রবিবার, ১৪ জুন, ২০১৫

অদ্বয় চৌধুরী

একটি রাতের গল্প, অথবা মৃত্যুর



শ্রেণীহীন আঁধারে তুমি ঘুরে বেড়াও তোমার ঘরে, উঠোনে, ছাদে, একাকী, শত্রুহীন। সমস্ত শ্রেণীশত্রুরা অবসৃত। এখন রাত। একমাত্র রাতের আঁধারই হলো শ্রেণীহীন। সমস্ত বিভাজন অদৃশ্য।  নিস্তব্ধতার সুষম বণ্টনএমন সুষম বণ্টনই তো তুমি চেয়ে আসছ সেই ত্রিশ বছর বয়স থেকে। অথবা তারও আগে থেকে। এটাই তো তোমার গল্প। এটা তো তোমারই গল্প।

এখন, দেড়শ বছর অতিক্রম করেও গল্পের কাঠামো বদল হয়নি। তুমি এখনো — একই ভাবে — একই রকম স্পৃহায় — একই রকম যন্ত্রণায় — চেয়ে আসছ সুষম বণ্টনগাঢ় নিস্তব্ধতার মতো। একাশুধু বদলে গেছে গল্পটা। এখন আর এটা তোমার গল্প নেই। এখন এই গল্পটা হয়ে উঠেছে একটি রাতের গল্প, অথবা মৃত্যুর। তবে সেই অংশ আসবে পরে, একেবারে শেষে, যখন সমস্ত নিস্তব্ধতা হারিয়ে ফেলবে ভারসাম্য, শেষ হয়ে যাবে

একা তুমি ভেসে বেড়াও ঘরে, উঠোনে, ছাদেআকাশে। তুমি কথা বল একা একা। নিজের সাথে।  তুমি প্রশ্ন কর। উত্তরহীন প্রশ্ন। তুমি কাঁদো। সশব্দে। তোমার কান্নার শব্দ দেড়শ বছর আগে ছিল বিপ্লবের জন্মক্রন্দন। এখন তা এক প্রচণ্ড কর্কশ আওয়াজ। বাইরে, তোমার আকাশের নিচে, হাজার  হাজার মাইল দূরের ফুটপাথে শুয়ে থাকা দিনমজুরের ঘুমন্ত শরীর এসইউভি গাড়ির চাকায় পিষে দেওয়ার শব্দ অনেকটা তোমার কান্নার শব্দের মতোই শোনায় যে!

গল্পটা একটি রাতের; মৃত্যুরও। রাতের আঁধারও এখন শ্রেণীহীন নয়। নিস্তব্ধতাও মৃত্যুহীন নয়।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন