ইকবাল রাশেদীন
আগুনের নারী
প্রতিমা পুজার সময় আগুন নিয়ে আমি খেলছিলাম
মুখের কেরোসিন মশালে ছুড়ে আগুনের গোলা বানাচ্ছিলাম
আরতি করছিলাম আগুনকে বুকে পিঠে নিয়ে,
কখনো কখনো আগুনের দু’একটি গোলা এসে পড়ছিল
আমার হাতে পায়ে সর্বাঙ্গে, তখন আমার ব্যাঘ্রের শক্তি
তুমুল নেশা পেশীতে - রন্ধ্রে রন্ধ্রে আগুনের তাপ।
সবাই বিমোহিত হয়ে দেখছিল, বাহবা দিচ্ছিল,
জনতার মধ্যে অন্ধকারে বসে
তুমিও বিমুগ্ধ হয়ে সেই খেলা দেখছিলে।
আগুন আমার কাছে জল, জলের আগুন নারী তোমাকে
অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে আজও ছুঁতে পারিনি।
ছাপচিত্র
গতরাতে আসর ভেঙ্গে যাবার পর
ছড়িয়ে ছিটিয়ে শুয়েছিলাম আমরা-
সোফার উপর, ফ্লোরে, খাটের উপর
আড়াআড়ি, বিচ্ছিন্ন, এলোমেলো;
দু’একজন সারাক্ষণ নেড়িকুত্তার মতো
কেঁউ কেঁউ করে শেষে লেজ গুটিয়ে
পুঁচকে শেয়ালের মতো বাড়ি ফিরেছিল।
এখন এই করুণ সকালের গুমোট কামরায়
বৃদ্ধ ফ্যান দুলছে; ইতঃস্তত মাছি, পিঁপড়ে
জিনের খালি বোতল বেমানান দাঁড়িচিহ্ন
বেসিনে, কমোডে, শরীরে - বাসি দুর্গন্ধ
পেয়াজ কুঁচি, চানাচুর, খালি প্লেট, হাড়গোড়
আধ খাওয়া সিগারেট, পোড়া দেয়াশলাই কাঠি
পড়ে আছে - আমাদের বিষণ্ন জীবনের মতো।
কামসূত্র-১
সাইকেল চালাতে পারো? সাঁতার?
মারপিট করে শার্টের বোতাম ছিঁড়েছ বুঝি?
পাহাড় বাইতে পারো? নাও?
জমি তো চষতে জানো, জানি
আষাঢ়ে বৃষ্টির আগে
বলো পুরুষ, জমিতে কী বুনেছো তুমি?
সাইকেল চালাতে পারো? সাঁতার?
মারপিট করে শার্টের বোতাম ছিঁড়েছ বুঝি?
পাহাড় বাইতে পারো? নাও?
জমি তো চষতে জানো, জানি
আষাঢ়ে বৃষ্টির আগে
বলো পুরুষ, জমিতে কী বুনেছো তুমি?
মায়াজাল নিমজ্জিত কোবিদ,
কোন্ খেলা সবচেয়ে ভালো পারো-
শুধু সেইটুকু একবার শুনি?
কোন্ খেলা সবচেয়ে ভালো পারো-
শুধু সেইটুকু একবার শুনি?
কামসূত্র-২
তোমার হাত, হাতের আঙ্গুল আমার দিকে
এগিয়ে আসছে ধীরে, ধীরলয়ে;
খুলে ফেলছে শরীরের সমস্ত আবরণ, অন্তর্বাস;
জড়িয়ে ধরছে গ্রীবা, আষ্টেপৃষ্ঠে বাহুডোর;
খেলা করছে মুখমণ্ডল, চুল, নাসারন্ধ্র
কানের লতিকা, স্তনবৃন্ত ইত্যাদি
যা কিছু আমার সম্পদ – সব, সর্বস্ব নিয়ে।
বই পড়লে এভাবেই পড়বে – পুরুষ,
একাগ্র পাঠকের কাছে তাই প্রত্যাশা আমার।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন