নদী পুকুর আর স্বয়ং আমি
লড়াই করছি নিজের সাথে।
- Be gentle with yourself
জীবন একটা যুদ্ধক্ষেত্র
স্বয়ং যে সৈনিক।
-তুমি একটা নদীর মধ্যে। সদা প্রতিকূলতায়।
যাও প্রিয় কোনো সুন্দর পুষ্করিণীতে;
স্থিরভাবে উপভোগ করো তার উষ্ণ স্বচ্ছ
কাচের মতো জলরাশি।
কিন্তু আমি যে স্রোতের প্রতিকূলেই সাঁতার
কাটতে ভালোবাসি।
কঠিন সত্যের মধ্যেই খুঁজে পাই সৌন্দর্য। উৎগ্রীবতার
অস্হিরতার মধ্যেই ইরা, পিঙ্গলা, সুষুম্না বেয়ে নেমে আসে
ঘামের মতো বরফগলা শীতল
উন্মোচন। ঘোলা জলের আবর্তে
পাক খেতে খেতে অনুভব করি
গলা অবধি নিমজ্জিত এই শরীরটার
ভেতর আত্মার অবস্থান। তার
অস্বচ্ছতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকে না।
লৌকিকতা কি স্বচ্ছতা!
পুকুরের মধ্যে তুমি, ভাবনা কেন নদীর বুকে
ভাসমান।
তা কী করে সম্ভব; সে যে নির্বিঘ্ন বিপদসংকুল নয়!
শান্তিকে উপভোগ করো। সুন্দরতাকে অবগাহন করো।
তা তো করছি। খিদে উপভোগ করছি।
ঘামে তৃষ্ণা মেটাচ্ছি।
প্রতিকূলতার মধ্যেই বাঁচার
মানে খুঁজছি!
আরাম করো; শরীরের আরাম। মস্তিষ্কের আরাম।
আরাম পেতে তোমার লোভ হয় না!
সময় যে কম। এখনো অনেকটা পথ
চলার বাকি।
এটা সহজ কাজ নয়। চলো যাই প্রাচীন হই। শিথিল হও
বিশ্বাস করো নিজেকে; তোমার মস্তিষ্ক হয়তো নদীকেই চাইছে;
কিন্তু তুমি পুকুরের সাথে
সহবাস করতে পার নদী ভেবে।
বাইরে কি আছে সেটা যখন বিষয়
নয়। নিজের মনের
ভেতর পুকুরেই
একটা সমুদ্র বানিয়ে নিতে
পার।
আমি পুষ্করিণী পছন্দ
করিনা। কারণ এখানে কোনো তরঙ্গ নেই।
সমান্তরাল জীবন লবণহীন ভোগান্নের
মতো।
ঠিক আছে; সেটা তোমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। পুকুরের
মধ্যে তোমার চাহিদার
সবকিছুই আছে যা তুমি কোনো
সংগ্রাম ছাড়াই পেতে পার। নদীতে স্নানে যাবার কি দরকার!
বিন্দুমাত্র সংগ্রাম ছাড়া
একফোঁটা নিশ্বাস নেওয়াও আমার কাছে
অপরাধ। লড়াই থেকে পিঠ-বাঁচালে জীবন অভিজ্ঞান
থেকেও যে
দূরে চলে যেতে হবে। তার চেয়ে
নদীর বুকেই হয় হোক সলিল
সমাধি।
প্রত্নজিঞ্জাসা
শুকিয়ে গেলাম
ভালোবাসা নেই বলে।
শুকিয়ে যাবে
গোলাপি আভার অভাবে
হিরোসিমার মতো। ফুসফুস, যকৃৎ সব
থাকবে, উবে যাবে হৃদপিন্ড।
গ্লেসিয়ারের
মতো গলে
যাবে বিশ্বায়ন
নামক উষ্ণতায়।
কত হাজারবার
নগর ধ্বংস হয়েছে
প্রত্নতাত্ত্বিকেরাও
জানে না।
কয়েক হাজার
বছর বাদে প্রকৃতির
অলীক নিয়মে সভ্যতার বাঞ্ছিত শর্তে
বিচ্ছিন্নভাবে
বঙ্গপোসাগরের তলায়
পাওয়া গেলেও
যেতে পারে তোমার
আমার প্রিয়
রাস্তা, করিডর, আসবাব
কত কি! হরপ্পা মহেঞ্জোদারোর মতো!
তখন সাগরের অন্য নাম হবে!
তোমার আমার
অস্তিত্ব!
পাওয়া যেতে পারে আমাদেরও জীবাশ্ম।
দুঃখ এগুলো
থাকবে অবিন্যস্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে
এখনকার মতোই
শৃঙ্খলাহীন ভাবেই।
ওরা সে সময়
দাঁড়িয়েও সঠিক অনুমান করে নেবে
আমরা সভ্যতার
নামে স্থাপন করেছিলাম পতিতালয়
দেব-উদ্যানের
মতো এই সুন্দর পৃথিবীতে।
অসুরের মতো
ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম একে অপরকে
ধ্বংসের ঈর্ষাকাতর খড়গ নিয়ে। পাওয়া যেতে পারে
অনেক আঘাতের
চিহ্ন একটাও গোলাপ ফুল ডাইরির
পাতার ভেতর; কাটখোট্টা শুকনোও
পাওয়া যাবে না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন