রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

সোনালি বেগম

ক্লোজ-ডিসট্যান্স

‘বিশ্বাসটা কার উপর করা যায়? বাবা-র উপর, মা-র উপর, বোনের উপর, ভাই-এর উপর, স্ত্রীর উপর, স্বামীর উপর, নাকি বন্ধুর উপর? সব সময় সজাগ থাকার  মন্ত্র ধ্বনিত হচ্ছে বাতাসে’ কংসাবতী নদীর তীরে শবনম ও স্বাতী 
‘ক্রাইম টেলিভিসন সিরিজ ‘দস্তক’ দেখিস?’ স্বাতীর ভ্রুকুটি  
‘পরম আত্মীয় বন্ধুদের প্রতি এত অবিশ্বাস স্থাপন! শো-টা প্রায়ই দেখি তো
‘মানসিক ব্যালান্স, কতটুকু  ক্লোজ হব, আর কতটুকু ডিসট্যান্স মেনটেন করব!’
‘বিশ্বাস হলো দৈনন্দিন বেঁচে থাকার মূলধন, তাই তো!’
‘দল বেঁধে বেঁচে থাকার সিকিউরিটি, আর কি’ 
‘ফিলিং সিকিওর রিলিজেস্ দ্য ফিলগুড কেমিক্যাল অক্সিটোসিন’ নদীর ধারে ফুরফুরে হাওয়ায় শবনম হালকা হওয়ার চেষ্টা করে 
‘শোন্, মানুষকে অবিশ্বাস করে কোন্ মানুষ সুখী হয়েছে, বল তো!’ স্বাতীর হাতে মোবাইল কাউকে মেসেজ করছে 
‘সত্যি, ইট টেক্স ইয়ার্স টু বিল্ড আপ ট্রাস্ট!’  
‘অন্ধভাবে তো কাউকে বিশ্বাস করা যায় না!’  
‘ভাব তো, আমাদের অরুণাভদাদুর অবস্থা!’ শবনম আর স্বাতীর চোখেমুখে অস্থিরতাবিকেলের শেষ রোদ মেখে পাখিদের ঘরে ফেরা দেখতে থাকে ওরা মোবাইলে অরুণাভদাদুর নম্বর। রিং হচ্ছে
শবনম - ‘হ্যাঁ, দাদু, এখন কেমন আছ?’
‘শোন, সেই যে লাল রঙের ওষুধের কথা বলেছিলাম, মনে আছে তোর?’
‘হ্যাঁ, তোমার পুত্র ও পুত্রবধূ নিয়মিত তোমাকে খাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট, তাই তো?’
‘সেটা খেয়ে খেয়ে আমার এখন হাই সুগারবিছানা ছেড়ে উঠতে পারছি না
‘সেকি!’ শবনম প্রায় আর্তনাদ করে ওঠে
‘ঐ লাল ওষুধটা আসলে ওয়াইন, লাল মদ কেউ মিসচিফ করেছে আমার সঙ্গে’  ফোনের লাইন কেটে গেল
শবনম আর স্বাতী হতবাক
‘ইউজ ইওর ওয়াইজ মাইন্ড, লজিক্যাল থিংকিং উইথ ইমোশনাল অ্যাওয়ারনেস’ 
দুই সখি হাতে হাত রেখে বলে - ‘ওয়েল, সামটাইমস ইট ইজ ইজিয়ার সেড্ দ্যান ডান্’ 
রাতের আকাশে তখন রাখি পূর্ণিমার চাঁদ আর মেঘের লুকোচুরি খেলা শুরু হয়ে গেছে।             

 
     



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন