শুক্রবার, ২২ জুলাই, ২০১৬

অর্জুন বন্দ্যোপাধ্যায়

বর্ষা ঋতুর জন্য রচনা

গ্রীষ্মের শেষাশেষি সাধু ধ্যানে বসলেন। ধ্যান যখন পরাহ্ন পেরিয়ে একথালা ছড়ানো জ্যোৎস্নার পায়েসকে একটা জলবিন্দুর মতো জড়ো করেছে, তখন তিনি উচ্চারণ করলেন - আ।
আ-এ আবাহন। অর্থাৎ, আমন্ত্রণ জানানো হলো তাকে।

পরদিন সকালে, সাধু উচ্চারণ করলেন - ষা
সে-ঋতু তখন দূর-দূরান্তর থেকে খরা, বনাঞ্চল ও প্রস্রবনগিরি পেরিয়ে জড়ো ও জমাট হলো, মূর্ধায়।

পরদিন সারাটা দিন ধ’রে সাধু ধনুকে ছিলা পরালেন। সন্ধ্যায় পাহাড়ের মাথায় ব’সে সেই ছিলা ধ’রে দিলেন এক টান। শব্দ হলো - ‘ঢ়’।

ঢ-এ শূন্য র-এর ফুটকিতে এসে জমা হলো সব মেঘ। টনটনে লাল হয়ে ফুলে  ওঠা এক বিপুল ফোঁড়ার মতো গাঢ়। একটু নখের আঁচড় দিলেই ফেটে পুঁজ বেরুবে তার। আর শাদা পাতা বরাবর লম্বালম্বি গড়িয়ে নামতে থাকবে, কপালের ধোয়া টিপের মতো। বৃষ্টির জল।

সারা মাস তিনি পাহাড়ের মাথা থেকে ধনুকের ছিলায় টঙ্কার দিয়েই গেলেন। শব্দ হলো - ‘ঢ়’আর পিলপিল ক’রে মেঘ এসে জমা হলো বিরাট এক ঢ-এর নিচে,  বিন্দুতে।

আষাঢ়ের শেষাশেষি সাধু আবার ফিরে গেলেন ধ্যানেএবারে তিনি শুধু উচ্চারণ করলেন - শ্রা। অবিশ্রামের শ্রা।
সে পড়েই যাচ্ছে, ঝরেই যাচ্ছে, বন থেকে বন, বনান্তে। তাকে শুধু শুনতে হয়। শ্রাবণ - একটি শ্রবণেন্দ্রিয়গ্রাহ্য ঋতু।


1 টি মন্তব্য: