মেজরিটি:
গণতন্ত্রে
একটা
বড় লেখা শুরু করেছিলাম ‘কালিমাটি’র জন্য। তাতে হবে অনেক
ইংরেজি কবিতার অনুবাদ। সময় লাগবে!
কিন্তু
এখনকার কিস্তি তো দিতেই হবে! তাই ওটা পরকালের (????) জন্য রেখে দিয়ে উপস্থিত
চটজলদি কিছু দিই। কী দেবো, ভাবতে ভাবতে মনে পড়ল যে বেশ কিছুকাল ধরে কিছু কুৎসাপরায়ণ টিভি চ্যানেল
পঃবঙ্গে জনকল্যাণবাদী শাসকদলের কোনো অনিয়ম/বেনিয়মের কথা তুললেই তাঁদের মুখপাত্র(রা) আগামী, এখন আরব্ধ নির্বাচনে
জণগনের রায়ের কথা বলছেন; বলছেন জনগণই জবাব দেবে — সম্ভবতঃ এই প্রত্যয়
থেকে যে জনগণের রায়ই বলে দেবে তাঁরা বেনিয়মে ঠিক না কুৎসাকারীরা তাঁদের নিয়মের আবাহনে! এতে চ্যানেল সঞ্চালক যদি জানান যে
জনগণের রায় বেদবাক্য হলে’ ওই বহু ধিক্কৃত চৌত্রিশেও বামের কোনো কাজ ভুল ছিল না, তখন সায়ান্টিফিক
রিগিং-এর কথা চলে আসে। কিন্তু চ্যানেল সঞ্চালক বা প্রতিবাদী প্রতিবেদক কেউই গণতন্ত্রে
মেজরিটির ধারণাটাকে খতিয়ে দেখেন না। ভারতবর্ষে ভোটের জলীয়তা বা ভৌতিকতা সুবিদিত।
বাম, ঘাস, রাম যেই তাতে জড়িত থাকুক না। ফলে মেজরিটি মত দিলেও তার প্রামাণিকতায় সন্দেহ
থেকেই যায়। কিন্তু যদি এমন হয়ও যে প্রতিটি পঃবঙ্গীয় ভোট ইংলণ্ডে স্কটল্যান্ডের থাকা নিয়ে করা
রেফারেণ্ডামের মতোই Simon
pure বা খাঁটি, তবু কি তার ফলে ক্ষমতায় আসীন দলের এবং তার সরকারের
সব কাজ/অকাজ/বিবেচনা/অবিবেচনা বৈধ ও সিদ্ধ হয়ে যায়? এর পিছনে যে মানসিকতা ক্রিয়াশীল
তাকে বলা যায় সংখ্যাধিক্যবাদ বা সংখ্যাগরিষ্ঠতাবাদ, তথা majoritarianism। সব সময়ে সেটা
গণতন্ত্রের শুভ নয়।
সুধী
পাঠক, জানি এই কথা শুনে অনেকের আজব লাগবে, তাজ্জব হবেন। তাই একটু বুঝিয়ে বলি! শুরু
করা যাক সংখ্যাধিক্যবাদের সংজ্ঞা দিয়েই। উইকিতে বলে ‘Majoritarianism is a traditional political
philosophy or agenda that asserts that a majority (sometimes categorized by
religion, language, social class, or some other identifying factor) of the
population is entitled to a certain degree of primacy in
society, and has the right to make decisions that affect the society’। কিন্তু আরেকটু তলিয়ে
দেখলে majoritarianismএর আরো গূঢ় অর্থ আছে। Paul Barry Clarke, Joe Foweraker-এর সম্পাদিত Encyclopedia of
Democratic Thought (London: Routledge, 2001) বইতে অ্যারেণ্ড লাইফার্ট (Arend
Lijphart) সংখ্যাধিক্যবাদ বলতে বোঝেন সেই তত্ত্ব
বা দর্শন যেটি মানে যে গণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সংখ্যাধিক বা সংখ্যাগরিষ্ঠের নিয়মই চালু
থাকবে। এটি আরো ব্যঞ্জিত করতে পারে এক গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থাকে যেখানে ক্ষমতা
যত বেশি সম্ভব কেন্দ্রীভূত থাকবে সংখ্যাগরিষ্ঠের হাতে
(পৃঃ ৪২৭)।
আপাততঃ মনে হতে’ পারে এইটা একেবারেই ন্যায্য কথা।
সংখ্যাগরিষ্ঠ ছাড়া রাষ্ট্রক্ষমতা তথা সার্বভৌমিকতার বৈধ উদ্গাতা আর কে হবে(ন)?
কিন্তু সংখ্যাধিক্যবাদী সরকারও যে
অনেক সময়ে অন্যায়ের আকর হতে’ পারে সে দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন জেরেমি বেন্থাম,
অ্যালেক্সিস ডি টকভিল থেকে জন
স্টুয়ার্ট মিল পর্যন্ত বহু উদারনৈতিক
তাত্ত্বিক। তাঁদের ভয় ছিল কেবল সংখ্যাধিক্যবাদের থেকে আসা শ্রেণিগত আইনপ্রণয়ন
(‘class legislation’) নিয়ে নয়। টকভিলতাঁর
Democracy inAmerica বইতে
যে ‘সংখ্যাধিক্যের স্বৈরতন্ত্র (‘tyranny of the majority’)-এর কথা বলেছিলেন, মিল তাকে সমর্থন করে’ এনেছেন ‘মতামতের জোয়াল’
(‘yoke of opinion’) ও এক ‘সামাজিক স্বৈরতন্ত্র’-র (‘social
tyranny’) ধারণা, যা চুপিসাড়ে, জানান না দিয়ে আমাদের শিরায় শিরায়
ঢুকে পড়ে’, আমাদের আচ্ছন্ন করে। [‘in political speculations the tyranny
of the majority is now generally included among the evils against which society
needs to be on its guard.Like all other tyrannies, the tyranny of the majority
was at first, and is still vulgarly, held in dread, chiefly as operating
through the acts of public authorities. But reflecting persons perceived that
when society itself is the tyrant— society collectively, over the separate
individuals who now compose it — its means of tyrannizing are not restricted to
the acts which it may do by the hands of its political functionaries … it
practises a social tyranny more formidable than many kinds of political
oppression, since though not upheld by such extreme penalties, it leaves fewer
means of escape, penetrating into the details of our life, and enslaving the
soul itself. … ]
এই
সামাজিক স্বৈরতন্ত্রকে আটকাতে মিল এমনকি বহুত্বভিত্তিক ভোটের’ (‘plural
voting’)-এর কথা বলেছিলেন। এটি এক ব্যবস্থা
যাতে সব নাগরিকের একটি করে’ ভোট থাকবেই। কিন্তু আর কিছু
শিক্ষিত, কৃষ্টিসম্পন্ন মানুষের ভোটের
সংখ্যা হবে বেশি, দুই থেকে ছয় পর্যন্ত। সর্বাধিক সংখ্যক ভোট থাকবে অধ্যাপকদের
(হায়!)। কেবল এই কিছু বিশিষ্ট মানুষের
বেশি ভোটের সংখ্যা বাকি সাধারণ মানুষের এক ভোটের মোট সংখ্যার থেকে বেশি হবে না।
সংখ্যাধিক্যের সমর্থনের ভিত্তিতে সরকারি নীতির সীমিত বৈধতার নির্দেশ করতে মিল কিছু
অসাধারণ উদাহরণ দিয়েছিলেন। যেমন
ইংলণ্ডে সংখ্যাগরিষ্ঠ আশি শতাংশ চা খায় বলে’ যদি সর্বদা কফির উপরই কর ধার্য করা হয়,
আর চা-কে কর ছাড় দেওয়া হয়, তবে রাষ্ট্রের কুড়ি শতাংশ কফিপায়ী চিরকাল বৈষম্যের
শিকার হবে। সেটা গণতন্ত্র, ন্যায় কিছুতেই সম্মত নয়!
কেউ
বলতেই পারেন যে, জনসাধারণ যদি কোনো নেতাকে বা
সরকারকে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায়
জিতিয়ে আনলে সেটাতে অসুবিধে কি আছে? জনসাধারণের সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থনপুষ্ট
সরকার কীভাবে
অগণতান্ত্রিক হতে পারে? পারে স্যার!
কীভাবে
পারে তার জন্য ‘mass society’-র
ধারণা আনছি আমি, William Kornhauser-এর বয়ানে। তবে
Kornhauser-এর ‘mass society’-কে বোঝার জন্য
একটু Emile Durkheim-এর বিখ্যাত Division of
Labour inSociety গ্রন্থের
মূল বক্তব্যকে বুঝতে হবে। শিল্পবাদ
আর নগরবাদ থেকে আসা সমাজজীবনের
বিশ্লিষ্টতাবাদী ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদ (‘atomist individualism’)যা সামাজিক সংহতিকে নষ্ট করছিলো, তাকে রোধ করতে Durkheim শ্রমিকদের সহ সমাজের অন্য মানুষদের পেশাগত সমিতি(occupational তথা professional
associations) তৈরি করতে পরামর্শ দিয়েছিলেন। এই মাধ্যমিক সমিতিগুলি(secondary
associations) ব্যক্তি ও রাষ্ট্রের মধ্যে একটা আড়াল,
পর্দা বা ব্যবধান টাঙাবে,
যাতে অসংগঠিত জনতার ক্ষোভ বা রাষ্ট্রের ক্রোধ একে অন্যের উপর আছড়ে পড়তে না পারে।
এই secondary associations-গুলোই আজকের পুরসমাজ বা
civil society-র পিতামহ
বা পিতামহী। প্রতাপভানু মেহতা
আজও ভারতীয় পুরসমাজে এই পেশাগত সংস্থাগুলোর প্রভাবের অভাবের বিষয়ে খেদোক্তি করেন।
তো,
যে সমাজে রাষ্ট্রের ও ব্যক্তির মধ্যে এই আড়াল নেই, সেখানে নেতা, দল বা সরকার
অনিকেত, বিশ্লিষ্ট ব্যক্তিমানুষদের যখন প্রত্যক্ষভাবে আহ্বান করে’, বা তাদের
উদ্দেশ্যে বক্তব্য রেখে’, তাদের মথিত বা আন্দোলিত করতে পারে সেটাই Kornhauser-কথিত ‘mass society’-র
আদিরূপ। সেখানে
নেতারা কীভাবে অনিকেত, অসংগঠিত মানুষদের প্রভাবিত
করে’ সংখ্যাধিক্যের সমর্থিত ব্যক্তি-একনায়কত্ব কায়েম করেছেন তা বুঝতে জর্মানিতে
হিটলার, ভারতে ইন্দিরা গান্ধী বা মোদীর দিকে, আর পঃবঙ্গেও
দেখুন! সর্বত্রই সংখ্যাগরিষ্ঠের
সমর্থনেই স্বৈরতান্ত্রিক প্রবণতা বিদ্যমান। Kornhauser তাঁর Politics
of Mass Society (Routledge
and K. Paul, 1959) বইতে
গণপ্রবণতা আর
বহুত্ববাদী প্রবণতার মধ্যে (‘mass tendencies and pluralist
tendencies’) মধ্যে পার্থক্য করেছেন। তাঁর মতে সামাজিক বহুত্ববাদ
গণতন্ত্রকে সমর্থন করে, গণপ্রবণতা নয়(‘social
pluralism but not mass tendencies support liberal
democracy’)। তবে ‘mass
society’ বিষয়ে দুটি ধারণা আছে। একটি গণসমাজকে দেখে এক
পারিপার্শ্বিকতার গুচ্ছ হিসেবে যার অধীনে সমাজের এলিটরা বা প্রবররা গণ
(masses)-এর চাপের
প্রতি উন্মুক্ত। অন্যটায় গণসমাজ এক পারিপার্শ্বিকতাগুচ্ছ যার অধীনে অ-এলিটরা বা
অপ্রবররা এলিটদের চাপের সামনে খোলা। তবুও দুটি ধারণাতেই গণসমাজ সম্বন্ধে একটি সাধারণ চিত্রকল্প আছে
যেটি এক নগ্ন, উলঙ্গ সমাজ, যেখানে সামাজিক এককগুলি বাইরের শক্তিগুলির প্রতি
প্রত্যক্ষ উন্মুক্ততা স্বাধীনতাকে বিপন্ন ও অনিশ্চিত করে তোলে (‘One sees mass
society as a set of conditions under which elites are exposed to mass
pressures. The other conceives mass society as a set of
conditions under which non-elites are exposed to elite pressures. Nevertheless,
they share a common image of mass society as the naked society, where a direct exposure of social units to outside
forces makes freedom precarious (p. 23)।
যখন সমাজের এলিটরা বা প্রবররা গণের চাপের
প্রতি উন্মুক্ত তখন সমালোচকরা তাকে বিঁধেছেন। কখনও তাঁকে বলেছেন ‘the
era of crowds’ (Le Bon), যেখানে
গণজনতাই সার্বভৌম আর বর্বরতার জোয়ার স্ফীতিমাণ (‘the populace is the
sovereign and the tide of barbarism mounts’)। Daniel
P. Ortega একে বলেন, (জন)গণের বিদ্রোহ (‘the revolt of the masses’)। কবি T. S. Eliotও গণসমাজকে এই নিন্দার্থেই
ধরেছেন। (p. 26) কিন্তু
গণতন্ত্রের বিপদ আরো বাড়ে যখন অ-এলিটরা বা অপ্রবররা এলিটদের চাপের সামনে কোনো
আশ্রয় পান না। Kornhauser বলেন এক বিশ্লিষ্ট সমাজ সর্বনিয়ন্ত্রণবাদী আন্দোলনকে ডেকে আনে, যেটি এক
জনসম্মোহক নেতার চেহারায় মেকি-কর্তৃত্বকে আর সর্বনিয়ন্ত্রণবাদী দলের চেহারায় এক
মেকি জনসমাজকে বৈধতা যোগায় (‘The
atomized society invites the totalitarian movement, which provides both
pseudo-authority in the form of the charismatic leader and pseudo-community in
the form of the totalitarian party’, p. 16)। আমরা
কি নিজের চোখে দেখছি না
কীভাবে কেন্দ্রে ও রাজ্যে এক সম্মোহক
নেতানেত্রীর মেকি-কর্তৃত্বের অধীনে সমবেত এক মেকি জনসমাজ কীভাবে মানুষের স্বাধীনতার উপর উপদ্রব করছে? এটা সামলাতেই তো মিল সকলের একভোট আর
কয়েকের বহুভোটের কথা বলেছিলেন। নইলে কখনো এক লুম্পেন জনসমাজ কখনও ধর্মের নামে, কখনও বা এক নেতার নামে স্বৈরতন্ত্র চাপিয়ে দিতে পারে বাকিদের উপর? রামের
বা উন্নয়নের নামে?
কী
বলছেন? তাহলে গণতন্ত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠতার স্থান কোথায়? আছেই তো! কিন্তু Arturo Agamben, Carl Schmitt,
Friedrich Balke ইত্যাদি অ-দৃষ্টবাদী তাত্ত্বিকরা সার্বভৌমিকতা
প্রসঙ্গে ‘empty space’ বা ‘empty place’-এর ধারণা এনেছেন। Schmitt বলেন এটা কোনো প্রথম
স্বাভাবিক সংস্থাও নয় আর দ্বিতীয় কোনো রাজনৈতিক সংস্থাও নয় (‘is not first
(natural) nor a second (political) body’)। Claude
Lefort, Ernesto Laclau, Jean-Luc Nancy ইত্যাদি
দৃষ্টবাদ-উত্তর তাত্ত্বিকরা সকলেই এই ধারণার অংশভাগী যে সার্বভৌমিকতা হয় নিজেই একটা
শূন্যতা বা ফাঁকাত্ব কিম্বা সেখান থেকে আসে (‘is either itself or emerging out
of an ‘emptiness’ a‘nowhere’)। Jacques Derrida একটি প্রবন্ধে বলেছেন এই ‘empty
space’-এর আরেক অর্থ হলো ‘death’। রুশোর
বহু ব্যাখ্যাতাও বলেছেন গণতন্ত্রে সার্বভৌমিকতা হলো ফাঁকা পরিসরের এক বিশাল
কাঠামো।
এই
ফাঁকা পরিসর কিন্তু এক বিশাল মিউজিক্যাল চেয়ারের খেলার মতো। নাগরিক/নাগরিকারা সেখানে ইস্যু বা
প্রতর্ক অনুযায়ী জায়গা দখল করবেন। মৃত্যুর নগরীকে জীবনের কুঞ্জে পরিণত করবেন। ভাবুন
তো আমরা সব্বাই প্রায় সব বিষয়ে দ্বিমত —
মোহনবাগান না ইস্টবেঙ্গল, মেসিনা
রোনাল্ডো, নাদাল না জকোভিচ, অমিতাভ না শাহরুখ, দীপিকা না করিনা/প্রিয়াঙ্কা,
কিন্স না ফ্রিডম্যান, মার্কেট না স্টেট, কেন্দ্রীকরণ না
বিকেন্দ্রীকরণ, লিবার্টি
নাকি ইকোয়ালিটি, মণ্ডল/কমণ্ডল না ভূমণ্ডল —
যারা উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক সমাজের আড়াআড়ি কাটা ফাট্গুলির বা আনুগত্যগুলির (cross-cutting
cleavages or loyalties) শরিক বা শিকার, তারা
হঠাৎ একটা ‘আদ্যিকালের বদ্যিবুড়ো’ (স্মৃতি থেকে সুনির্মল বসুর বরণডালা থেকে ধার
করলাম, দ্রঃ ভূমিকা)দলের সব কথাকে বেদবাক্যি বলে’ মেনে নেবে? নাকি একটা ‘identitive
majority’-র অসদৃশভাবে, একটা ‘shifting majority’-র ঢঙে বিশাল
মিউজিক্যাল চেয়ারের খেলায় বিভিন্ন চেয়ারে বসবে বিভিন্ন সময়ে?
মানছি,
Anthony Downs তাঁর An Economic Theory of Democracy
of Democracy বইতে যেমন বলেছেন, সব রাজনৈতিক দল এক একটা ব্যবসায়
প্রতিষ্ঠানের
মতো। তারা একটি প্যাকেজ উপহার দেয় ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলির ঢঙেই,
আর ওরা যেমন অর্থনৈতিক বাজার দখল করতে যায়, তারা তেমনি রাজনৈতিক বাজার দখল করতে
চায়। কিন্তু যারা ওই প্যাকেজে আঁটে না,
তাদের একটি আইডেন্টিটির প্যাকেজে ভরে’ দেওয়ার যে চেষ্টা চলছে তাকে আটকাবেন কোন
জৈদী? কোন অকিঞ্চন কিনতে চায় আমাকে? সুধীন্দ্রনাথের সেই লাইনগুলি মনে পড়ে। কেবল
পঞ্চাশ বছর পরে জন্মালে বলতে পারতাম এই কথাগুলো —
‘আমি বিংশ শতাব্দীর সমান বয়সী
মজ্জমান বঙ্গোপসাগরে; বীর নই
তবু জন্মাবধি যুদ্ধে যুদ্ধে, বিপ্লবে বিপ্লবে
বিনষ্টির চক্রবৃদ্ধি দেখে
মনুষ্য ধর্মের স্তবে নিরুত্তর,
অভিব্যক্তিবাদে অবিশ্বাসী,
প্রগতিতে যত না পশ্চাৎপদ, ততোধিক বিমুখ অতীতে’
কী মেজরিটিতে আমাকে কিনবি,
অকিঞ্চিৎ? বাম, রাম, ঘাস!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন