শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

১৪) ইকবাল রাশেদীন


প্রিয় বর্ণমালা

ম্যাগ্নিফাইং গ্লাস দিয়ে তির্যক আলো ফেলে আমি কাগজটি পোড়াচ্ছিলাম।
আমার ভাবভঙ্গী ও আয়োজন দেখে একজন প্রশ্ন করলো-
তুমি তো ভয়ংকর মানুষ হে - মাছি মারতে কামান দাগছ?
দেশলাইয়ের একটা কাঠির ঘর্ষণেই তুমি এই কাজ করতে পারতে?

পারতাম। তাতে আমার মনের যন্ত্রণা একটুও লাঘব হতো না।
আমাকে যখন কেউ কোনো অজুহাত ছাড়াই
ইংরেজি বর্ণমালা দিয়ে অদ্ভুত বাংলায় কিছু লিখবে
তখনি আমি বাঁকা পথে তার প্রতিশোধ নেবো;
সে যেই হোক না কেন - প্রিয়তম কাঙ্ক্ষিত বা কেউ।

অনেক দামে কেনা প্রিয় ভাষার প্রতি
প্রিয় স্বরবর্ণ ও ব্যাঞ্জনবর্ণের প্রতি - এই আমার সশ্রদ্ধ সম্মান।
   


অভিমান

আঙুল রেখেছি হৃৎপিণ্ড বরাবর তোমার  
বরাবর মাননীয় অধিরাজ আষ্টেপৃষ্ঠে এইবার,  
খামবন্দী - প্রথমে স্টেপলার, তারপর স্বচ্ছ টেপ
গাম আঠা, রাবারে মোড়ানো সব;  
জাল ফেলেছি চতুর্দিকে সমস্ত কূটকৌশলে।

অফিস খোলবার আগেই পার্সোনাল ফাইল থেকে
চুরি করেছি সমস্ত তথ্য তোর;  
ক’দিন ছুটি কাটিয়েছিস, ক’দিন পাওনা
কবে তুই অদ্ভুত ছুটিতে যাবি কার সাথে...
কী কী আবেদন নিবেদন আছে গোপনতর?  

রাস্তার বাতির খবর রাখিস
কী করে চলে এই দেশ, অর্থনীতি, নিত্যকার বাজারের হালচাল,  
হলিউড - বলিউড, ঠিকা-ঝি সব!  
ভাবছি, এবার তোর হৃদয় থেকে আঙুলের চাপ
সরিয়ে নেব কিনা?


স্বাধীনতা

স্বাধীনতা মানে তোমার অধীনে নয়;
ভুলে গিয়ে থাকলে – সন্ধি বিচ্ছেদ করে দেখো,
যেমন - স্বায়ত্তশাসন মানে নিজের শাসন।
দেশলাই বাক্সের কাছে আগুন নিলে তা ফুঁসে ওঠে,   
মানে ফোঁস করে জ্বলে ওঠে - এটা স্বাধীনতা;
ঘর্ষণে ঘর্ষণে দেশলাইয়ের আগুন – আগুন, 
তবে - প্রশ্নবিদ্ধ আগুন।

সমবেত হচ্ছে জনতা।
ঘর থেকে, অফিস থেকে, বাস থেকে, 
পাঁচতারকা হোটেলের আলসেমি থেকে উঠে পড়লো হঠাৎ;

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াচ্ছিল শিক্ষক - কলেজে পড়ছিল ছাত্র,

সংসারের খুঁটিনাটি, যুগল প্রেমের ডাক – আজ থাক।

ইট ভাঁটার শ্রমিক, কারখানার শ্রমিক, নির্মাণশ্রমিক
সবার লক্ষ্য এক দিকেই;
স্বাধীনতা মানে - স্বাধীনতা,
স্বাধীনতা মানে তোমার অধীনে নয়বুঝে গেছে আজ!  


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন