মোনালিসা চট্টোপাধ্যায়
সন্তানের মা
অমাবস্যার গভীরে যাব, অন্ধকার খুঁড়তে
চন্ডালের হাতে মুন্ডু হয়ে কালিকে দেখাব আমি তার সন্তানের মা৷
গলন্ত মোমের ব্যথা হয়ে আলোরা অঝোর হিমে
জন্ম দেব ভরাট হেমম্ত এক দিন...
মেয়ে হলে নাম দেব জবা, ছেলে হলে কুর্নিশ৷
কুমকুম রাতবেশে আমাকে কাজল করো-
শ্যামনীল পদ্মে দেখি জয়শঙ্খে আজ ধ্যানমগ্ন কালশুদ্ধি...
মানুষের মুন্ডুমালা পরে আছে দেবী, দেখ দেবীকেই সাজিয়েছে দ্বিভুজ মানুষ৷
দীপ্তবহ্নি শিখা দীনহীন আজ, তবু সব আলো আজ নদীমাতৃক নবীন৷
উত্তেজিত যত শব্দ নিশি ও গৈরিক মহাকাল
চন্ডী তুমি কার আভিশাপে মানুষ কাটলে বলো?
ছিন্ন যত মস্তক বশ্যতা দীপশলাকায় দীপ্ত দেখ৷
মহাদেবের প্রশস্ত বুকে পা রেখে দাঁড়াব দেবী হয়ে
অন্ধকারের বিষাদ কালো সেই দেহে কালিকে চেনাবো
তিলে তিলে তিলোত্তমা কীভাবে হলাম আমি!
অমাবস্যার গভীরে যাব, অন্ধকার খুঁড়তে
চন্ডালের হাতে মুন্ডু হয়ে কালিকে দেখাব আমি তার সন্তানের মা৷
গলন্ত মোমের ব্যথা হয়ে আলোরা অঝোর হিমে
জন্ম দেব ভরাট হেমম্ত এক দিন...
মেয়ে হলে নাম দেব জবা, ছেলে হলে কুর্নিশ৷
কুমকুম রাতবেশে আমাকে কাজল করো-
শ্যামনীল পদ্মে দেখি জয়শঙ্খে আজ ধ্যানমগ্ন কালশুদ্ধি...
মানুষের মুন্ডুমালা পরে আছে দেবী, দেখ দেবীকেই সাজিয়েছে দ্বিভুজ মানুষ৷
দীপ্তবহ্নি শিখা দীনহীন আজ, তবু সব আলো আজ নদীমাতৃক নবীন৷
উত্তেজিত যত শব্দ নিশি ও গৈরিক মহাকাল
চন্ডী তুমি কার আভিশাপে মানুষ কাটলে বলো?
ছিন্ন যত মস্তক বশ্যতা দীপশলাকায় দীপ্ত দেখ৷
মহাদেবের প্রশস্ত বুকে পা রেখে দাঁড়াব দেবী হয়ে
অন্ধকারের বিষাদ কালো সেই দেহে কালিকে চেনাবো
তিলে তিলে তিলোত্তমা কীভাবে হলাম আমি!
কাঠকয়লা
আগুনে পুড়েছি অজ্ঞ অবাধ্য জীবাশ্ম হয়ে
অকীর্তি কৌশলে তুমি পুড়িয়েছ অনুভব
নিরূপিত প্রাণদন্ড শেষে খলবাজ অগ্নিও খনিজ বৃক্ষে ছটফট করে৷
শুষ্ক বাতাসে আকাঙ্ক্ষা সব পোড়ে, দুচোখে অঙ্গার মাখি
এসব জেনেও অগ্নি খলখল নিরাকার,
ভয়াল সাপের সাড়া বুঝিনি নিষ্ঠুর এত!
গরবী গরুড় পাখিটির ছায়া শুধু জলেই গাঁথানো তীর
চেয়ে চেয়ে দেখি এক জন্ম আরেক জন্মের দিকে-
প্রাণহারা যত ইচ্ছে সব আগুনে উপনিবেশ গড়ে খেয়ালিয়া অগ্নি--
ডুবডুব শ্বাসকষ্টে আজ কার করসেবা পেতে তোর এই জন্মকাহিনী?
সুখ
তুমিও খুঁজেছ মিথ্যে কত অটল অজ্ঞাতবাস!
অচলিত ছবি দেখে মরীচিকা এঁকেছি পাতায় পদ্মে
অপরিমিত ইচ্ছে থেকে সন্ন্যাস ও ভ্রম ছুঁয়ে গড়েছি নকল স্বরগ্রাম৷
আলোকে রেখেছি বেঁধে ললাটলিখনে
জলকে রেখেছি বেঁধে জলাশয়ে বলশালী তরঙ্গ বিদ্যুতে
সময়কে বেঁধেছি কত কাঁটা ও কম্পাসে
পা’কে বুঝিয়েছি পরিভ্রমণ মহাকাশে
তোমাকে বলেছি মুছে ফেল দিবাস্বপ্ন সব
কিছু না ভেবে গঙ্গাকে গগনস্পর্শী করে মাটির কম্পাসে কেন
সুখবৃত্ত এঁকে চলো আনমনে? এতে কি আলাপ জমে গানে?
উত্তরাধিকার
জলের অলীক ছায়া মৎস্যকন্যার গায়ে--
একটি চাঁদের হাসি গলানো মোমের মুখে অবসর আনে৷
অসত্য অপদেবতার হাসি বাজে শূন্যে,
মগ্ন এক নদীতল জুড়ে ঢেউ এলে, মেঘরাগে সরিয়েছি জল৷
কন্যাটি আলস্য মনে ছায়া ধরে রাখে জলে ও নূপুরে
অবহেলা জুড়ে নক্ষত্রলোকের সুখজল স্রোত জন্মজন্মান্তর৷
জলে চাঁদ সাঁতরায় জন্মভূমি উত্তরাধিকার চায়,
সেই আকাঙ্ক্ষায় মাছে গাঁথা তীর কত কী করেছে ভুল!
পশমে বুনেছি কত খেলাঘর...
ডানা মেলে পালিয়েছি তারাদ্বীপে পাখির মতোন--
রাতরাঙা হলে আমার ছায়াকে আমি ভাসিয়েছি জলে
তবু কেন অর্থহীন বর্ষা নামে মৎস্যকন্যার গায়ে?
আলো কি জলের কোনো উত্তরপুরুষ?
চাঁদ চেনে রৌদ্রকণার ব্যথা জুড়ে জলের তৃ্ষ্ণা ও গোঙানি
তাই শুক্লপক্ষেই মৎস্যকন্যাটি নামে জলে, জলেই ভাসবে তার সুখ জলমুখ৷
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন