M5/6
১
পাখি হয়ে যাবার পর আকাশ হয়ে আসে বসন্তের বনভূমি ... মিথিলায় কে তখন বাঁশী
বাজায় ...
যেন এক আশ্চর্য প্রেমিকা হাওয়ায় ভেসে এসেছে বহুকাল পর। মেঘের পায়ে অলীক বেজেছে তারামরু ... বহুদূর
ঝনক রাখাল, সব কিছুই কুয়াশাময় ... ডমরু কাঁধে নদীদের প্রাচীন বিদ্যালয় ...
মধুকুপি দেওয়াল ফেটে ওড়ে ধমনীর বীজ ...
যে তুমি আমাকে বিষাদ দিয়েছ, যে তোমার ঈশ্বর ছাড়া আর কোনো রঙ নেই ... যে
ঈশ্বর মানে যমুনার কোমরে বাঁধা এক বিশাল তরবারি, যার নাম ধাম কোলাহল জ্যোৎস্নার
হোলি ... সেই চমৎকারকে আমি বলি পিতামহ ... ফেরিঘাটের বিবর্ণ ময়ূর ... পাতার ফাঁকে
সূর্য ওঠে ... কখন অস্ত যায় গাছপালার পা ...
সেই ভিখিরিনীলে আরও কিছুকাল ভ্রূণটি পূর্ণ করি ...
২
আকাশের দিকে যেতে যেতে রাত হয়ে আসছে কণ্ঠ ... গান থেকে নেমে যায় মোহর ...
শূন্যদিকে ভরে ওঠে পশ্চিমের পার্পল, ওগো দিগন্ত, আজকের বিষাদে তোমারও অজস্র
লালপুতুল ...
আসলে কি জানো, প্রেমের কোনো আকার নেই ... দূর থেকে দেখি কম্পাসের গড়ন,
বৃত্ত ছুঁয়ে একশো জলপিপি উড়েছে চৌকো অলঙ্কারে, ঘাসফুলের ভিয়েন বসেছে সপরিবার, অজগরের বৃন্ত আজ বড়ো কোলাজ, ঝড় আঁকার
পরে শান্ত বনভূমিটি যোগাসনে ...
আজ আমাদের আমিগুলি পাথুরে, যেন ঈশ্বর, প্রস্থানের একটা বেজে ত্রিশ গায়ে
মেখে আমরা ভাসতে থাকৎ, রুক্ষ মন্দির ভরে থাকে শিলান্যাসে, প্রণামের ফুলপাতা
রেকাবির চাঁদ ...
নেশার ঘোরে আমরাই পুরোহিত হয়ে গেছি পাখিদের, প্রেমের ঘনত্ব তুলে আঞ্ছি পালকে,
পরম গ্রহে জড়িয়ে ধরেছি অক্সিজেন, একে অন্যকে চেখেছি নক্ষত্রের গিঁট খুলে ...
অথচ গিনিপিগের ABC লিখতে এখনো শিখিনি ...
৩
নদী আঁকাআকির পর মনে হয়, খসে পরা তারাদের
যত্নআত্তি করছে তিস্তা তোর্সা, বুকউঁচু ঘুঙুর, মূর্ত হলো ভ্রমণ ... একতারায় নদী
বাঁধতে গিয়ে আরও বেশি করে জড়িয়ে পড়েছি
নদীতেই ... বাচ্চাকাচ্চা সমেত তরঙ্গ এমনভাবে হাঁটুতে মুখ ঘষে যেন কমলালেবুর থেকে
বড় আর কোনো মহাশূন্য নেই ... আধকাপ আকাশ যতদিন না মুড়ে নিচ্ছে পালকের নদী, তাই তো
গাছের থাম থেকে দৌড়ে গেল অন্ধকার ...
জোয়ার কমিয়ে ফেলার পর রঙবেরঙ বন্যার ঘড়াটি
ঘরেই রইল আমাদের ... মুখের পালকি পাশ ফিরলে গোটা দুপুর বিক্রি করে দিই খরার দামে,
জল তো আর মৃতসঞ্জীবনী নয় যে ঝর্ণা থেকে
সোজা চোখে উঠে আসবে ...
ভেতর ভাসিয়ে দেবে তিন মহল্লার জল্পেশ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন