লার্ভা
বজ্রের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে কীট, খেয়ে
নিচ্ছে ক্রমাগত ফেমিনিন চোখ।
বিদ্যুৎপৃষ্টের ন্যায় স্তব্ধ
দৃষ্টি। সে
সংখ্যাতীত শূন্যতা, যেন এক উভলিঙ্গ
ঘোড়া অহরহ টমটম করে চলছে
আততায়ীর মতো। প্রজ্ঞার কাঁধ
ঝরে
পড়ে অশ্রুর মতো, ঝুঁকে থাকে মস্তক।
এই অন্ধকূপে একটি মাত্র একটি
জানালায় ঢাকা পড়ে থাকে অসংখ্য
সিল্কের কঙ্কাল। প্রাচীন
সূর্যও চলে
গেছে স্বায়ত্বশাষিত আঁধারে, আর চলার
চেষ্টায় বিভোর যুবতী এক
দৃষ্টিতে চেয়ে
থাকে খোঁড়া পায়ের নূপুরের
ভাঁজে।
প্রিয়জন ছেড়ে চলে যায়, রক্তের
ভেতরে ঘাই মারে বিষধর শিং। অথচ
কায়া নিঃসৃত ছায়াও লোপাট দেখেনি
কুমারী, জাতিকা মীন। আহ বল্লম
চৌচির করো বুকখানি।
এখানে নন্দনকাল নেই, শৌণ্ডিক
অন্ধকার ছাওয়া তর্জনী জানে
কতটুকু
পরিহাস করে যায় জুতোর ডান পাটি,
যদিও সে পাশেই আজীবন এক ক্রুশ
আঁকা ছিল।
নখ ও
নাগরিক
কথাবলী নাগরিক জীবন থেকে ধীরে
ধীরে
পেছনে চলে যাই। একবিংশের
বালিঘড়ি মুছে দেয় লু এবং
যাবতীয়
মরুঝড়, নির্জীব ফণা আর বিষদাঁত-
দোআঁশলা মাটিতে পড়ে থাকে
খোলসের
দাগ, মেটেসাপ অবয়বে।
নাবিক জন্মের আগের শতাব্দী
চেনে
নেই বাতিঘর, টর্চসেল আর কম্পাস।
পা ডুবে যাওয়া নাইলন কার্পেটে
সিল্কের
বেড়াল সামুদ্রিক পিথাগোরাসের
মতো
নেড়ে যায় সার্টিনের পিছল উলেন
লেজ। সেই সব ঘরের পাটাতনে কান
পাতলে আয়ুষ্কালের সমান
দীর্ঘশ্বাস
শোনা যেত।
বাঁশের মই বেয়ে কিছুদূর গেলেই
চাঁদ,
সাইমুমের ন্যায় ঘিরে থাকে মেঘ।
অপ্সরা চাদরে লেগে থাকে কিছু
ব্যক্তিগত বাঁকাহাসি আর
চিকচিকে
সিকোয়েন্সের কারুকাজ।
স্বর্ণলতা বলে
বলে কাঁদে মহীরূহ অসম পরিণয়ের
কারসাজিতে।
উড়ুক্কু মাছ আর লাউডগার মতো
সাবলীল সবুজ সাপ ঠুকরে খায়
কপালের মাঝখান অবিরত, বরাবরের
মতো আছড়ে পড়ে জোছনা খোলা
জানালা আর বিছানার কিয়দংশে।
কবি, ভাঙা গলায় গান গাও। গাও
ইস্পাত আর মাটির কথা অথবা যে
বুমেরাং ফিরে আসার পর তার গায়ে
লেগেছিল শ্বেতরক্ত! মাস্তল
ছিঁড়ে
গেলেও নাবিকের ভাঁজ করা টিনের
ট্রাংকের গা বেয়ে হেঁটে যায়
ধুলো আর
নাদ, স্মৃতি কেবল উজ্জল হয় বসন্তের
দিনে।
সভ্যতার আগের রাত্রির রঁদেভূরা
জানে
এ শহরের গলিতে গলিতে লোরকা
ঘুরে
বেড়াত, আর ষোড়শী তার নখের নিচে
পুষে রাখত কেউটের ছানাপোনা।
যাদুকর কেবল টুপির ভেতরে বসরাই
গোলাপ লুকোয়, তারও আগে কিছু
ব্যক্ত ছিল যা ব্যাপৃত হয়নি
জ্ঞানের
অভাবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন