শনিবার, ২২ আগস্ট, ২০১৫

কাজী জহিরুল ইসলাম

তা-ফল

পুরুষের ডিমে
তা দেন রমণীকূল
জরায়ুর ওমে
ফোটে ফুল
দশ মাসে।

কবিরা স্বপ্নের ডিমে
তা দেন প্রতিক্ষণ।
ফোটান
কিছু ফুটফুটে অহংকার
কিছু মসৃণ নিন্দা
কিছু স্নিগ্ধ কষ্ট
কিছু একরোখা দেশপ্রেম

এইসব
কবির তা-ফল
একদিন হয়ে ওঠে
তাহাদের গর্ভজাত কবি-তা।



হতাশা নগর

এখন যে স্থানে আমরা দাঁড়িয়ে আছি, এর নাম
হতাশা নগর। চারদিকে ঘোর লাগা দালানের
সারি; এলোমেলো বিক্ষিপ্ত গজিয়ে উঠছে লোভের,
মোহের, দম্ভের আর্কিটেকচার, দ্রুত, অবিরাম।
এইসব দালানের চেয়ে দীর্ঘ মানুষের লোভ,
দম্ভের পাখনা অশুভ ঝড়ের কসরতে লিপ্ত।
‘আরো চাই আরো’ বিভ্রান্ত প্রজন্ম, মোহান্ধ ও ক্ষিপ্ত।
সর্বত্রই হতাশা, সব মহলেই পুঞ্জিভূত ক্ষোভ।

শাসকেরা মিথ্যার বেশাতি ফেরি করে প্রতিদিন,
আমরা হুমড়ি খেয়ে পড়ি তবু ব্যালটের বাক্সে,
গণতন্ত্র গণতন্ত্র তসবিহ জপি সারাক্ষণ।
স্বপ্নের স্বদেশ! প্রত্যাশার আলো ক্রমশই ক্ষীণ।
মরে যেতে যেতে বলি, স্বপ্ন এক টুকরো, থাক সে
হৃদয়ের খুব কাছে তবু, সুখের অনুরণন।



কেন বারবার আমাকে তাগিদ দাও

কেন বারবার আমাকে তাগিদ দাও, ‘তাকাবে না
ওইদিকে, দেখ আমার নিটোল স্তনের গঠন।
ওখানে যাবে না।’ ওই পথ পিচ্ছিল, একথা কে-না
জানে? ‘ছোঁবে না নিষিদ্ধ পানীয়, রাতের প্রস্রবণ’।
অভিজ্ঞতায় প্রত্যহ শুদ্ধতার কাছে পৌঁছে লোক,
আমি এর ব্যতিক্রম কেউ নই। কেন এ তাগিদ
অহরহ তবে আমাকে তাড়িত করে, মৃত্যুশোক
পায়ে পায়ে হাঁটে সারাক্ষণ, যেন পরম সুহৃদ।

পুজোর সাজানো ডালি তুলে দাও রোজ দেবতারে।
পেয়েছ প্রেমের বর, তাই তুমি স্বর্গের দেবতা 
হাতে নিয়ে খেলো মর্তের পুতুল নাচ সারাদিন।
মাটির পুতুল ভেবে তাকে তুমি সাজাও সম্ভারে,
কাচের গারদে পুরে উপভোগ করো নীরবতা।
কী লাভ এ শুদ্ধতায়, যেখানে আবেগ পরাধীন!  








  


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন