অনুষ্ঠানের রিপিটেশন
এবং কয়েকটি বিজ্ঞাপন বিরতি
আমাদের বিজ্ঞাপনের মধ্যে মেয়েছেলে একটা চলেই আসে ঠিক
তার হাত থেকে দিনকাল কঙ্কাল ঝরে ঝরে পরে যখন
সাজানো প্লেটের ওপর রাখি তা
ড্রইংরুম থেকে বেরোবার শব্দে প্রার্থনা করি আরেকটা খুন যেন
না হয়!
অথচ আপনি জানেন আমি তো দো’নলা বন্দুক ছেড়ে
দেওয়ালে ছায়া হয়ে যাওয়া দাগের গানই শুনি
বুলেটের প্রতি লোভ থেকেই যায় আমার
আমি তো বুলেটের মধ্যে থেকে খুঁজি গুলমোহরই
কারণ বুলেট অন্তর্ঘাতী হয় না কখনও যেমন গুলমোহরও তাই
হরিণের শিং জানে সেকথা ও দেখে সেই ছায়াতে রোদ চক্চকে হলে
কতটা বেড়ে যায় রেঞ্জ ও কাছে আসে কতটাই বা ফরেস্ট রেঞ্জার
আপনি পিয়ানোর স্কেল চেঞ্জে ব্যস্ত মেয়েটির বুকের দিকে তাকান
যার বোঁটাগুলো পিয়ানোর সাদা-কালো রিডের দিকেই চেয়ে আছে
আর যেখানে সুরের ভিক্ষা নেই কোনো, কোনো জিভ নেই ঝালা’র
সুতরাং আপনার সাথে মেয়েছেলে নিয়ে রফা হয়ে গেলে
আমি তো তাকিয়েই থাকি আর একটা নতুন বিজ্ঞাপন বিরতির দিকে
আরেকটা বিরতিতে প্যালেস্তানী নয় একজন জিপ্সি চাই
আমি তো সেই সাবানই মাখি যা মেখে
স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতে করতে একটা রোমানিয়ান মেয়ে
তার ঘর খুলে দেয়, খুলে দেয় দোর এবং ভোরের আগের পৃথক অন্ধকার
সেখানে দো’নলা বন্দুক ও সাবান ও ঘর ও ভোগ রিপিট হচ্ছে...
রিপিটে শান
প্রতিটা ছুরিই তার
ধার থেকে পড়ে যেতে যেতে
সব্জির সাথে, মাংসের
সাথে বলে নেয় শেষ কথাটুকু
তার ছায়া
রন্ধনকারীকে অ্যাপ্রনের উদ্দেশ্য থেকে
নিয়ে যায় স্বাদের
গভীরতার দিকে, স্বাদকোরকের নিচে
যতগুলো গহ্বর আছে
তার দিকে
রান্নাঘরের সে কথায়
শা’মরিচ, জিরেগুঁড়ো আর কলিফ্লাওয়ার
লেগে থাকলে পাওয়া
যায় এক বিফল রন্ধন ইঙ্গিত
কতটা ছেড়ে যাওয়া
তেলের মতোই
যদিও প্রতিটা ছুরিই
তার ধারের ও ভারের কথা জানে গোপনে
আর ভরের ওপর নেমে
আসে প্রকাশ্যে যখন, লক্ষ্য রাখে
হাতল থেকে অবস্থান
পালটে নেওয়া আঙুলের প্রতি
তার লোহিত ও
শ্বেতকণিকার নদীর প্রতি, ডিঙি নৌকার মতোই
ছুরিটি দিগ্ভ্রান্ত
হবার সময় সে পথে
মাংসের ঢিপি ফুটে
ওঠে গোলাপী ফুল যেন, জেগে ওঠে সব্জির বাজার
আর দ্রুতি নিয়ে
ছুরিটি রিপিটেটিভ হয়
এবং ঘা পড়ে
গুলমোহরে, নখের আয়নায়
অপরিবর্তনীয়
অবস্থানে সরণ শূন্য হয়
ঘ্রাণ বদলের পর
যাওয়া আর আসার দাগ শুধু
বাঁটের ছায়ার কথাই
বলে, চক্চকে ছায়ার কথা যা ছুরিটি
রেখে দেয় নিজের
সাথেই ব্রকোলির পাশে
ক্রমান্বয়হীনতা
এই সেপ্টেম্বরের
আলোর মধ্যে বেঠোফেন নেই কোনো
সে যায় আর আসে
রোমানিয়ান মেয়েদের মতো,
ছায়া তার চেয়ে বড়
কোনো
গল্প শোনায় যখন,
নার্সিসাস... নার্সিসাস
আমি জেগে উঠি ও পুরনো
নার্সিংহোম, বিলাসী পর্দার হোটেল
একই গান ফিরে ঘুরে
বাজে পিনের ডগায়
ওহ্ পুরনো
বিছানাপত্র, আতসকাচের আলো চিঠি দাও
দেখ ওই দরজার হাতলে
পুরোনো টোকা পড়ছে,
পড়ছে পুরনো টোকা ওই
টকে যাওয়া খাবারের মতো
বল ঠিকানা কতদূর
গেলে পায়ে ও উপায়ে
খুঁজে পাওয়া যায়
সঠিক বাড়ি আর
তার প্রকৃত অবয়বের
বিকেল
এবং সেই গতির
আখ্যান, এ সেপ্টেম্বরে কোনো
বেঠোফেন থাকে না, আর
সেই সারাজীবন
সেই ভরা ব্যর্থতা ও
ডুমুরের ফুল
কথা দাও আর আসবে না
এ বসন্তবিলাস
(প্রতিটি কবিতার জন্য কৃতজ্ঞতা : ‘গুলমোহর রিপিট হচ্ছে’, নীলাব্জ
চক্রবর্তী)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন