বুধবার, ৩০ জুলাই, ২০১৪

০৭) ইন্দ্রনীল বক্সী



ইন্দ্রনীল বক্সী

একান্ত
সেরকম তো নয় যে আমি শুধু বলে যাব
তুমি শুনবে
শৈশবের গল্পে কিছু ভেজানো দরজা থাকে
তুমি জানো  সেসব অনায়াস নয়

শান্ত কেমন তোলা উনুনের কয়লাধোঁয়া
জমে থাক ফাল্গুণী বিকেল
তুমি বরং অন্য কোনোদিন এসো দোলের অজুহাতে
শবনম থাকবে না
সামুরাও


অন্তরাকাশ ১

ঠিক নয় এমন একটা সময়
            -এই ধরো বিকেলের দিকে
             সূক্ষ্ম সুতোদের বুনে চলা নিপুতায়
             যশস্বী, মার্জিত, বিলাসের অক্ষ-দ্রাঘিমাংসের
             নিকটবর্তী আলো আঁধারির মাঝে
             নিশ্চিত কয়েকটা মুখ আমি দেখতে পাই,
হতেও পারে যুদ্ধের পরে মেদবৃদ্ধি হবে কিংবা দুর্ভিক্ষ!
             সহ্যসীমার আনুমানিক মাত্রাজ্ঞান আমার নেই
             আছে শুধু হাহুতাশ বুকে ইর্ষা, অসম্ভব লোভী
             জাগতিক শরীর–
             তুলনায় ভেদাভেদ নেই আমার চলমান মানুষজনে
             একই সময়ে একই মৌলিক নির্মাণে
             সমস্ত যৌগযন্ত্র
পিনহারাও হতে পারে এমন যন্ত্রণারা কেমন
              নিশ্চিন্ত করে আবর্তের
              এই অস্তিত্বের নিত্য মৃদু অনুভূতির,
              এদিকে বেগুনি রশ্মির বিভাজনে দেহ ও মন
              শরীর ও শারীর
      অলক্ষে আলোকিত হয়ে থাকে
      আপাতনিরীহ বনজ সমাবেশ
      গাছেদের, গুল্মদের গন্ধে জেগে থাকে
      অনন্ত যাপনের মৌলিক ইতিকথা।


অন্তরাকাশ ২

কখনো ভাবিনি সারি সারি শুভ্রতার
                   পথ আলো করা স্বর্ণপাখিরা কেমন,
                   সূক্ষ্ম, অতিসূক্ষ্ম, ক্ষুদ্র – অতিক্ষুদ্র
                   জীবেদের প্রকোষ্ঠে প্রকোষ্ঠে লুকিয়ে
                   আরও কিছু নির্মারত শহর,
                   সন্ধ্যা নামার মুহূর্তে একবুক পাখি নিয়ে
                   কলোল্লিনী ঘরে ফেরা সেই আশ্চর্য ভূমির
                   নিরিবিলি লোকালয়

                কখনও ভাবিনি এভাবে এসে দাঁড়াতে হবে
                অনন্ত আলোয়... শুভ্রতায় শুভ্রতায় ক্ষীণ হবে
                অস্তিত্ব ক্রমাগত...
                ভ্রাতৃত্বের মতোই উঠে দাঁড়াবে আমারই সমকালীন
      সমস্ত ঝড়–জল– বায়ু, উসমুখে প্রবল হবে সহস্র উদগীরণ-
     হে শহরবালক, মুঠোয় নিয়েছো যেসব যথেচ্ছ ধুলিকণা
                       কখনো আগুন ছুঁয়েছে বিষণ্নতায়
                       কখনো জলে ধুয়ে গেছে সমস্ত আমার আমি,
                       মদিরতার প্রবাল প্রলেপ
                     

                                     কেন রেখেছো আমায় ধ্বনিহীন
               আবর্তের ঘুর্ণনে অস্থির
               কেনই বা শুধু বাঁচিয়ে তুলেছ
               চারাগাছের চিকন ভিড়                                                                    
               নিজেরই আশ্রয়ে ঘুমিয়ে পড়েছি দেখো
               কেউ ছোঁবে না, কেউ জানবে না
               স্থাপত্যের ভিড়ে ঢাকা পড়ে থাকবে
               বালখিল্যের নির্মল উল্লাস

                   এও এক মোহ – জানি
                   শুধুই নির্জনতার সুযোগসন্ধান



প্রাতঃকালীন  
                                       
১.
পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি
শুকনো পাতাদের ভিড়ে আমার মুখ পড়ে আছে
অজস্র   
শিকারে নেমেছে ঝোলাকাঁধে নুব্জ কুড়ানীরা  
গেঁথে গেঁথে শিকে তুলে নিচ্ছে
আমার নাশিত গ্রীষ্ম হাওয়ামহলের
পালক ডানার আমিষ

২.
কপালের টিক টিক ঘড়ি থেকে নেমে চলেছে শব্দবাজির চমকে দেওয়া সুলভ অকারণ পুড়ে যাওয়া, এখন কি সময় হবে, সবাই উঠে পড়েছে জান্‌ এখুনি ব্যস্ত হবে সকাল  সকাল খেলায়, সামান্য গ্রীল কেমন ভাগ করেছে রাস্তার ম্যাপ ত্রিভূজে ত্রিভূজে, সামান্য  মাটি সেও দেখি ত্রিভূজে আটকে প্রিয় puzzel-র মতো টুকরো, দেখি ভিজে বাসস্ট্যান্ড  যেখানে পরীদের গল্প বলা দিদিমণিরা দাঁড়ায়  


৩.
এগুলো বোধহয় এই বয়সের দোষ

সব বয়সের যেমন কিছু কিছু...
সকাল তো প্রতিদিন হয়
কিছু কিছু দিন কেন যেন ঠিক মতো
বিকেল আসে না



                                       
             




         
 
         



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন