গপ্পের স্কাইলাইন
রুন্নি ছোটবেলা থেকে
আবৃত্তি করতে ভালোবাসে। রুন্নি জানে, রবীন্দ্রনাথ যে সুরে আবৃত্তি করা যায়, শঙ্খ ঘোষ সেভাবে হয় না বা
এই দু’হাজার চল্লিশ সালে কবি রঞ্জন বা অলোকের কবিতা ও তাই। এদেরকে আবৃত্তি করতে গেলে থেমে থেমে আর কোনো বিশেষ শব্দের ওপর জোর দিতে হয়। রুন্নিদের শহরতলি এলাকায় একটি সভাঘরে ও এককভাবে আবৃত্তি করার সুযোগ পেয়েছে। উপরোক্ত কবিদের সম্পর্কে ছোট করে পরিচিতি
দেবে। এদের অনেকের বয়স হয়েছে। অনুষ্ঠানে আর আসতে পারেন না। এই মঞ্চে আবৃত্তি করা গর্বের ব্যাপার।
পৌরসভার বাইরে দিকেই মাইক লাগানো আছে। রুন্নির প্রেমিকও হাজির। প্রেমিক উদীয়মান সাহিত্যিক। এমনকি লিখে সে সামান্য রোজগারও করে। অনেকদিন ধরে সে ‘অলৌকিক ঠোঙা’ নামে একটি পত্রিকায় দুর্দান্ত একটা গল্প লিখেছে, সেটা পড়তে দেবে বলেছিল। আজকে যদি সেটা না নিয়ে আসে তো এসপার ওসপার হয়ে যাবে। এমনিতে সারাক্ষণ চিমটি কাটে, ওই খটোমটো কবিতায় কী এমন আছে যে তা আবৃত্তি করা অভ্যাস করতে হবে! রুন্নির অবশ্য কবিদের সঙ্গে ব্যক্তিগত পরিচয় নেই। তবু প্রেমিক শ্রীস্বপ্নিল মালাকার বলবে, ‘খুব মজেছ দেখছি। কবিরা বুড়ো হলে কী হবে! তোমাকে পেলে না বর্তে যেত। ওদের না – ইয়ে, মানে প্রচুর লনজিভিটি...!’ রুন্নিও মুখ বেঁকিয়ে উত্তর দেয়, ‘সে তো তোমাকে দেখেই বোঝা যায়!’
পৌরসভার বাইরে দিকেই মাইক লাগানো আছে। রুন্নির প্রেমিকও হাজির। প্রেমিক উদীয়মান সাহিত্যিক। এমনকি লিখে সে সামান্য রোজগারও করে। অনেকদিন ধরে সে ‘অলৌকিক ঠোঙা’ নামে একটি পত্রিকায় দুর্দান্ত একটা গল্প লিখেছে, সেটা পড়তে দেবে বলেছিল। আজকে যদি সেটা না নিয়ে আসে তো এসপার ওসপার হয়ে যাবে। এমনিতে সারাক্ষণ চিমটি কাটে, ওই খটোমটো কবিতায় কী এমন আছে যে তা আবৃত্তি করা অভ্যাস করতে হবে! রুন্নির অবশ্য কবিদের সঙ্গে ব্যক্তিগত পরিচয় নেই। তবু প্রেমিক শ্রীস্বপ্নিল মালাকার বলবে, ‘খুব মজেছ দেখছি। কবিরা বুড়ো হলে কী হবে! তোমাকে পেলে না বর্তে যেত। ওদের না – ইয়ে, মানে প্রচুর লনজিভিটি...!’ রুন্নিও মুখ বেঁকিয়ে উত্তর দেয়, ‘সে তো তোমাকে দেখেই বোঝা যায়!’
যাইহোক সভা শেষে রুন্নি পত্রিকা নিয়ে বাড়ি আসে। আর গালে করে নিয়ে আসে স্বপ্নিলের আদর। একসময় সে গল্প পড়তে শুরু করে। ক্রমশ তার মুখের ভাষা ও কান্তি পাল্টাতে শুরু করে। এক শিক্ষিকার সঙ্গে রতিক্রিয়ার তীব্র তেজী উত্তমপুরুষের ভূমিকায় লেখা হাসপাতালের পটভূমিকায়। রুন্নি যত পড়ে তত জ্বালা। পাঠশেষে সে দুর্মর রাগে পত্রিকা চারফালা করে ছিঁড়ে ফেলে। গল্পের মহিলা তার সতীন, জীবন্ত তার সামনে যেন দাঁড়িয়ে। তার তিল চুল বক্ষ নিম্নাঙ্গ সবই সে চাক্ষুষ দেখতে পাচ্ছে। সুমিতা নামের কাউকে সে চেনে কিনা তাও ভাবতে লাগল। স্বপ্নিলের কোনো বন্ধু?
রুন্নির কান্না এলো। স্বপ্নিলের প্রেমিকারা তার মাথার ওপর উড়ছে এখন। স্বপ্নিলের ফেসবুকের সুন্দরীদের ভাবার
চেষ্টা করে রুন্নি। আশ্চর্য! এত রাগ আর দুঃখের ভেতরও পরমসুখে ডুবতে
চাইছে তার শরীর। স্বপ্নিলকে একবার কাছে টানছে আবার সরিয়ে দিচ্ছে। ছেঁড়া টুকরো থেকে স্বপ্নিল আর সুমিতা ওর
দিকে তাকিয়ে হাসছে। অক্ষর সব ভীমা করালবদনা। জানালা খুলে আকাশের দিকে তাকায় রুন্নি। আকাশের কি লনজিভিটি বাড়ছে? স্বপ্নিলের মুখের ওপরে কি ছুঁড়ে মারবে পত্রিকার টুকরোগুলো... কী যে করবে...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন