সোমবার, ২৩ মে, ২০১৬

দীপ রায়

স্নায়ুবিক

অন্ধ যখনই হেঁটে যায় পোড়া ঠোঁটে 
বোবা কানেতে কড়া নাড়ে যেন কারা 
মৃতপ্রায় কিছু খোলস ছাড়িয়ে রাখি 
কাঁধেহাত, যাঁরা পাইনি এখনও সারা 


ঝাঁজ-কথা

যে পন্থায় পেঁয়াজের কোয়ায় জমিয়ে রাখি না-বলাদের
সে পথের সন্ধানে তুমি
থলেবন্দি করে আনো আমায় রোজ সকালে
এরপর শুরু হয় বিয়োগ-যোগ
বঁটির ধারে ডুমো-ডুমো করে কাটো অথবা
ছুরির আগায় কুচিয়ে ফ্যালো আমাকে
আমি ক্রমাগত ছোট হতে হতে
এক মুহূর্তে খুব অনায়াসে মিলিয়ে যাই 
তখন তুমি থামো 
জ্বলজ্বলে চোখে কপালের ঘাম মুছে
আমাকে গুটিয়ে নিয়ে গরম তেলে ছেড়ে দাও ধীরে ধীরে
একটি ছ্যাঁক শব্দ ভেসে আসে কানে
তুমি শপথ নাও গ্যাস-ওভেন ছুঁয়ে 
একদিন তুমি ঠিক
আমার সব না-বলাদের পর্দা-ফাঁস করবে 
বড় বড় ভাবের প্রলেপ
চুঁইয়ে ছে সভ্যতা
ফাটলধরা দেয়ালে সদ্য ঘাড় গুঁজেছে একটা বিশ্বস্ত চারাগাছ
লেন্সে চোখ তোমার 
কী অপূর্ব ব্যাকগ্রাউন্ড
এরপর ধীরে ধীরে এগিয়ে
সুরকির বুকে দাপিয়ে বেড়ানো টিকটিকিটি খুন করলে জেনো স্বর্গলাভ নিশ্চিত
উফ্, বাস্তব! 


শেষ স্তবক

হেরে গিয়ে ফিরবো আমি কোথায়
কোথায় রেখেছিস স্থান মোর বা-কোণের
ফিরে যাব আমি কোন পথে হেঁটে
ধুলোমাখা জমা অনুতাপে
তুই চেয়েছিলি রোজ সান্ধ্য-আকাশে
রামধনু আঁকবো আমরা একসাথে 
অফিস-ফেরত্ নিত্যযাত্রী যা দেখে 
বাড়ি ফিরে গল্প করবে তার প্রিয়জনকে
বলেছিলি জোর গলায় একদিন
তোর আর কবিতা লিখতে ভালো লাগে না
বুকের মধ্যে কেমন যেন একটা চিনচিনে ব্যাথা ধরে কলম ধরলেই
মুহূর্তে তোর রুমাল ভিজে যায়
তারপর কত এলোমেলো তুলির টান 
আমরা টের পাই প্রতি কবিতাই এক্-একটি মৃত্যুগাঁথা 
আর অতর্কে এক্-পা দু-পা করে দূরত্বে সরে যাই

আর মাঝে পরে থাকে কিছু নিরীহ শব্দরা 
গায়ে মেখে শোকজ্ঞাপনের গন্ধ

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন