছিয়ে রাখতে ওর জুড়ি মেলা ভার। এই অতিরিক্ত খুঁতখুঁতুনি মাঝে মাঝে অপালাকে বিরক্ত করে তোলে। ঘরের মধ্যে একটা অকারণ কৃত্রিমতা ওকে হতাশ করে। ক্লান্ত করে কিছুটা মেঘলা দিনের মতো। তখন দেওয়ালের দিকে তাকিয়ে চুপ করে বসে থাকতে ভালো লাগে। জানালা দিয়ে ঢুকে পড়া বেহায়া আকাশটাকে দু’হাত দিয়ে হুশ হুশ করে তাড়াতে থাকে। ঘরের গোলাপি দেওয়ালে ঘন পীতরঙা ছাপ পড়তে থাকে দশ আঙুলের। কনিষ্ঠা, অনামিকা, মধ্যমা, তর্জনী, বৃদ্ধাঙ্গুলি, বৃদ্ধাঙ্গুলি, তর্জনী, মধ্যমা, অনামিকা, কনিষ্ঠা। সমরেশ চলে যাবার পর অপালা ঝিমলির কাছে চলে আসে। দুই অসম বয়সী নারী। অথচ সুখে দুঃখে পরস্পরকে জড়িয়ে থাকলে কোথাও কোনো অসামঞ্জস্যতা নজরে পড়ে না। রাতে ঝিমলির শরীরের রহস্য খুঁজতে খুঁজতে, ঠোঁটে ঠোঁট মিশিয়ে উষ্ণতা নিতে নিতে অপালার কখনো মনে হয়নি ঝিমলি তার চেয়ে বারো বছরের ছোট। বরং শরীরী খেলায় ঝিমলি অপালাকেও হতভম্ব করে দেয়।
একটা ভীষণ চেনা গান মনে পড়ি পড়ি করেও মনে পড়ছে না অপালার। গুলজারের কোনো গান সম্ভবত। অথবা শাবানা আজমির বর, নামটা কী যেন তারও হতে পারে। সমরেশের সাথে প্রায়ই সুরে সুর মিলিয়ে গেয়েছে গানটা। কতদিন হবে আর! বড় জোর বছর দুই। এর মধ্যেই ভুলে গেছে দেখে অপালা অবাক হলো। ছোট থেকেই তার স্মৃতি শক্তি ভয়ানক প্রখর। কিন্তু আজ কিছুতেই গানটা মনে পড়ছে না। অস্থির অপালা ঘরের একটা কোণ বেছে নিয়ে বসে পড়লো। ফরাসে ছড়িয়ে রাখা দিনগুলো ছুঁতে চাইলো একটা একটা করে। ভাবতে চেষ্টা করলো সমরেশের সাথে কাটানো দশ বছরের দাম্পত্য জীবনটাকে। কিচ্ছু মনে পড়ছে না অপালার। ওর শুধু মনে হতে লাগলো গলি পেরিয়ে আসা অন্ধকারটা তখন ওর গায়ে জড়িয়ে দিচ্ছে শ্যাওলার চাদর। আরও গুটিশুটি অপালা মিশে যেতে লাগলো পীতছাপের আঙুলগুলোর ভেতর।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন