অনেক কিছুই থেকে যাবে অপ্রকাশিত
আমি দূরে দাঁড়িয়ে ওদের ঝগড়া দেখি। পাখি ও প্রত্যূষের ঝগড়া। বন ও বাদামের ঝগড়া। ঘর ও গন্তব্যের ঝগড়া। কিছু পাপড়ি ভেসে যাচ্ছে নদীতে। গঙ্গাস্নানে এসেছে যেসব রমণী, তারা স্পর্শ করতে চাইছে সেই পাপড়ির রঙ। জন্মদাগ বুকে নিয়ে এই দেশ ত্যাগ করে কিছু মেঘ উড়ে যাচ্ছে অন্য দেশে। ওরাও ঝগড়া করছে আকাশের সাথে। বলছে - যাবার আগে আমরাও পদছাপ রেখে যেতে চাই। আমি পুনরায় সংরক্ষিত ছাপবিজ্ঞান থেকে এই ছাপরহস্যটুকু তালাশ করি। কেন সব কিছুই প্রকাশিত হবে, কিংবা কেন সকল প্রশ্নই খুঁজে পাবে উত্তর - এমন ভাবনাবীজে আমি অংকুরিত হই। অনেক কিছুই থেকে যাবে অপ্রকাশিত, বলে যে প্রাক্তন প্রেমিকা আমাকে নিশ্চয়তা দিয়েছিল, তার কথা মনে পড়ে। জমাট বরফে শাবল চালাতে চালাতে পেছন ফিরে দেখি, ভাঙনের চিহ্নগুলো তৈরি করেছে বেশ কিছু জাগৃতির ম্যুরাল।
আবহাওয়া অধিদফতরের অভিভাষণ
দুপুরের পর বৃষ্টি থামতে পারে। উত্তর আকাশে আবারও উঁকি দিতে পারে সূর্য। এমন সংবাদ শোনার পর বৃষ্টির প্রতি বেড়ে যায় আমার দরদ। আজ সকালে ভিজেছি বেশ। ছাতাহীন পাতাদের শরীর থেকে চুঁইয়ে পড়ছিল যে জল, তার দিকে তাকিয়ে আঁকছিলাম জলেশ্বরীর ডানাহীন স্কেচ। বড় ভালোবাসতাম তাকে। উড়তে পারতো না জেনেও তাকে ডাকতাম উড়াল পঙ্খি। সেকথা এখন বিগত ইতিহাস। মাঝে মাঝে অতীত এভাবেই আমাদের পেছন দরজায় দাঁড়িয়ে উঁকি দেয় সূর্যের মতোই। আবহাওয়া অধিদফতরের অভিভাষণ শুনে আমরা জেনে যাই, বসন্ত বিদায় নিচ্ছে। আসছে গ্রীষ্ম। কালবৈশাখির ছোবল উড়িয়ে নিতে পারে খড়ের বৃদ্ধাঙ্গুলি, মধ্যমা, কনিষ্ঠা। তারপরও তর্জনী উঁচিয়ে বেঁচে থাকবে বৃক্ষ, থামবে ঝড় - এই প্রেমপরিধানে আমরা বার বারই করি ঋতুমালা বদল।
আর কিছু প্রস্থানদৃশ্যের পদছাপ
রোদের রক্তিম রঙে ভিজে যায় বুকের পশম। গায়ে জ্বর নেই, তবু দেখি থার্মোমিটারের পারদ উঠানামা করছে অহরহ। ধমনি ও শিরা কখনও পালন করছে না কার্যকর ভূমিকা। এক সময় প্রাত্যহিক প্রেমতালিকার অনেক কিছুই অকার্যকর হয়ে পড়ে। স্মৃতি-মোহ-মায়া, ছড়ানো পালকের মতো বিছিন্ন পড়ে থাকে মহাসড়কে। পথচারী যায় - দেখে কিছু বিবর্ণ রঙের ছটা লেগে আছে। কারিগর উধাও হয়েছে অনেক আগেই। পড়ে আছে রঙের কৌটো। ফ্যাকাশে তুলি-ব্রাশ। আর কিছু প্রস্থানদৃশ্যের পদছাপ। রাধিকার ঘোর লাগা চোখে, কৃষ্ণের সাতপাক। বাঁশি হাতে ঘাটে ফিরে আসা। লিখিত নয় অনেক কিছুই তবু কাঁপনের ভোর, আমাকেও দাঁড় করায় সূর্যের মুখোমুখি। জলে, ফিরতে চাই আমিও।
বয়স বিষয়ক বারিকণা
মেঘের বয়স কতো? কিংবা আকাশের? জিজ্ঞাসা করতে করতে তুমি আমার হাতে তুলে দিলে কয়েকবিন্দু শিশির। আমি সেই বারিকণার দিকে তাকিয়ে দেখতে চাইলাম তারাও ভোরের বয়স অতিক্রম করেছে কী না! অথবা আমার মতো ওরাও খুব গোপনে পেরিয়ে গেছে কী না পঞ্চাশ বছর! আমার কাছে একান্ন শব্দটিকে বেশ পুষ্ট মনে হয়। একান্নবর্তী পরিবার, কিংবা একান্ন'টি কাব্যকুঁড়ি - সবই আলোর ফোয়ারা হয়ে সংকেত দেয় বেঁচে থাকার। যে বাঁচা শুধুই প্রেমের আকর হয়ে বোনে স্বপ্ন। যে আঙুল শুধুই কামজ আহ্বানে এই মাটিকে টানে কাছে। লুটিয়ে পড়তে চায় উত্তাল নদীবক্ষে। আমি অনেক আগেই শনাক্ত করেছি এইসব নদীদের বয়স। তাই ফাল্গুনের কৃষ্ণচূড়াকে খুব সহজেই বলে দিতে পারি - তুমি লাল রঙে আবার আলপনা আঁকো। হে বৃক্ষ, আমি পুনরায় দর্শক হতে চাই।
নিকটবর্তী সমুদ্রের সফটওয়্যার
দুষ্ট হাওয়া উড়িয়ে নেয় আমার মাথার টুপি। হ্যাটস অফ কুর্ণিশ জানাতে চেয়েছিলাম যে সমুদ্রকে - সেও ফিরিয়ে নেয় মুখ। আমার সঞ্চয় থেকে ফুরিয়ে গেছে সকল ভরসা, সেকথা ভেবে প্রজাপতিগুলো উড়ে যায় আমাকে ছেড়ে। একসময় কালি, কলম আর কাগজ দিয়ে যে কবিতা লিখতাম, তাও হয়ে যায় আমার কাছে খুব অপরিচিত। তবে কী আমি ভাষাবৈষ্ণব হয়ে একাকী বেরিয়ে যাবো নগরে! তবে কী আমার হাড়ের নিদর্শন স্বরূপ আর কোনো হার্ডওয়্যারই দেবে না সাক্ষী! ভেবে এই হিমাংক প্রদেশেও ঘর্মাক্ত হই। তুমি আমার মুখ মুছিয়ে দেবার জন্য হাত ধরো। মনে হয়, তোমার প্রণীত প্রেমও তরল হয়ে
আমাকে আঁকড়ে ধরছে। আর আমি কেবলই খুঁজছি নিকটবর্তী সমুদ্রের আরেকটি সফটওয়্যার।
আমি দূরে দাঁড়িয়ে ওদের ঝগড়া দেখি। পাখি ও প্রত্যূষের ঝগড়া। বন ও বাদামের ঝগড়া। ঘর ও গন্তব্যের ঝগড়া। কিছু পাপড়ি ভেসে যাচ্ছে নদীতে। গঙ্গাস্নানে এসেছে যেসব রমণী, তারা স্পর্শ করতে চাইছে সেই পাপড়ির রঙ। জন্মদাগ বুকে নিয়ে এই দেশ ত্যাগ করে কিছু মেঘ উড়ে যাচ্ছে অন্য দেশে। ওরাও ঝগড়া করছে আকাশের সাথে। বলছে - যাবার আগে আমরাও পদছাপ রেখে যেতে চাই। আমি পুনরায় সংরক্ষিত ছাপবিজ্ঞান থেকে এই ছাপরহস্যটুকু তালাশ করি। কেন সব কিছুই প্রকাশিত হবে, কিংবা কেন সকল প্রশ্নই খুঁজে পাবে উত্তর - এমন ভাবনাবীজে আমি অংকুরিত হই। অনেক কিছুই থেকে যাবে অপ্রকাশিত, বলে যে প্রাক্তন প্রেমিকা আমাকে নিশ্চয়তা দিয়েছিল, তার কথা মনে পড়ে। জমাট বরফে শাবল চালাতে চালাতে পেছন ফিরে দেখি, ভাঙনের চিহ্নগুলো তৈরি করেছে বেশ কিছু জাগৃতির ম্যুরাল।
আবহাওয়া অধিদফতরের অভিভাষণ
দুপুরের পর বৃষ্টি থামতে পারে। উত্তর আকাশে আবারও উঁকি দিতে পারে সূর্য। এমন সংবাদ শোনার পর বৃষ্টির প্রতি বেড়ে যায় আমার দরদ। আজ সকালে ভিজেছি বেশ। ছাতাহীন পাতাদের শরীর থেকে চুঁইয়ে পড়ছিল যে জল, তার দিকে তাকিয়ে আঁকছিলাম জলেশ্বরীর ডানাহীন স্কেচ। বড় ভালোবাসতাম তাকে। উড়তে পারতো না জেনেও তাকে ডাকতাম উড়াল পঙ্খি। সেকথা এখন বিগত ইতিহাস। মাঝে মাঝে অতীত এভাবেই আমাদের পেছন দরজায় দাঁড়িয়ে উঁকি দেয় সূর্যের মতোই। আবহাওয়া অধিদফতরের অভিভাষণ শুনে আমরা জেনে যাই, বসন্ত বিদায় নিচ্ছে। আসছে গ্রীষ্ম। কালবৈশাখির ছোবল উড়িয়ে নিতে পারে খড়ের বৃদ্ধাঙ্গুলি, মধ্যমা, কনিষ্ঠা। তারপরও তর্জনী উঁচিয়ে বেঁচে থাকবে বৃক্ষ, থামবে ঝড় - এই প্রেমপরিধানে আমরা বার বারই করি ঋতুমালা বদল।
আর কিছু প্রস্থানদৃশ্যের পদছাপ
রোদের রক্তিম রঙে ভিজে যায় বুকের পশম। গায়ে জ্বর নেই, তবু দেখি থার্মোমিটারের পারদ উঠানামা করছে অহরহ। ধমনি ও শিরা কখনও পালন করছে না কার্যকর ভূমিকা। এক সময় প্রাত্যহিক প্রেমতালিকার অনেক কিছুই অকার্যকর হয়ে পড়ে। স্মৃতি-মোহ-মায়া, ছড়ানো পালকের মতো বিছিন্ন পড়ে থাকে মহাসড়কে। পথচারী যায় - দেখে কিছু বিবর্ণ রঙের ছটা লেগে আছে। কারিগর উধাও হয়েছে অনেক আগেই। পড়ে আছে রঙের কৌটো। ফ্যাকাশে তুলি-ব্রাশ। আর কিছু প্রস্থানদৃশ্যের পদছাপ। রাধিকার ঘোর লাগা চোখে, কৃষ্ণের সাতপাক। বাঁশি হাতে ঘাটে ফিরে আসা। লিখিত নয় অনেক কিছুই তবু কাঁপনের ভোর, আমাকেও দাঁড় করায় সূর্যের মুখোমুখি। জলে, ফিরতে চাই আমিও।
বয়স বিষয়ক বারিকণা
মেঘের বয়স কতো? কিংবা আকাশের? জিজ্ঞাসা করতে করতে তুমি আমার হাতে তুলে দিলে কয়েকবিন্দু শিশির। আমি সেই বারিকণার দিকে তাকিয়ে দেখতে চাইলাম তারাও ভোরের বয়স অতিক্রম করেছে কী না! অথবা আমার মতো ওরাও খুব গোপনে পেরিয়ে গেছে কী না পঞ্চাশ বছর! আমার কাছে একান্ন শব্দটিকে বেশ পুষ্ট মনে হয়। একান্নবর্তী পরিবার, কিংবা একান্ন'টি কাব্যকুঁড়ি - সবই আলোর ফোয়ারা হয়ে সংকেত দেয় বেঁচে থাকার। যে বাঁচা শুধুই প্রেমের আকর হয়ে বোনে স্বপ্ন। যে আঙুল শুধুই কামজ আহ্বানে এই মাটিকে টানে কাছে। লুটিয়ে পড়তে চায় উত্তাল নদীবক্ষে। আমি অনেক আগেই শনাক্ত করেছি এইসব নদীদের বয়স। তাই ফাল্গুনের কৃষ্ণচূড়াকে খুব সহজেই বলে দিতে পারি - তুমি লাল রঙে আবার আলপনা আঁকো। হে বৃক্ষ, আমি পুনরায় দর্শক হতে চাই।
নিকটবর্তী সমুদ্রের সফটওয়্যার
দুষ্ট হাওয়া উড়িয়ে নেয় আমার মাথার টুপি। হ্যাটস অফ কুর্ণিশ জানাতে চেয়েছিলাম যে সমুদ্রকে - সেও ফিরিয়ে নেয় মুখ। আমার সঞ্চয় থেকে ফুরিয়ে গেছে সকল ভরসা, সেকথা ভেবে প্রজাপতিগুলো উড়ে যায় আমাকে ছেড়ে। একসময় কালি, কলম আর কাগজ দিয়ে যে কবিতা লিখতাম, তাও হয়ে যায় আমার কাছে খুব অপরিচিত। তবে কী আমি ভাষাবৈষ্ণব হয়ে একাকী বেরিয়ে যাবো নগরে! তবে কী আমার হাড়ের নিদর্শন স্বরূপ আর কোনো হার্ডওয়্যারই দেবে না সাক্ষী! ভেবে এই হিমাংক প্রদেশেও ঘর্মাক্ত হই। তুমি আমার মুখ মুছিয়ে দেবার জন্য হাত ধরো। মনে হয়, তোমার প্রণীত প্রেমও তরল হয়ে
আমাকে আঁকড়ে ধরছে। আর আমি কেবলই খুঁজছি নিকটবর্তী সমুদ্রের আরেকটি সফটওয়্যার।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন