স্বপন-সুলতা
সুলতাকে সহ্যই করতে পারছে না স্বপন। অশুভরাত্রির
রাত পোহাবার পর থেকেই জনসমক্ষে এড়িয়ে চলছে তাকে। ব্যাপারটা ধরে ফেলে স্বপনের বোন
রীতা। কিছুক্ষণ আড়াল থেকে লক্ষ্য ক’রে
দাদাকে বলে, ‘তোদের মুখে হাসি নেই কেন রে দাদা?’
- ‘আমি তো আর কোলগেট দিয়ে দাঁত মাজি না!’
- ‘ইয়ার্কি না দাদা। এইবেলা বলে ফ্যাল। দেরি হয়ে
গেলে আর কিছু করার থাকবে না’।
রীতাকে এড়িয়ে বাইরে এসে একটা সিগারেট ধরালো
স্বপন। মা বাবা, এমনকি সুলতার বাড়ি থেকে
আসা অরুণাদির মুখোমুখি হলে তার মনে যে ঝড় চলছে, সে সংবাদ গোপন থাকবে না। সুলতাও
নাকি হাঁড়িমুখ করে বসে আছে। এতক্ষণে নিশ্চয়ই প্রশ্নবাণে নাজেহাল হচ্ছে।
কিন্তু বিয়েবাড়িতে একা থাকার যো কী! প্রণব এসে
হামলে পড়ল, ‘দে গুরু, একটা সিগারেট ছাড়।
তুই তো একটা লোক হয়ে গেলি রে! কাল বেড়াল মেরেছিস, না?’ সিগারেটে আগুন দিয়ে স্বপন বলে, ‘না, মশা
মেরেছি’।
- ‘অ্যাঁ! হাঃ হাঃ হাঃ!’ প্রণব হাসতে হাসতে ধোঁয়া
ছাড়ে। ‘সে কি রে! বেড়াল না মেরে থাকলে দুঃখ আছে জীবনে’।
সুলতা যে কাল রাতে বেড়াল মারতে দেয়নি সে কথা
প্রণব কেন, কাউকেই বলতে পারবে না স্বপন। কিন্তু দেয়নি কেন? সে তো জানত না! তবে
বেড়াল মারার মানে কি মুখ বেঁধে গায়ের জোরে
ধর্ষণ করা? স্বপনের ধারণা ছিল ব্যাপারটা অযাচিত দ্বার হয়ে যাবে। তার পুরুষাকারে
লাগছে এখন। এই মেয়েকে নিয়ে সারাজীবন কাটাতে
পারবে না সে। নিজের মুখের দিকে তাকাতেই পারবে না। গায়ে হাত দিতে দেবে না,
এত সাহস?
- ‘প্রণব, ডিভোর্সের কোনো উকিল জানা আছে তোর?
প্রণবের গলায় ধোঁয়া ছাড়তে গিয়ে বিষম লাগল। ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে কাশতে থাকল সে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন