বুধবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৪

১৬) দেবপ্রিয়া চট্টোপাধ্যায়



দেবপ্রিয়া চট্টোপাধ্যায়

আত্মকথন

আজ এগিয়ে চলেছি
আমার ‘স্বর্গরথে’
পেছনে ওরা ছিটিয়ে দিয়েছে
স্মৃতির খই রাস্তাময়
সাদা দানার জীবনাবশেষ।
সঙ্গে চলেছে চন্দন, সাদাকাপড়
অগরুর গন্ধ, গোরের মালা-
তোমাদের এক-দু ফোঁটা জলে
ভেজেনি আমার স্থির মণিময়
নিথর হৃদয়-
অভিমান কি ছিল কিছু?
অপমানের রামচিমটি-
ভুলে গেছি সব।
প্রশ্নোত্তরের খাতাটা
ওরা কিলো দরে বেচে দেবে
অনেক ভুল হয়ে যাওয়া গল্প
আর সব উত্তরের সমীকরণ-
দিনের সঞ্চয় যা ছিল
হারিয়েছি আজ রাত মোহানায়
আজ চোদ্দশো ফারেনহাইটে
জ্বলতে জ্বলতে
বড় অকেজো মনে হচ্ছে
বিগত জীবনটাকে।


ত্রিভূজ

দুটি বিন্দু জুড়ে আর একটি সরলরেখায় গড়েছি ত্রিভূজ
ঈষৎ বক্র, ত্রিমাত্রিক জ্যামিতির হিসেবে; প্রেমহীন
শরীর, প্লবতা, প্রাণহীন মৃত্যুর গহ্বর, সর্পিল ছায়াপথ;
পদ্মফুল, লতাগুল্ম বর্তুলাকার জাইগোটের চলন-
তারপর লালসুতো হাতময় বাঁধা, একসাথে ভীষণ জটিল
পাটীগণিতের সূত্র, কৃষ্ণগহ্বরে দেখা একটি মুখ
বারবার রিঙ বাজা টেলিফোন, আত্মজিজ্ঞাসা-
আবার নিচ্ছিদ্র অন্ধকারে নিজের মুখের প্রতিচ্ছবি,
অস্থির দুটি হাত কাকে ছোঁবে জানে না...
একজন শুচিস্মিতা, অন্যজন লাস্যময়ী
ফেরানো যায় না কাকেই - অবগাহন অনিবার্য।


দম্পতি

প্রতীতিতে ঘুণধরা বিবর্ণ যাপন
দাম্পত্যের শুকনো অবয়ব
পড়ে থাকে আজীবনের স্বপ্ন
অভিশংসন-
অপাঙ্গেও দেখোনি কতদিন
ঐ ভাঙ্গা মুখ, ক্লান্ত হাসি
তার চেয়ে যান্ত্রিকতার স্বপ্নে
বিভোর ভারচুয়াল রিয়ালিটির জগৎ
কত বেশি কমদামী;
আর কত বেশি দামী হলে
জিনে নেওয়া যেত সমস্ত শর্তের পূর্বশর্ত
যা কিনা ধ্রুবকের মতো
অসহ্য-স্থির অথবা শান্ত নিরুত্তর-
অনেকটা অপাঙক্তেয় অনাহুতের
মতো ছেঁড়া কাঠামো
ওঠে পড়ে, নিত্যকার ছন্দে
তবুও নিরুত্তর প্রশ্নেরা
আগামীতে আশা রাখে।






কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন