সুমন্ত চট্টোপাধ্যায়
দিয়েত্রিচ (চার)
এ জার্মানী যেন দুঃস্বপ্নের জরাজীর্ণ নরক,
হাত বাড়ালেই জরিষ্ণু হাড়গোড়
বাতাসে মৃত্যুপথযাত্রী কারোর নাভিশ্বাস
ধুঁকছে বার্লিন অলিতে-গলিতে মড়ক,
সবার শরীরে এক নিথর বিবর্ণতা,
দুটো নীল চোখ ব্যাখ্যা চায় নিজের কাছে
ফার্নেসের পাশে আরামকেদারায় চুপচাপ;
বহুকাল মৃতা মায়ের ছবির পাশে,
শো-কেসভর্তি অজস্র পুরস্কার সাজিয়ে
রেখে গেছে প্রাণপ্রিয় ছোটভাই,
লেখনীর কদর সব এসে এখানে,
মার্টিনের শেষ নিঃশ্বাস যুদ্ধের মাটিতে,
কয়েক মাস আগে হার্ট অ্যাটাকে বাবাও…!
এখানে জীবনের সব রসদ ফুরিয়ে গেছে,
কেবল ন্যাশনাল সোস্যালিজমের পথসভার শেষে
অজানা রোষে পুড়ন্ত রাইখস্ট্যাগ,
দিয়েত্রিচ প্রথমে সমর্থন করলেও
নারকীয় ইহুদীনিধন মেনে নিতে পারেনি।
নভেম্বরের সেই রাতেই গেস্টাপো’র দল
হামলে পড়েছিল দিয়েত্রিচের বাড়িতে,
তন্নতন্ন করে তল্লাশি চালাল ওরা,
কিন্তু যাকে খুঁজছিল, না পেয়ে ফিরে গেল;
ভোররাতে গুদামঘরের আঁধার থেকে অবিশ্বাস্য
এক ইহুদী মহিলা - অজানা আতঙ্কের দেশ,
পরনে ছাইরঙা স্কার্ট আর কাঁধছেঁড়া জ্যাকেট,
রক্তহীন ফ্যাকাসে গলায় জেরবার যীশুখ্রিষ্ট;
দিয়েত্রিচের আন্তরিকতায় সে কিছুটা সহজ
হলেও ধূসর ভয় এড়াতে পারল না,
গোঙানির তীব্রতা চেপে রেখে ধীর গতিতে
সে বলে গেল তার নাম আদিনা ড্র্যাকম্যান,
বাবা ছিল বার্লিনে সুদের কারবারী,
গেস্টাপো’রা মেরে ফেলেছে ওর দুই মেয়েকে,
স্বামীকে পাঠিয়েছে ডাকাউ-এর কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে,
এক সময়ের 'হাসকালাহ' বার্লিন আজ নরক,
একের পর এক ইহুদী দোকান বাড়ি
সিন্যাগগ্ পুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছে,
ঘেটোগুলোতে শুধু আর্তনাদ আর আর্তনাদ,
ওয়েইমার রিপাবলিকের দিনগুলো স্বপ্নের ছিল।
আদিনাকে আশ্রয় দিল দিয়েত্রিচ,
ভাবলো ওকে বিয়ে করে সুরক্ষার কথা।
অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই দুজন নিঃস্ব
একে অপরকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চাইল
আবার নতুন করে… সব ভুলে গিয়ে…
কিন্তু এক রাতে গেস্টাপো’রা দরজা ভেঙে
দিয়েত্রিচের ঘরে ঢুকল অতর্কিতে,
দিয়েত্রিচের চিৎকার চাপা পড়ল
লুগারের অনবরত গুলিবর্ষণে আর
ছিটেফোঁটা রক্তের তাজা গন্ধে।
সব চুরমার হয়ে গেছিল সব মলিন
চিহ্নের মাঝে আরামকেদারায় বসে,
অনুভবে লাতিন আমেরিকার হাতছানি,
সেখানে দিদি ইসাবেলার সুখী সংসার-
এ জীবন যে থেমে থাকার নয়
শুধু মাঝে অতল নীল জলরাশি
ঝলমল করতে থাকে দুটো নীল চোখে…
এ জার্মানী যেন দুঃস্বপ্নের জরাজীর্ণ নরক,
হাত বাড়ালেই জরিষ্ণু হাড়গোড়
বাতাসে মৃত্যুপথযাত্রী কারোর নাভিশ্বাস
ধুঁকছে বার্লিন অলিতে-গলিতে মড়ক,
সবার শরীরে এক নিথর বিবর্ণতা,
দুটো নীল চোখ ব্যাখ্যা চায় নিজের কাছে
ফার্নেসের পাশে আরামকেদারায় চুপচাপ;
বহুকাল মৃতা মায়ের ছবির পাশে,
শো-কেসভর্তি অজস্র পুরস্কার সাজিয়ে
রেখে গেছে প্রাণপ্রিয় ছোটভাই,
লেখনীর কদর সব এসে এখানে,
মার্টিনের শেষ নিঃশ্বাস যুদ্ধের মাটিতে,
কয়েক মাস আগে হার্ট অ্যাটাকে বাবাও…!
এখানে জীবনের সব রসদ ফুরিয়ে গেছে,
কেবল ন্যাশনাল সোস্যালিজমের পথসভার শেষে
অজানা রোষে পুড়ন্ত রাইখস্ট্যাগ,
দিয়েত্রিচ প্রথমে সমর্থন করলেও
নারকীয় ইহুদীনিধন মেনে নিতে পারেনি।
নভেম্বরের সেই রাতেই গেস্টাপো’র দল
হামলে পড়েছিল দিয়েত্রিচের বাড়িতে,
তন্নতন্ন করে তল্লাশি চালাল ওরা,
কিন্তু যাকে খুঁজছিল, না পেয়ে ফিরে গেল;
ভোররাতে গুদামঘরের আঁধার থেকে অবিশ্বাস্য
এক ইহুদী মহিলা - অজানা আতঙ্কের দেশ,
পরনে ছাইরঙা স্কার্ট আর কাঁধছেঁড়া জ্যাকেট,
রক্তহীন ফ্যাকাসে গলায় জেরবার যীশুখ্রিষ্ট;
দিয়েত্রিচের আন্তরিকতায় সে কিছুটা সহজ
হলেও ধূসর ভয় এড়াতে পারল না,
গোঙানির তীব্রতা চেপে রেখে ধীর গতিতে
সে বলে গেল তার নাম আদিনা ড্র্যাকম্যান,
বাবা ছিল বার্লিনে সুদের কারবারী,
গেস্টাপো’রা মেরে ফেলেছে ওর দুই মেয়েকে,
স্বামীকে পাঠিয়েছে ডাকাউ-এর কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে,
এক সময়ের 'হাসকালাহ' বার্লিন আজ নরক,
একের পর এক ইহুদী দোকান বাড়ি
সিন্যাগগ্ পুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছে,
ঘেটোগুলোতে শুধু আর্তনাদ আর আর্তনাদ,
ওয়েইমার রিপাবলিকের দিনগুলো স্বপ্নের ছিল।
আদিনাকে আশ্রয় দিল দিয়েত্রিচ,
ভাবলো ওকে বিয়ে করে সুরক্ষার কথা।
অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই দুজন নিঃস্ব
একে অপরকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চাইল
আবার নতুন করে… সব ভুলে গিয়ে…
কিন্তু এক রাতে গেস্টাপো’রা দরজা ভেঙে
দিয়েত্রিচের ঘরে ঢুকল অতর্কিতে,
দিয়েত্রিচের চিৎকার চাপা পড়ল
লুগারের অনবরত গুলিবর্ষণে আর
ছিটেফোঁটা রক্তের তাজা গন্ধে।
সব চুরমার হয়ে গেছিল সব মলিন
চিহ্নের মাঝে আরামকেদারায় বসে,
অনুভবে লাতিন আমেরিকার হাতছানি,
সেখানে দিদি ইসাবেলার সুখী সংসার-
এ জীবন যে থেমে থাকার নয়
শুধু মাঝে অতল নীল জলরাশি
ঝলমল করতে থাকে দুটো নীল চোখে…
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন