শনিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৫

দেবযানী কর সিন্‌হা

নিনাদ

স্মৃতির আধপোড়া বিবর্ণ শব্দগুলো
দগ্ধ করল হেমন্তের খড়কুটো
ফিরতি বছর ঘর বাঁধার ইচ্ছে ছিল নদীর পাশের জমিতে
কত কড়ি জমা আছে সিন্দুকের নিস্তব্ধতায়
ঝোলানো ব্যাগে একটি মাত্র অক্ষর দেখা যায়
মৌনতা ভেঙে জল পেল আধারের শূন্যতা
সিক্ত হতে দিতে শুনি স্মৃতির চকিত নিনাদ।


উৎসব

দেখতে দেখতে অনেক দূরে সরে গেল মেঘ
আবছায়া দিন কোনো দাগ রেখে যায়নি
শুকনো পাতাদের জৌলুস কেড়ে নিল অমানিশা।
আজ চাঁদের একাদশী, সে মুখ দেখাবে না,
আঁকা বাঁকা পথ চেয়েছি নিজের ছন্দে
মিশে থাকে শূচি আশ্বাস চলাচল প্রক্রিয়ায়
এও এক বিচিত্র আবেদন, ঝুমুর-বাউল কোলাজ
মেঠো আবেদন সহ্য করে জ্যোৎস্না কোজাগরীর বোনেরা
তুমি যদি চুম্বন কর, আলিঙ্গন কর
আবার আসব উৎসবে আমরা।


মন্ত্র

আস্তে আস্তে গভীরে ডুবে যাচ্ছি
আতঙ্ক শব্দটাকে দেখতে পাচ্ছি না
একের পর এক জলের পর্দা ঢেকে দিয়ে যায়
নিমেষের ভেতর তোমাদের মতোন আমারও জলজপ্রাণ
বাগিচায় উড়ে বেড়ানো পলাতকা, এখানে মেঘ
জমে না, কুয়াশার মতো ঘোর অনেক বিড়ম্বনা
স্থির, সমাহিত বাতাস যেন যোগসিদ্ধ বৃদ্ধ
অন্তর্গত লুকোনো হিমশৈল ছুঁতে কঁকিয়ে উঠি না
তবু যেন শিরায় শিরায় প্যালেস্তানীয় ভোর
ডুবতে ডুবতে যেভাবে হোক খোঁজো বাঁচার মন্ত্র।


আলেয়াধৌত

দ্যাখো আমরা কেমন গুটলি পাকিয়ে শুয়ে আছি
আকাশ ডুবেছে ব্যঙ্গরসে
সভ্যতার কাছে নতজানু হব কবে?
বর্ষা হাততালি দিতে দিতে নেমে আসছে
অমুক ভালো, তমুক ভালো না, অন্যত্র বাড়াই হাত
যানবাহনের মতোন চারপেয়ে জাত
আধুনিকতার স্তন ছুঁয়ে দেখাই আদিম গর্ভগৃহ
জলের অন্তিম ঠিকানায় ঠিক তলিয়ে যাব
কল্পনায় অ্যাসট্রোনট হয়ে মহাকাশ দেখব
রাতের পলকা শরীরে রত্নখচিত ভোরাইশিল্প
ভাবনাগুলো যেন আমন্ত্রণ না পেলে যায় না কোথাও
সৃষ্টিকারকের বিনোদনে আমরা চিরকাল আলেয়াধৌত।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন