ফারাহ সাঈদ
বেতফল
দরজা ফেরত একটি ঘুম
সারাদিন ক্যাফেতে
ফিনফিনে চায়ের কাপে
এক হেমন্ত পাপ
কিউব ডুবিয়ে লিকার
তাদের কোরাস।
ওরা গুছিয়ে নিচ্ছে ঝুলবারান্দা
একটি নিশ্চিত ভুল
আধময়লা চাদরের ভাঁজে
সোহাগী বেতফল।
পোস্টমর্টেম
ওরা খুব যত্ন করে
তোমার হৃৎপিন্ডে
কাঁটাচামচ বসিয়ে দিচ্ছে
যেন সকালের নাস্তায় তরমুজ
ফোঁটা ফোঁটা আলপনা
এ্যপ্রোনে রক্তের দাগ
অথচ লাল তোমাকে মানায় না
রাস্তা ওপারে আমি
আইল্যান্ডে বৃষ্টি হচ্ছিল
মনিটরে আমি দেখতে পেয়েছিলাম
আমাদের বিরামচিহৃ, বিচ্ছেদগাথা
তখন মেডিনোভায়
রকমারি সেলাই হচ্ছিল তোমার
হাত-পা-নখ উপড়ে ফেলে
নতুন কাঠের নিঁখুত খোদাই
ওরা শিস বাজাচ্ছে অবিরাম
ওরা শিস বাজাচ্ছে নির্মম
তোমার বার্নিশ করা নাভি
একটি ফ্রেমে বাঁধাই করে রাখব ভাবছি!
দৃশ্যত ব্লেডটিকে খুঁটিয়ে দেখছি
এখানে সৌখিন আরোহণ বলে আর কিছু নেইসবটুকুই প্রাচীর
অভ্যেস পেরিয়ে ওপাশ যাওয়া।
তাই ক’দিন ধরে ভাবছি
একটি ব্লেডের সঙ্গে পালিয়ে যাব।
পুরনো দেওয়ালকে জিজ্ঞেস করলাম
ঝুলে থাকা কার্নিশকেও
কেউ বাধা দেয়নি।
সিল্কমতো হালকা অথচ ধারালো এই ধাতু
আলগোছে কোথাও গুঁজে নেব
দৃশ্যত ব্লেডটিকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছি
কিছু যতিচিহ্ন রেখে
অবচেতন ত্বকে এঁকে নিচ্ছি কালশিটে দাগ
কল্পনায় শুষে নেওয়া রক্তবিন্দু
ব্লটিংপেপারে জবাফুলের ঘ্রাণ ঢেলে
অন্য কোথাযও নিয়ে যাচ্ছে ব্লেড
দৃশ্যত এমন কিছুই ভাবছি আমি।
সাইকেল
ফিরে এসো
থ্যাবড়ানো সাইকেলটা দেখে মনে হলো আমারও জীবন ছিল তুমুল। আর একগোছা চুল একদিন হাতল খুলে ফেলে। সেই কবেকার বিলিকাটা দুপুর। গল্প হচ্ছিল নিজের সঙ্গে। ঝলমলে বারান্দায় রোদের স্তুপ রেখেই গিয়েছিলাম। ফিরে এসে খুঁজে তো পেলাম না। বৃষ্টির ভেতর মনের ভেতর ঘূর্ণিঝড়। মেরামত শেখেনি বলে জং ধরা সাইকেল আমার। ক্ষয়ে যাওয়া পথ! নিদেনপক্ষে বৃষ্টির দিনে ফিরে এসো পথ! আমার চাকা। পোকামাকড়ের সঙ্গ। সাইকেল কী আর জানে ওড়নার
অসুখ!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন