কাল্পনিকে নষ্ট তুলসীগাছ
মঞ্চ জুড়ে তুলসীপাতা -- মঞ্জরীরা হাসছে। প্রদীপ জ্বলছে... ও
এখনো ছোঁয়া পায়নি সে জাতীয়। ভালোবাসাই জানত। পিঁপড়ে -- একটা
কাঠপিঁপড়ে মাটির মধ্যে এলো, বীরূৎ বলে
মূলের কাছে বসল – বলল, আমার ছোট শরীর, নিচু গালিচার ছেঁড়া ছিদ্রে থাকি। তোমার মাথার ওপরে ঘট --
জল দেবে আমায়? তোমার মাটির মধ্যে প্রদীপ
জ্বলে কেমন! আমায় আলো দেবে একটু -- আমার পিতা মাতা খাদ্যজন্ম গেছে চুকে-বুকে। তোমার ‘নারায়ণ’ আছে। তোমায় দিয়ে তাঁর পুজো
হয়। কিন্তু তুমি তো
স্ত্রী প্রত্যয়! ছোঁও কেমনে শিলা?
--ছুঁই না তো, আত্মারা ছোঁয় -- ও পাথর নারীর সঙ্গভেদী
সঙ্গকামী প্রেমসুখের শিলা -- ওকে বুঝে নিতে হয়।
চন্দনেরা তোমার জন্য ঠিক। তোমার গায়ে লাগলে কেমন
শুদ্ধ শুদ্ধ লাগে। আমায় তোমার পাতার ঘর দেবে?
--এসো, পাতা পড়ুক তোমার গায়ে... কী বা আসে যায় তাতে!
তোমার মঞ্চ কত সুন্দর, আমায় মানায় না যে এখানে... তুমি
দেব-দেবতার গায়ের। আমি কাঠপিঁপড়ে -- ঘিরে রাখব তোমায়।
--ঘিরে রেখো না আমায়, জগৎ জানে ‘রক্ষকই ভক্ষক’। তুমি বন্ধু হয়েই থেকো। তোমার যাপন বড় লাগে। কষ্ট হলে এসো, জল নিও,
আলো নিও, পাতায় রেখো ঘাম।
ও তুলসী তোমার চন্দন একটু দেবে? আমার গন্ধ লাগে নাকে,
ভীষণ!
--নিও, কিন্তু খেলো না তাকে নিয়ে, ও তো পুজোর কাজে
লাগে--
তুলসী তোমায় ভালো লাগছে ভীষণ। ভীষণ করে চাই!
--গণ, গোত্র না মিশলে আগুন ধরে যায়... জন্মক্ষণে মা
বলেছে। ভিন্ন জাতি খাঁটি নয় -- কলমের জন্ম দেয়।
তুলসী তোমার কাণ্ডরা কী নরম! সবাই তোমায় চায়। আমি তোমায় নিয়ে স্বপ্নে
জুড়ে গেছি। পারব না আর তোমায় ছাড়া। যদি অন্য কারও হও,
কাণ্ডে ছিদ্র করে দেব। পাতার শরীর ঝোপ বলব তোমার। তুমি উপাচারে লাগবে না
আর। মঞ্চ জুড়ে আমিই
থাকব শুধু -- আমিই নেব বীরূৎ রস।
--দেখাও তবে খেলা! জন্ম থেকেই পুজোর কাজে লাগি যারা আমার
সত্যি পরিপোষক, তারা আমায় বিনা বিচারেই চিনবে। ভালোই হলো, জানো এবার
দ্রাঘিমা জুড়ে কাঁটাতার খেলবে। স্বদেশ চিনে নেব...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন