গন্ধ-মাদন
আঃ...!!...আহা...!!...
মোড়ের মাথার উল্টোদিকে হাঁড়ির মুখ খুলতেই পাকস্হলীর মন খারাপ হয়ে যায়।
চাল, ডিম, আলু... আর ঠ্যাঙে জড়ানো চামড়া। একদিন ভেতরে কান পাতলে সেখানেও এক কাব্য ধরা দেবেই। তবে সে চেষ্টা আপাতত থাক, এখানে হাতের থেকেও নাকের কাজ বেশি, অতএব... শোঁকা শুরু হোক... গন্ধের মর্ম।
হাজার বাণী, হাজার স্লোগানও আমার বাবার সিগারেটের ধোঁয়াকে এখনও ছারখার করতে পারেনি। তাই সকালে বাথরুমের তামাকের সঙ্গে সাবানের একটা মারপিট লেগেই থাকে, যার পরোক্ষদর্শী আমি। যে গন্ধটা আমায় তাড়া দেয় আর বলে, ঘড়ির কাঁটা সামলে, নয়তো বাসও দাঁড়াবে না, অঙ্ক মেলানো এখনও বাকি!
এই গেল প্রথম পর্ব। এর পর ট্রেন হারানোর গন্ধ তো আছেই।
মাঝের পথটা কোনোরকমে ধুলোবালিতে ঘাম মাখাতে মাখাতে ভালোই চলে যায়। তারপর আবার শুরু হয় গন্ধবাজি।
বিয়েবাড়ির শেষ পাতে রসগোল্লার রসের সাথে যে সন্দেশটা জায়গা ভাগ করার চেষ্টায় থাকে, ঠিক সেই সন্দেশের গন্ধই পেলাম সেদিন লিসার গা থেকে। আরেকটু হলেই চুমু খেয়েই ফেলছিলাম। নেহাৎ ডাক্তারবাবুর বারণ আছে, নয়তো... তবে মানতেই হবে, মোটার (বন্ধুর শরীরটা একটু যা ভারী, তেমন কিছু নয়) গন্ধটা বেশ অচেনা লাগে।
চারপাশ কিছুকাল শুঁকে দেখেছি... ঠিক ধরতে পারিনি।
লেখা প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো... আমার পা দুটো এবং লেজটিও লুপ্তপ্রায় অঙ্গ।
তো ইদানিং বেলার দিকটায় তাপমাত্রা বড় স্বার্থপর হয়ে যায়। গাছের পাতাদের মধ্যে গরম ছড়িয়ে দেওয়ার প্রবণতা বেশ প্রকট হচ্ছে ক’দিন ধরে। হাওয়ারাও এই নিয়ে কিছু প্রতিবাদ-টতিবাদ জানাচ্ছে বটে, তবে এই নিয়ে আমার খুব একটা আগ্রহ নেই; আমি বরং এই সুযোগে মাঝ সন্ধ্যেবেলা বারন্দায় গিয়ে টুক করে এক মুঠো গন্ধ চুরি করে এনেছি।
(এখন আপাতত জামিনে)
শব্দ তরঙ্গের ছেলেমানুষি নিয়ে ইদানিং বেশ কিছু ধারণা হচ্ছে, আকাশও নাকি ভাগ করা যায়...
গন্ধের বিচারে ট্রামে-বাসে করে মুহূর্তগুলো খালি খালি ফিরে আসে।
কখনও তারা বাধ্য, কখনও কখনও জেদি, আবার কখনও বা...
শুধু সেন্ট দেওয়ার আগের মুহূর্তে খালি বুঝেছি মা, শহর আর প্রিয় কবির গন্ধ কখনও বোতলবন্দি হয় না... রুমালেও ধরা যায় না, খাতার কিছু পাতায় খালি ওগুলো বড় হয়; তবে বুড়ো হয় না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন