সাধন চট্টোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক উপন্যাস ‘পানিহাটা’
একজন লেখক তাঁর সময় ও সমকালের ইতিহাস গ্রথিত করেন। সময়ের
প্রবল আগ্রাসনে কিছু টিকে থাকে, আর কিছু হারিয়ে যায় মহাকালের গ্রাসে। এর মাঝামাঝি
লেখকের যাত্রাপথ। সাধন চট্টোপাধ্যায় দীর্ঘ প্রায় পাঁচ দশক ধরে সাহিত্য সাধনা করে
আসছেন। বাণিজ্যিক পত্রিকায় না লিখলেও তাঁর লেখার পরিমাণ নেহাত কম নয়। এক ডজনের ওপর
উপন্যাস, তিনশোটিরও বেশি ছোটগল্প এবং শতাধিক
প্রবন্ধ তিনি উপহার দিয়েছেন তাঁর মননশীল পাঠক-পাঠিকাদের।
‘চতুষ্কোণ’ পত্রিকায় প্রকাশিত তাঁর
প্রথম উপন্যাস ‘অগ্নিদদ্ধ’, যা খাদ্য আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রচিত।
এর পর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অনেকগুলি উপন্যাস প্রকাশিত
হবার পর ২০১৪তে আমরা পেলাম এক অসামান্য উপন্যাস ‘পানিহাটা’। চৈতন্যদেবের পানিহাটায় আগমন ও সেই সূত্রে পানিহাটার পাঁচশ
বছরের ইতিহাস দধীচি গাঙ্গুলির মনের অবচেতনে ফুটিয়ে তুলে একটি নিটোল কাহিনীবৃত্ত তৈরি হয়েছে। কোনো উপন্যাস লেখা এবং তার লেখা ইতিহাসের মধ্যে
দুস্তর একটা কালের ব্যবধান ঘটে যায়। এই ফারাকটুকুর মধ্যেই ঘটে আমিত্বের রূপান্তর।
সাধন চট্টোপাধ্যায় এক জায়গায় মন্তব্য করেছিলেন, “দক্ষ মালাকার তিনিই,
যার মালা গাঁথায় বাইরে থেকে সুতোটা দেখা যাবে না। কিন্তু সুতো
ছাড়া কি মালা হয়? ...সুতোটি নানা অভিজ্ঞতায় পূর্বেই মাথায় পাকানো
থাকে”। এই ব্যাপারটি স্পষ্ট হয়ে
উঠেছে তাঁর বিভিন্ন উপন্যাসে।
দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে লিখিত ‘পানিহাটা’ উপন্যাস শুরু হয়েছে
দধীচি গাঙ্গুলির ইজি চেয়ারে বিশ্রাম নেওয়ার মধ্য দিয়ে। তিনি এই উপন্যাসের প্রধান চরিত্র। flash bach পদ্ধতি
বারে বারে তিনি ফিরে গেছেন অতীত স্মৃতিচারণায়। মফস্বল পানিহাটার ছায়ার ঘোমটা খুলে নগর হয়ে ওঠার
কাহিনী এই উপন্যাসে বর্ণিত হয়েছে। সামনে ঝোলানো ক্যালেণ্ডার দেখে দধীচি গাঙ্গুলির মনে
পড়ে, পাঁচশ বছর আগে বুধবার ঐ তারিখে কিছু পারিষদ নিয়ে মহাপ্রভু বজরা থেকে
পানিহাটায় অবতরণ করেছিলেন। টেলিফোনের আওয়াজে দধীচি গাঙ্গুলি বাস্তবে ফিরে আসেন এবং
রামপ্রসাদের মাধ্যমে তাঁর দাদা জ্যোতিপ্রসাদের মৃত্যুর সংবাদ শোনেন। তাঁর মনে পড়ে, পাঁচশ বছর আগে একই দিনে ১৫১৪ খ্রীঃ কী এক গোপন অস্থির
টানে রামকেলির উদ্দেশ্যে চৈতন্যদেব হাজির হয়েছিলেন গঙ্গাতীরস্থ বটবৃক্ষের তলায়
যেখানে পরবর্তী কালে শ্রীরামকৃষ্ণদেবও এসেছিলেন। মাত্র দেড় মিনিটের মতো ফোনে কথা বলার
প্রসঙ্গে তিনি হারিয়ে যেতে থাকেন বিস্মৃতির অতলে। এজন্যই বোধহয় বলা হয়, পৃথিবীতে আলোর
চেয়েও দ্রুতগামী মানুষের
মন। ফোনে কথা হতে হতেই তাঁর মন পাঁচশ বছর আগে ও পরের অতীত বর্তমানে ঘোরাফেরা করে। দধীচি
গাঙ্গুলি ও জ্যোতিপ্রকাশ একই স্কুলের ছাত্র, স্মৃতিচারণায় স্বভাবতই উঠে এসেছে চৈতন্যদেবের বিভিন্ন
প্রসঙ্গ।
দধীচি গাঙ্গুলির অতীত মগ্ন চৈতন্যের মধ্য দিয়ে উঠে এসেছে
বিভিন্ন প্রসঙ্গ। অতীত বনাম বর্তমানের বিভিন্ন দ্বন্দ্ব নতুন রূপে নতুন আঙ্গিকে।
এই প্রসঙ্গে তিনি সমাজ জীবনের বিভিন্ন প্রান্তকে ছুঁয়ে গেছেন। “উল্কা ছাই হয়ে গেলে
উল্কা থাকে না - পাথরে পরিণত হয়
যেমন, মফফ্সল তাপাঙ্ক ছাড়িয়ে শহর হলে আর মফফ্সলের চরিত্রে ফিরতে পারে না।” বাঙালির সমাজ জীবনের
বিভিন্ন পরিবর্তন ঔপন্যাসিকের তীব্র পর্যবেক্ষণে ধরা পড়েছে।
বর্তমানে অধিকাংশ বাড়িতে জোরে জোরে পড়ার রেওয়াজ হারিয়ে গেছে। আগেকার দিনে পাড়ার
গুরুজনেরা এই বিষয়টি ধরিয়ে দিলে তা গৃহস্বামীর পক্ষে ছিল লজ্জাকর এবং নিন্দনীয়।
অন্যদিকে অনুষ্ঠান বাড়িতে পরিবেশনের ক্ষেত্রে পাড়ার যুবকবৃন্দদের একটা আলাদা
উত্তেজনা থাকত। কিন্তু বর্তমানে সুদৃশ্য ক্যাটারারদের সুশৃঙ্খলার চাপে সেই
উন্মাদনা ইঁটচাপা হলুদ ঘাসের মতো হয়ে গেছে। গ্রামের চরিত্র বদলে গিয়ে শহরের রূপ
নেওয়ায় ভয়ের সংজ্ঞারও বদল ঘটে গেছে। আগেকার সেই গা-ছমছমে ভয়ের
নস্টালজিক অনুভূতি এখন আর নেই বললেই চলে। আগে
মনোরঞ্জনের একমাত্র উপায় ছিল রেডিও। এখন রেডিওর যুগ হারিয়ে গেছে। পায়ে হাঁটার
পরিবর্তে মানুষ এখন বিভিন্ন যানবাহনের উপরই বেশি নির্ভরশীল। ‘তবে পুরনো দিনের সবটাই সু নয়’। পুরনো
দিনে গুরুজনদের সামনে গালিগালাজ দেবার প্রবণতা ছিল না, কিন্তু শব্দ
নিয়ে শুচিবাইগ্রস্ততা সমাজজীবন থেকে হঠাৎ করেই কর্পূরের মতো উবে গেল। অশ্লীল
খিস্তির পাশাপাশি এলো শব্দের সংক্ষিপ্তকরণ। গুরুজনদের সম্বোধন এবং ছেলে-মেয়ের
নামকরনের ক্ষেত্রেও ফ্যাশনে ট্রেণ্ড এলো। যেমন দিদা>দিদাই। নাম - এলিজা, লি
প্রভৃতি। পরিবেশগত দিক থেকেও আবহাওয়ায় এক বিরাট পরিবর্তন ঘটে গেছে। গ্লোবাল
ওয়ার্মিং-এর প্রভাবে জনজীবন বিধ্বস্ত।
দধীচি গাঙ্গুলির তিন ছেলে সুমন, দেবল, সুপ্রকাশ এবং মেয়ে দোলা ও জামাই সমর। যৌথভাবে কারখানার মালিকানা বড় ও মেজছেলের। ছোটছেলে সুপ্রকাশ চাকরি করে তথ্যপ্রযুক্তির বহুজাতিক
সংস্থায়। মাসে এক লাখ বিশ হাজার টাকা মাইনে হলেও ভীষণ যান্ত্রিক
তার জীবন। পনের-কুড়ি দিনের জন্য বাড়ি এলে কমন কিচেনের
ব্যবস্থা হয়। কিন্তু বড়বউ ও মেজবউ-এর আপোষ হীন মনোভাবে
সেই বন্দোবস্ত টিকতে পারে না। দেবল ও ডলির কন্যা বু অটিজমে আক্রান্ত। এহেন স্পেশাল চাইল্ডের বাবা ও মা-এর মানসিক যন্ত্রণা, বু-এর স্বাভাবিক নারীত্বের
বিকাশ এবং শিশুর মতো মনের অসম সমীকরণ প্রভৃতি
সব কিছুই খুব নিপুণ ভাবে এবং সযত্নে অঙ্কন করেছেন ঔপন্যাসিক।
দধীচি গাঙ্গুলির পরিবারের সূত্রপাত ধরে পানিহাটার পূর্ব
ইতিহাস সম্পর্কে একটি সম্যক ধারণা লাভ করা যায়। প্রাচীন কালে পানিহাটায় প্রবাদ ছিল
‘রাস-তাস-লাঠিলাঠা- তিন নিয়ে পানিহাটা’। তাঁর বাবা রমণীমোহন গাঙ্গুলিদের সময়কালে
বিপ্লব ও বিপ্লবীদের প্রসঙ্গ যেমন এসেছে তেমনি এসেছে ৬৬ সালের খাদ্য আন্দোলনের
কথাও। কমিউনিস্টদের
মার্ক্সীয় ভাবধারার পাশাপাশি চিটফাণ্ড প্রসঙ্গও
ধরা পড়েছে ঔপন্যাসিকের
দৃষ্টিভঙ্গিতে। এখানে যে ‘পুরনো কলকাতার রাস্তা’ আছে সেই রাস্তা ধরেই নাকি
বাংলার নবাব সিরাজদ্দৌলা কলকাতা গিয়েছিলেন ইংরেজদের দুর্গ ভেঙ্গে দিতে। গান্ধিজি
কলকাতা এলে এই পানিহাটাতেই থাকতেন। সে সব দিনের সংগ্রাম ও ইতিহাস আজ লুপ্ত।
পানিহাটায় বিভিন্ন পাড়ার মাঝে ফাঁকা জায়গায় নির্জন এলাকায় ঘর ও শনের চালের আখড়া
থাকত, যা বৈষ্ণব নেড়ানেড়িদের সাধনার স্থান। গুহ্য সাধনার নামে তারা নানাবিধ যৌনাচার করত। কৃষ্ণনাম
কানে দিয়ে শ্রীচৈতন্য তাদের উদ্ধার করেন।
উপন্যাসে এসেছে আধ্ম্যাতিক ভাবনা। সেই সূত্রে কয়েকটি
পরিচ্ছদের শিরোনাম দেওয়া হয়েছে। বৈষ্ণবদের কৃষ্ণ নামের মাহাত্ম্য, মধুর রসে
ভজনা, সখিভাবে ভজনা প্রমুখ এসেছে। তারা ছিল প্রবজ্যা ও গৃহী এই দুই ভাগে বিভক্ত। তৎকালীন
সমাজ ব্যবস্থায় বিয়েতে ভাংচি দেওয়ার প্রথা যেমন ছিল, তেমনি কিছু পরিবারে
মরণাপন্ন মানুষকে ঘাট মার্ডার করা হতো। এই ঘাট মার্ডারের বিস্তারিত বর্ণনা
উপন্যাসে আছে।
দধীচি গাঙ্গুলির বড় ছেলে দেবলের বিয়ের কথা পাকা করে ফেরার
পথে তাঁর স্ত্রী কল্যাণী দেবীর আকস্মিক পথদুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়। সকলে ডলিকে অপয়া
ভাবলে অবশেষে দধীচি ও কল্যাণীর দাদা পরমেশবাবুর হস্তক্ষেপে দেবল ও ডলির বিয়ে হয়।
কিন্তু কল্যাণী দেবীর অকাল মৃত্যু দধীচিকে ভীষণ ভাবে দেহগত, মনোগত ও আত্মিকগত
নিঃসঙ্গ করে তোলে। নিজেকে কষ্ট দিয়ে তিনি ভুলে থকতে চান তাঁর স্ত্রীর সমস্ত স্মৃতি - “জীবনের বিশেষ
পরিস্থিতিতে কৃচ্ছসাধন মনকে রিলিফ দেয়”।
এই উপন্যাসে এসেছে বেশ কিছু প্রধান ও অপ্রধান চরিত্র। শাশুড়ী মারা যাওয়ার সন্ধিলগ্নে
ডলি এ বাড়িতে বউ হয়ে এলেও সে সহজ সরল। মেয়ের জন্য সর্বদা সে আতঙ্কিত এবং মরমে মরে থাকে। মেজবউ মীরা ভীষণ চালাক ও অত্যন্ত কূটবুদ্ধি সম্পন্ন এক নারী চরিত্র। তার মা সুনন্দা দেবীর মধ্যে ফুটে উঠেছে আধুনিক নারীর
উগ্র সাজপোষাক এবং অবদমিত যৌনতার বিকৃত রূপ। এই দুই বউ-এর তুলনায় শকুন্তলা অনেক বেশি আত্মকেন্দ্রিক। প্রবাসী বাঙালি হওয়ায় সে কিছুতেই
এই একান্নবর্তী পরিবারের
সঙ্গে নিজেকে মিলিয়ে দিতে পারে না, বরং
কিছুটা একাকীত্বেই সে ভোগে। পরিবার ভাগের আইনি জটিলতা থেকে পালাতে চেয়ে সুপ্রকাশ
যায় তার পুরনো বন্ধুদের কাছে। কর্পোরেট সেক্টরে চাকরি করলেও বিদেশে সে স্থায়ী
ভাবে থাকতে চায় না। ফিরে আসতে চায় শেকড়ের টানে। সারা বাড়িতে আধুনিক সাজসরঞ্জামের স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যবস্থা
সেই করেছে। বড় ও ছোট দুই ভাইয়ের মধ্যে মনোমালিন্য থাকলেও ছোটভাইকে দুই দাদাই খুব ভালোবাসে
এবং তারা এই ভাইটির একান্ত অনুগত।
দধীচির নিঃসঙ্গতা পীড়িত করে সুপ্রকাশকে। তাই সে চিন্তা করে
তার বাবা রাজী হলে সমস্ত রকম সামাজিক ট্যাবু ভেঙ্গে আধুনিক জীবনে নৈতিকতার দাবিতে
সে সায় দেবে বাবার লিভটুগেদারে। ডলি অন্তঃসত্ত্বা হলে দধীচি তার বৌদি অনুপমা
দেবীকে বাড়িতে নিয়ে আসে যদিও তাদের সঙ্গে সেইভাবে কোনো সম্পর্ক ছিল না এই পরিবারের। ইতিমধ্যে
তাঁর বাড়িতে ভাইপো প্রদোষের উপস্থিতি দধীচির মনে সম্পত্তি ভাগের আশংকা তৈরি করে। সব কিছুর ফাঁকে বারে বারেই তিনি স্মৃতিমেদুর
হয়ে ওঠেন-“মানুষের লম্বা জীবনটা বড্ড বিচিত্র! নিরর্থক আর অনিত্য!... মোহের কাজলটুকু খসতে
খসতেই আয়ু ফুরোয়।”
এই উপন্যাসে সব থেকে উল্লেখযোগ্য হলো দধীচি চরিত্র। তিনি
ছিলেন রেলের নামকরা ইঞ্জিনিয়ার।
সারাজীবন রক্ষণশীলতাকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে গিয়ে জীবনকে উপভোগ করার আনন্দ থেকে তিনি
বঞ্চিত। সেটা যখন উপলব্ধিতে
আসে তখন জীবনের ক্যানভাসের রং বদলে যায়, সবুজ পাতা বিবর্ণ হয়ে যায়। আধুনিকতার
সব কিছুই তো খারাপ নয়।
রুচির সঙ্গে ব্যক্তিত্বের মেলবন্ধন না ঘটতেই পারে, কিন্তু তাতে রসের
হানি অন্তত ঘটে না – “জীবনের বিচিত্র
দাবির সব কিছুকেই কল্পিত জীবনদর্শন দেখিয়ে
ছেঁটে ফেলার কোনো মানে হয় না”। আত্মমুখীনতা মানুষকে আরো বেশি একাকীত্বের
সম্মুখীন করে তুললেও বহির্মুখী মানুষের অস্তিত্বের সংকটে সে ভোগে না। “প্রবল ও উগ্র ইগো
মানুষকে উপলব্ধি করতে দেয় না”। সব মিলিয়ে তাঁর রক্তের মধ্যে বিপন্নতা কাজ করতে থাকে --
“স্বপ্ন নয়, শান্তি
নয়, ভালোবাসা নয়,
হৃদয়ের মাঝে এক বোধ জন্ম লয়”
উপন্যাসের শেষ অংশে এসেছে চৈতন্যদেবের প্রসঙ্গ, যে দু’দিন তিনি পানিহাটায়
তাঁর প্রিয় শিষ্য রাঘবের
বাড়িতে এসেছিলেন। তার বিস্তারিত কাহিনী ও মাহাত্ম্য বর্ণনা
করা হয়েছে।
অবশেষে দধীচি গাঙ্গুলির যৌথ পরিবারে ভাঙ্গনের চিত্র দেখা
যায়। সংসারের ঘড়িও যেন
ব্যাটারির অভাবে বন্ধ হয়ে যেতে বসে। দেবলদের বড়মামা পরমেশবাবুর মৃত্যুতে বাড়ির
বউদের যাবার আর্জি দধীচি নাকচ করে দিলে বউদের পুরুষতান্ত্রিক সমাজের প্রতি
বিদ্রোহের চিত্র ফুটে ওঠে। শ্মশানে গিয়ে মৃত্যুর বৈরাগ্য ও চৈতন্যদেবের কীর্তন
শুরুর মধ্য দিয়ে উপন্যাস শেষ হয়।
জীবনকে অস্বীকার করে নয়,
স্বীকার করেই সাধন চট্টোপাধ্যায় ‘পানিহাটা’র বাতাবরণ সৃষ্টি করেছেন, তার মাঝে
স্থাপন করেছেন দধীচির জীবনপ্রবাহ ও অতীতচারণার স্মৃতি। চৈতন্যদেবকে উপাদান রূপে
গ্রহণ করে উপন্যাস রচনা বাংলা সাহিত্যে স্বল্পমাত্রায় হয়েছে। সেইদিক থেকে ঔপন্যাসিক চৈতন্যদেবের
সঙ্গে পানিহাটার পাঁচশ বছরের ইতিহাসকে অপূর্ব মুন্সিয়ানার সঙ্গে মিলিয়ে দিয়ে বিশিষ্ট
ভাবদৃষ্টি ও মনোবিশ্লেষণী শক্তির পরিচয় দিয়েছেন।
মননশীল এই উপন্যাস সাহিত্যের সর্বস্তরের পাঠকের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। আমরা আশা করব ভবিষ্যতে
আরো হৃদয়গ্রাহী উপন্যাস উপহার দিয়ে তিনি বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করবেন।
উপন্যাস - পানিহাটা
লেখক - সাধন চট্টোপাধ্যায়
প্রথম
প্রকাশ - জানুয়ারি ২০১৪
প্রকাশক - বামাচরণ মুখোপাধ্যায়, করুণা প্রকাশনী, কলকাতা
মূল্য - ২০০ টাকা
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন