আসমা অধরা
তাঁর চারুলতা ও প্রয়াণ জিজ্ঞাসা
(১)
উদ্বেলতা যদিও সহজ হয় না কখনো,
তিমিরে সাতটি তারা
জ্বলেনি তখনো।
আশাতুর প্রাণে যেন দ্বিধান্বিত মন,
একলা আকাশে তারাদের নিশ্চুপ রোদন।
বল্গাহীন ঘোড়ার পিঠে সওয়ার আঁধার,
নিখোঁজ চাঁদের আলোর দেখা নেই আর।
শিয়রে চেপে থাকে স্তুপ স্মৃতিকথা,
তবুও বুকের মাঝে বিষ, শ্বাসে ব্যথা।
সে এলেই নিভে যায় ঘোর গহন চাঁদ,
হয় না দেখা তার মুখে
খেলে যাওয়া রাত।
তবুও আজ জোছনা জড়িও আঙ্গুলে তোমার
যে আঙ্গুলে বেজেই চলে জীবন সেতার।
(২)
টেরাকোটা নিঃশব্দে দাগ কেটে চলে মাইলে,
ধুলোয় গড়াগড়ি হৃদয়ে ঘন্টা বাজায় মেঘ
আর দু' ঠোঁটের উপর তর্জনী চেপে বসে দৃঢ়তায়;
দুঃখ আর কষ্টের মাঝে ব্যবধান কি জানো?
রক্তের সাথে শিমুলের ফুল যায়?
ঘৃণার সাথে বিতৃষ্ণা মেশায় কেন?
মন সমুদ্দুর দক্ষিণে কেন ধায়?
(৩)
নিবিড়ে নিস্তব্ধ স্বাগতা নীলিমার নিচে
বয়ে যাওয়া মাস দিন ক্ষণ পলে পলে;
ক্ষয়ে ক্ষয়ে যাওয়া সময়ে এখনো কেমন
ছেঁড়া বটের পাতায় লিখে ভাসিয়ে দেওয়া
নামখানি বারবার ফিরে আসে কূলে।
বয়ে যাওয়া দিনের পর দিনে
সময়ও কেমন ক্ষমাহীন হয় ওঠে।
তবুও গতির আহ্নিকে বার্ষিকে
স্হবির হয়েই থাকে রাত্রির নিয়তি;
দহনে দাহনে আরো বিস্তীর্ণ হয় পৃথিবী,
বিজ্ঞান হিসেবের ক্রমশঃ
চুপসে যাওয়া ভুলে।
প্রজাপতির রোদ মাখা হুটোপুটি গায়
পিছলে যাওয়া আলোয়, আঁধার হারায়
তবুও প্রণয় কেন প্রয়াণ যে হয়?
ধুসর হলুদ আলো খুঁজে নেয় সূর্যগ্রহণ;
পৃথিবীর হৃদয় চিরে দেখ একবার সহস্র সাধনায়
আপন প্রেম নিঃশেষে, মানবেরই ধরেছে তুলে।
(৪)
যত্ন করে তুলে রাখব না অনুভব
শ্বাস ফেলতে না পারা কাজের ক্ষণ
কৃষ্ণচূড়ার দল ফাঁস নিয়ে
মরে যাক
কারো নেই ফুরসতে চেয়ে থাকার মন
আমার বিষণ্ন মনে নষ্ট স্পষ্ট পলে
দূরে থাকা স্বজন তবুও
কষ্ট কথা বলে
আবছায়া কমলকান্তি সৌম্য দর্শন
নিশ্চিন্ত অধিকারে সমস্ত হৃদয় অর্পণ
তবুও সে জন বোঝে নাই,
সেই একশ' আট বিঘা বুকের জমিনে
তার জন্যই কৃষ্ণচূড়ার ব্যাপক রোপন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন