(‘কালিমাটি’ পত্রিকার ৮৮ সংখ্যায় প্রকাশিত দীপক চট্টোপাধ্যায়ের গল্প)
(নাট্য-রূপান্তর : সুকোমল ঘোষ) (‘প্রয়োগ প্রয়াসী’ [জামশেদপুর] পরিবেশিত একটি শ্রুতিনাটক)
(চরিত্রঃ লাইজিরিয়ার প্রেসিডেন্ট- জেনারেল ওটাবো, লাইজিরিয়ার অর্থমন্ত্রী-ইগনাসিয়াস আগারবি, চেয়ারম্যান ‘গারবার এত্ সাই’ ব্যাঙ্ক -মিঃ মিশেল গারবার, অর্থমন্ত্রী’র আপ্ত সহায়ক-মিস মারিয়া, পানশালা’র চারজন, টি.ভি. ভাষ্যকার )
(১)
পানশালা
(পানরত লোকজন, এক কোণে টি.ভি. চলছে, ঘোষণা--)
“প্রেসিডেন্ট
জেনারেল ওটাবো, দেশের ভয়াবহ আর্থিক পরিস্থিতির সমীক্ষা করেন এবং এই পরিপ্রেক্ষিতে
তিনি বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ মিঃ ইগনাসিয়াস আগারবিকে লাইজিরিয়ার অর্থমন্ত্রী পদে
নিযুক্ত করেছেন। তাঁর কর্মভার এখন থেকেই প্রভাবী।
মিঃ আগারবি যোজনা
কমিশনে কর্মরত ছিলেন, দেশের অর্থনীতি ব্যপারে তিনি ওয়াকিবহাল, এবং কিছু কিছু
ক্ষেত্রে তাঁর মতামত যথেষ্ট সমাদৃত হয়েছে। তাঁর সততা সন্দেহ মুক্ত হলেও বর্তমান দুর্নীতি যেভাবে তার
জাল বিছিয়ে রেখেছে — তার মধ্যে তিনি অর্থনীতিকে কতখানি
সবল করে তুলতে পারবেন - সেটাই দেখার বিষয়।
দেশের আপামর জনগণ
এ প্রসঙ্গে কী ভাবছেন - তা জানতে আমরা এখন চলে যাব রাজধানীতে -- সেখানে অপেক্ষা করছেন আমাদের প্রতিনিধি মিস
তিরবাদে। মিস তিরবাদে... মিস তিরবাদে...
নাঃ, ওর সঙ্গে যোগাযোগ করা যাছে না... আমরা পরে কখনো যোগাযোগের চেষ্টা করবো...” (আস্তে
আস্তে ঘোষণা স্তিমিত হয়)
পানরত ১– কত হাতী গেল তল, মশা বলে কত
জল। গত সতেরো বছরে সতেরো বার অর্থমন্ত্রী বদল হলো, কী উন্নতি হয়েছে?
পানরত ৩- উন্নতিটা হবে কী
করে? যতই ভা্লো লোক আনো, ব্যবস্থা তো একই রয়ে
যাচ্ছে – খোল নলচে না পাল্টালে — কাজ হবে কোত্থেকে?
পানরত ২- না, আমি ঠিক
মানতে পারছি না। আগারবি কিন্তু শক্ত ধাতের মানুষ। তাকে সৎ বলেই জানি - এবং
জন-মানসে তার ভাবমূর্তি কিন্তু খারাপ না।
পানরত ৪- কে অস্বীকার করছে! সৎ
বলেই তো আশঙ্কা! তিনি ঠগ বাছতে আবার না গাঁ উজাড় করে ফেলেন!
পানরত ৩- কিন্তু খোল নলচে তো
পাল্টানো দরকার। সিস্টেম দুরুস্ত না হলে দুর্নীতি তো
থেকেই যাবে।
পানরত ৪- কী চান আপনি? কোরাপ্ট
লোক ধরে ধরে ফাঁসিতে ঝোলানো? যতই সততা চান, গণতান্ত্রিক দেশে সেটা সম্ভব হবে না।
পানরত ১- তাই তো বলছিলাম, গত
সতেরো বছরে যা হলো না — আগারবি কি তা করতে পারবে?
পানরত ২- আমি কিন্তু আশাবাদী। এই
মানুষটার মধ্যে এমন কিছু আছে, যা অঘটন ঘটাতে পারে - মনে আছে, যোজনা কমিশনে থাকার
সময় তার শিল্পায়নের প্রতি গুরুত্ব দেওয়ার কথা — আর সেটার জন্যই তো আজ
আমাদের ডেভেলাপমেন্ট। যত কমই হোক না কেন, সম্ভব
তো হয়েছে!
পানরত ৩- আপনি কি মনে করেন না – ইনভেস্টমেন্ট-এর
নামে দেশে বেনোজল ঢোকানো হছে! শিল্পায়নের নামে বিদেশী বিনিয়োগে দেশী শিল্পের
নাভিশ্বাস ওঠানো হছে!
পানরত ১- এটা কিন্তু ঠিক ভাবনা
নয় — দেশী শিল্পকে টিকে থাকতে হলে কমপিটিটিভ হতেই হবে - আর সেইখানেই
কোয়ালিটেটিভ ডেভেলাপমেন্ট আসে।
পানরত ৪- আর তার আগেই যদি শিল্প
টেঁসে যায়? কম্পিটিশনে নামার জন্য আর্থিক সঙ্গতি আছে কি?
পানরত ২- দেখুন, কোনোরকম তত্ত্ব
বা তর্ক’র মধ্যে আমি থাকতে চাই না। আমি শুধু এটুকু বলতে চাই - আগাবরির
দৃষ্টিভঙ্গী স্বছ এবং প্রগতিশীল। আপাতদৃষ্টিতে অর্থনীতি
রুদ্ধ মনে হলেও তা আগামী দিনে সূদুর প্রসারী হবে।
পানরত ৩- এ রকম আশ্বাসে মানুষ আর
বিশ্বাস করে না। সকলের কান পচে গেছে।
পানরত ৪- হ্যাঁ, আজকাল তো সংবাদ
মাধ্যমও এ ব্যপারটাকে কোনো গুরুত্ব দেয় না। তারা মনে করে, এ নেহাৎই কলম, সময় এবং
অর্থের অপচয়।
পানরত ১- করাপশন রন্ধ্রে রন্ধ্রে
— ব্ল্যাকমানি ডিপোজিটের যদি কোনো অলিম্পিক হতো - তা হলে বোধহয় আমাদের
দেশই গোল্ডমেডেল পেত।
পানরত ৩- হ্যাঁ, ডিজ-অনেষ্ট
ইন্ডাষ্ট্রিয়ালিষ্ট, স্ক্যান্ডালাস পোলিটিশিয়ান এবং কোরাপ্ট আমলারা টাকা জমিয়েই
যাছেন — বিদেশী ব্যাঙ্কে।
পানরত ৪- অথচ দেশের বিদেশী ঋণের
পরিমাণ কিছুই কমছে না।
পানরত ২- আমি কিন্তু এখনো
আপনাদের সঙ্গে একমত হতে পারছি না। তাঁর ভাবমূর্তি
এবং সততা নিশ্চয়ই তাঁকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করার সাহস দেবে। সরকার
যদি সমর্থন করে, তবে দেশের অর্থনীতি এবং আর্থিক পরিকাঠামোর নিশ্চয়ই উন্নতি হবে।
(কিছুক্ষণ সবাই চুপচাপ)
পানরত ১- ভালো, ভা্লো, ...আর্থিক
পরিকাঠামো ভালো হলেই ভা্লো -- তবে এই দেশে... রাত হলো, চলি — গুডনাইট।
পানরত ৩- আমিও চলি, -- গুডনাইট।
(১,৩ চলে যায়)
পানরত ৪- (২কে) বাড়ি যাবেন না?
পানরত ২- হ্যাঁ যাব, আপনি বরং এগোন --
(৪ অবাক হয় — তারপর বেরিয়ে যায়, ২ আর একবার পানীয় ভরে নিয়ে এসে বসে — একাই টোষ্ট করে--) ‘এ দেশের ভালো হোক’।
(আস্তে আস্তে পান করতে থাকে। আলো কমে আসে।)
(দৃশ্যান্তর)
(২)
(অর্থমন্ত্রী - ইগনাসিয়াস আগারবি’র অফিস)
মারিয়া- (ফোনে...) হ্যাঁ আমি মারিয়া, মাননীয়
অর্থমন্ত্রীর আপ্ত-সহায়ক। আমি বুঝতে পারছি, আপনার
অ্যাপয়ন্টমেন্টটা হয়তো খুবই জরুরী, কিন্তু আমি সত্যিই দুঃখিত যে, আগামী সাত দিনের
মধ্যে আপনাকে আমি সময় দিতে পারছি না। আজ
মঙ্গলবার, আগামী সপ্তাহের বুধবার বেলা সাড়ে চারটার সময় যদি আপনার পক্ষে সম্ভব হয়, তবে
দেখা করতে পারেন।(একটু অপেক্ষা)। হ্যাঁ বলুন, তবে তাই রইল,
আগামী বুধবার, উনিশ তারিখ, সাড়ে চারটে। ধন্যবাদ।
(ইন্টারকমের শব্দ)
হ্যাঁ
স্যার, আসছি।
ইগনাসিয়াস- আসুন, বসুন
মারিয়া, প্রেসিডেন্টের অফিস থেকে যে কনফিডেন্সিয়াল চিঠিটা এসেছে, তার জন্য প্রেসিডেন্টের
সঙ্গে দেখা করা দরকার। আপনি ব্যবস্থা করুন।
মারিয়া- ঠিক আছে স্যার।
ইগনাসিয়াস- আর শুনুন, এই এক
বছরের মধ্যে শুদ্ধিকরণ অর্থাৎ দুর্নীতি-দূরীকরণে আমরা কী কী পদক্ষেপ নিয়েছি, তার
একটা বিস্তারিত প্রতিবেদন আমার চাই।
মারিয়া- সৌভাগ্যক্রমে সেই
প্রতিবেদন আমরা বাজেট রিপোর্ট-এর সংযোজনী হিসাবে তৈরি করে রেখেছিলাম।
ইগনাসিয়াস- গুড, মিস
মারিয়া, আপনি সত্যিই খুব ভালো কাজ করছেন –ধন্যবাদ। আচ্ছা আপনি মনে করতে পারেন
এই প্রসঙ্গে উল্লেখনীয় কাজ কী কী? এবং সর্বসাধারণের কাছে তার
প্রতিক্রিয়া কি?
মারিয়া- স্যার, আপনি খবরের কাগজের বিষয় হয়ে উঠেছিলেন — যখন ঘুষ নেবার অপরাধে পুলিশের আই.জি.কে গ্রেপ্তার করা হয়। বিচার
বিভাগীয় তদন্তে চার মাসের মধ্যেই তিনি দোষী সাব্যস্ত হন এবং তাঁর দেড় বছর সশ্রম কারাদন্ড হয়।
ইগনাসিয়াস- (বিমর্ষ) দেখুন
মারিয়া, আমারো কি ভালো লাগে, কাউকে অভিযুক্ত করে শাস্তি দেওয়া? কিন্তু উপায় নেই — শাসনতন্ত্রে শৃঙ্খলা আনতে হলে কাউকে না কাউকে তো অপ্রিয় কাজ করতেই
হবে। আশাকরি আপনি আমায় সমর্থন করবেন।
মারিয়া- স্যার, আপনি আমার সমর্থনের কথা কী বলছেন — সমস্ত দেশবাসী এ ব্যাপারে খুশী। তাদের সমর্থনের কথা
ভাবুন! আর মিডিয়া সরাসরি প্রশংসা না করলেও
তারা কাগজে লিখলো- “অর্থমন্ত্রী ইগনাসিয়াস আগারবি
ব্যতিক্রমী, নজরকাড়া সিদ্ধান্ত নিয়েছেন”।
ইগনাসিয়াস- হ্যাঁ, কিন্তু
তবু মনটা বড় ভারাক্রান্ত লাগে, অবসাদ। কর্তব্যের খাতিরে কিছু কিছু মানুষের শত্রু হয়ে উঠছি।
মারিয়া- স্যার, ঝাড়ু দিলে ধুলো ওড়ে, হয় নাকে কাপড়
বেঁধে ঝাড়ু দিতে হয়, নয় ঝাড়ু দেবার আগে জল ছিটিয়ে
নিতে হয় -- ঝাড়ু দেবার প্রয়োজন কখনই ফুরিয়ে যায় না।
(কিছুক্ষণ চুপচাপ)
ইগনাসিয়াস- ধন্যবাদ মারিয়া,
খুব ভালো কথা বলেছেন — কথাটা মনে রাখবো। আছা মারিয়া, আপনি কি
বেহালা বাজান?
মারিয়া- বে—বেহালা!
ইগনাসিয়াস- শুনেছি বেহালা
বাজানো-বিনোদন। মনের ভার হাল্কা হয়, কাজের চাপের
থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আপনি কীভাবে নিজেকে ভারমুক্ত রাখেন?
মারিয়া- ওঃ, তাই! আমি স্যার
নানা রকম খাবার তৈরির প্রণালী নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করি। এই ধরুন আঙুরের রসে ডুমুর ভিজিয়ে
রেখে গেঁড়ে গুগলি দিয়ে রান্না করলে খেতে কেমন হয় --
ইগনাসিয়াস- কিন্তু মারিয়া,
আমি তো বেহালা বাজাতেও জানি না, আর রান্নারও কোনো শখ নেই — আমার বিনোদনের কী উপায়?
মারিয়া- একজন সৎ মানুষের মানসিক
চাপ তো হওয়া উচিৎ নয়! ‘ডেলি টাইমসের’ ভেলোপাল আপনাকে আখ্যা দিয়েছেন ‘সৎ
অর্থমন্ত্রী বা ইগনাসিয়াস আগারবি’। তবে স্যার, আর যাই করুন,
বেহালা বাজাবেন না।
ইগনাসিয়াস- কেন?
মারিয়া- শুনেছি রোম যখন পুড়ছিল,
নীরো তখন বেহালা বাজাচ্ছিলেন।
(কিছুক্ষণ চুপচাপ)
ইগনাসিয়াস- ঠিক আছে মারিয়া,
অনেক ধন্যবাদ। আপনি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎকারের
ব্যবস্থা করুন।
(দৃশ্যান্তর)
(৩)
(প্রেসিডেন্ট- জেনারেল ওটাবো’র অফিস)
প্রেসিডেন্ট- মিঃ ইগনাসিয়াস,
আপনি আপনার বাজেট ভাষণে উল্লেখ করেছেন-‘বিদেশী কোম্পানিদের সঙ্গে
অর্থনৈতিক বিনিয়োগ ও লেনদেনের সময়ে বহু কোটি ডলার
রাজস্ব সরকারী কোষাগার লোকসান করেছে, কারণ
সচিবরা মধ্যস্থতা করে সেই অর্থ ঘুষ হিসেবে নিয়েছেন।’
ব্যপারটা কি সত্যি? না আপনার মনগড়া?
ইগনাসিয়াস- মিঃ
প্রেসিডেন্ট, ব্যপারটা আপনার মনোযোগ আকৃষ্ট করেছে, তার জন্য আমি আপনাকে
ধন্যবাদ জানাই। আমি আপনাকে জানাতে চাই — বিদেশের সঙ্গে যে কোনো
লেনদেন, যার মূল্য এক কোটি ডলারের বেশি, সেইসব নথিপত্র আমি নিজেই পরীক্ষা করেছি।
প্রেসিডেন্ট- তাহলে এই বিপুল
পরিমান অর্থ যাচ্ছে কোথায়? কার বা কাদের পকেট ভরে উঠছে?
ইগনাসিয়াস- আমার ধারণা এই
বিশাল অঙ্কের টাকা স্যুইস ব্যাঙ্কে বেনামীতে জমা হচ্ছ।
প্রেসিডেন্ট- কোনো তথ্য বা
প্রমাণ আছে আপনার কাছে?
ইগনাসিয়াস- তথ্য নিশ্চয়ই
আমার কাছে আছে, তবে তা প্রমাণ করার মতো কোনো হাতিয়ার আমার কাছে নেই।
প্রেসিডেন্ট- তথ্য সম্পর্কে
কিছু জানতে পারি কি?
ইগনাসিয়াস- দেশের সর্বময়
কর্তাকে সে বিষয়ে অবহিত করতে আমার বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই, তবে গোপনীয়তা আমি
নিশ্চয়ই আশা করতে পারি!
প্রেসিডেন্ট- মিঃ ইগনাসিয়াস,
আমি আপনার প্রশংসা করি। আপনি দেখছি আমাকেও সন্দেহ’র
উপরে রাখেন না।
ইগনাসিয়াস- আমাকে ক্ষমা
করবেন মিঃ প্রেসিডেন্ট, হয়তো ঔদ্ধত্য প্রকাশ করে ফেলেছি। আসলে, আমার কাজটাই আমাকে
সন্দিহান করে তোলে।
প্রেসিডেন্ট- ঠিক আছে, ঠিক আছে,
বলুন, কি তথ্য আছে আপনার কাছে।
ইগনাসিয়াস- তথ্য অনুযায়ী
বিদেশী ব্যাঙ্কে বিনিয়োগ প্রায় ১৫০০ বিলিয়ন ডলার। আমাদের দেশের বিদেশী ঋণের প্রায়
১২-১৩গুন। দেশের প্রায় ৮০ হাজার লোক প্রতি বছর সুইজারল্যান্ড যান, যার মধ্যে ২৫
হাজার লোক ঘন ঘন –এরা অবশ্যই ট্যুরিষ্ট নন।
প্রেসিডেন্ট- হ্যাঁ, এর
গুরুত্ব আমি বুঝতে পারছি। শুনুন মিঃ ইগনাসিয়াস, এই অর্থ
উদ্ধারের জন্য যে অথরিটি অর্থমন্ত্রীর দরকার, তা চাইলে আমি তা অনুমোদন করব, কারণ আমিও
মনে করি এরা প্রগতির পথ অবরুদ্ধ করে রেখেছে –এরা দেশের শত্রু। এইসব
শয়তানদের পাকড়াও করতেই হবে।
ইগনাসিয়াস- ধন্যবাদ মিঃ
প্রেসিডেন্ট। আমি দু’টি ব্যপারে আপনার লিখিত অনুমোদন আশা
করব। এক - আমার ক্ষমতায় দেশদ্রোহীদের গ্রেপ্তার করা এবং দুই – তদন্তের কাজে বিদেশ যাত্রায় রাষ্ট্রদূতের সমান ক্ষমতা। আপনার লিখিত অনুমোদনের
পরিপ্রেক্ষিতে আমি আমার আরদ্ধ কাজ শুরু করে দেব।
প্রেসিডেন্ট- আপনার দ্বিতীয়
আবেদন আমার কাছে গ্রাহ্য হলেও প্রথমটা ভেবে দেখতে হবে। কাউকে গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা
আপনি নিজের হাতে নিতে চান কেন?
ইগনাসিয়াস- কারণ, তাকে
আটঘাট বেঁধে বেরিয়ে আসার কোনো সুযোগ না দেবার জন্য।
প্রেসিডেন্ট- বেশ, তবে এটার
জন্য আপনি বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে শুধু আমার অনুমতির জন্য আবেদন করবেন। আমি আবশ্যিক অনুমোদন দেব।
কিন্তু এ ক্ষমতা আমি সাধারণ ভাবে আপনার এক্তিয়ারে রাখার পক্ষে নই। আপনার অফিসে চার ঘন্টার
মধ্যেই প্রেসিডেন্টের সীলমোহর করা ক্ষমতা হস্তান্তরের চিঠি পৌঁছে
যাবে।
ইগনাসিয়াস- ধন্যবাদ মিঃ
প্রেসিডেন্ট! এবার আমায় যাবার অনুমতি দিন।
প্রেসিডেন্ট- একটু অপেক্ষা
করুন মাননীয় অর্থমন্ত্রী। এটা আপনি রাখুন।
ইগনাসিয়াস- (চমকে ওঠে) একি!
এ তো পিস্তল!
প্রেসিডেন্ট- হ্যাঁ মিঃ
ইগনাসিয়াস, এটা পিস্তল। এটা আপনি সঙ্গে রাখবেন। কারণ, দেশে আমার এবং
আপনার শত্রুর সংখ্যা প্রচুর। আমার নিজস্ব ইন্টালিজেন্সের খবর। আপনার আত্মরক্ষার
প্রয়োজনে এটা ব্যবহারের অনুমতিও থাকবে।
ইগনাসিয়াস- ধন্যবাদ মিঃ
প্রেসিডেন্ট! আমি আরো একটা অনুমতি আপনার থেকে প্রার্থনা করব — এটা একটা উদ্দেশ্য প্রণোদিত পরিকল্পনা। আপনার এবং আমার মধ্যে সীমিত
থাকলে বাধিত হব।
প্রেসিডেন্ট- গোপনীয়তা বজায়
থাকবে তার আশ্বাস দিচ্ছি। তবে পরিকল্পনাটা না শুনলে তো অনুমোদন করতে পারছি না!
ইগনাসিয়াস- মাননীয়
প্রেসিডেন্ট, আমি অগাস্ট মাসে পূর্বনির্দ্ধারিত সরকারী ঘোষণা ছাড়াই বিদেশ যাত্রার
উদ্দ্যোগ নেব। আর পাঁচজন লাইজিরিয়ানের মতো দেশের মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ না করে আমি সপরিবারে
ফ্লোরিডা যাব --নিছক বেড়াতে। এ যাত্রার খরচ আমি নিজে
বহন করব। ফ্লোরিডা থেকে আমি একা জেনিভা যাব, ঘটনার সত্যতা
যাচাই করতে। আমার পরিবার জানবে, আমি বিশেষ কাজে
নিউইয়র্ক যাচ্ছি।
প্রেসিডেন্ট- বেশ, যদি আপনি
এভাবে কাজ করতে চান, আমার কোনো আপত্তি নেই।
ইগনাসিয়াস- হ্যাঁ মিঃ
প্রেসিডেন্ট, কাজটা গোপন রাখার জন্য আমি
নিজেই এটা করতে চাই। এবং সেই কারণেই আমি আপনার অনুমোদন প্রার্থী।
প্রেসিডেন্ট- ও. কে. মাননীয়
অর্থমন্ত্রী মিঃ ইগনাসিয়াস আগারবি! ভাগ্য আপনার সহায়ক হোক।
ইগনাসিয়াস- ধন্যবাদ মিঃ
প্রেসিডেন্ট!
(দৃশ্যান্তর)
(৪)
(‘গারবার এত্ সাই’ ব্যাঙ্ক চেয়ারম্যান, মিঃ মিশেল গারবারের অফিস)
গারবার– মোষ্ট ওয়েলকাম
অনারেবল মিনিষ্টার!
ইগনাসিয়াস- আপনাকেও অভিবাদন
মিঃ গারবার!
গারবার– বসুন, বসুন, উম, ....আপনার ব্রিফকেসটা ওখানে
রাখতে পারেন। আশা করি জেনিভাতে আপনার কোনো অসুবিধা হচ্ছে না।
ইগনাসিয়াস- না, না, আমি
ঠিকই আছি। আর এখন আবহাওয়াও সুন্দর। আমি আপনার
অফিসের প্রসংসা করি মিঃ গারবার! এ-এতো স্পেস — শুধু স্পেস নয়, তার সঙ্গে
রুচিসম্মত ফার্নিচার প্লেসমেন্ট – বাঃ, ঐ সুন্দর ধাতব
মূর্তিটা তো এই অফিসের শোভাই বাড়িয়ে দিয়েছে --
গারবার– ঐ মূর্তিটা ভারত থেকে নেওয়া — পেতলের — ওরা বলে ‘ডোকরা
আর্ট—’ তবে মাননীয় অর্থমন্ত্রী, আমি কিন্তু আপনাকে
আপনাদের জাতীয় পোশাকে আশা করেছিলাম।
ইগনাসিয়াস- যদিও দেশের
কাজের জন্যই আমি এখানে এসেছি, তবুও আমি আমার পরিচয় এখানে গোপন রাখতে চাই। তাই
জাতীয় পোশাক পরিনি। মিঃ গারবার, আমি আপনার থেকে জানতে চাই, আপনার অফিসে
কোনো লুকোনো ক্যামেরা বা মাইক্রোফোন নেই তো? আমার–আপনার সাক্ষাতের কোনো সাক্ষী আমি রাখতে চাই না। সে মানুষই হোক বা
যন্ত্র।
গারবার– মিঃ ইগনাসিয়াস,
আপনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন — গোপনীয়তা আমাদের মূলধন
এবং বিশ্বাস করুন, যোগ্যতাই আমাদের আত্মরক্ষার প্রধান হাতিয়ার।
ইগনাসিয়াস- মিঃ গারবার,
আমার রাষ্ট্রপ্রধান, প্রেসিডেন্ট জেনারেল ওটাবো, আমাকে এক অদ্ভুত কাজের আদেশ করে এখানে পাঠিয়েছেন।
কাজটা হলো, আমি যেন আপনার ব্যাঙ্কে এসে
খোঁজ নিই কোন্ কোন্ লাইজারিয়ান বেনামে আপনার এই ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট রেখেছে এবং তাদের নাম,
ঠিকানা, অ্যাকাউন্ট-নম্বর আপনি আমায় দেবেন।
গারবার– মাননীয় মন্ত্রী – আমার পক্ষে এ সব খবর দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ—
ইগনাসিয়াস- আমি আপনাকে
জানাচ্ছি — আমাদের দেশের প্রেসিডেন্ট এই
অনুসন্ধানের ব্যপারে আমাকে সর্বময় ক্ষমতা দিয়েছেন, এই নিন, প্রেসিডেন্ট জেনারেল
ওটাবোর সই করা ক্ষমতা-প্রদানের চিঠি।
গারবার– হুম, পড়লাম।
আপনি এটা রাখুন। কিন্তু, কিছু মনে করবেন না —আপনার দক্ষতা ও পদমর্যাদা
সম্বন্ধে বিন্দুমাত্র অসম্মান না করেই আমি জানাচ্ছি যে, আমার দেশের ব্যাঙ্কের আইনের কাছে এ চিঠি’র কোনো গুরুত্বই নেই। অন্য
কারো আদেশে আমরা নিজের দেশের ব্যাঙ্কের নিয়ম বদলাতে পারি না। কাষ্টমারদের কাছে
আমাদের বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় রাখাই সবচেয়ছে জরুরী বিষয়। কোনো
কারণেই আমাদের ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট হোল্ডারদের
নাম, ধাম, অ্যাকাউন্ট নম্বর ফাঁস করে দেওয়া সম্ভব নয়। আশা করি আপনি এ ব্যাপারের গুরুত্ব নিশ্চয়ই বুঝতে
পারছেন।
ইগনাসিয়াস- বসুন, বসুন মিঃ গারবার,
আপনি চেয়ার ছেড়ে উঠে
পড়লেই এই মিটিং শেষ হয়ে যাবে না। শুনুন এর বিনিময়ে আমাদের প্রেসিডেন্ট আপনার
ব্যাঙ্ককে আমাদের দেশ এবং আপনাদের সরকারের মধ্যে আন্তর্জাতিক অর্থলগ্নীকরণে
মধ্যস্থতার একমাত্র অধিকার দেবেন।
গারবার– আপনাদের
রাষ্ট্রপ্রধানের বিশ্বাস অর্জন করতে পেরে আমরা গর্বিত বোধ করছি। মাননীয় মন্ত্রী,
একজন বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ হিসেবে এ কথা আপনি নিশ্চয়ই মানবেন... কোনো প্রলোভনের
বিনিময়ে ব্যাঙ্কের আইন অমান্য করা যায় না — বা বদলান যায় না। এই প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতেও কাষ্টমারদের নাম, ধাম,
অ্যাকাউন্ট নম্বর দেওয়া সম্ভব নয়।
ইগনাসিয়াস- সেক্ষেত্রে,
জেনিভাতে আমাদের রাষ্ট্রদূত আপনাদের পররাষ্ট্র দপ্তরকে জানাতে বাধ্য হবে যে, লাইজিরিয়ার
স্বার্থে আপনাদের এই ব্যাঙ্ক সহযোগিতা করছে না। ...আশা করি আপনি বুঝতেই পারছেন
তাহলে কী হতে পারে! আশা করছি ব্যপারটা অতদূর
গড়াবার আগেই আর অযথা বিড়ম্বনা থেকে রেহাই
পেতে আপনি লাইজিরিয়ানদের গোপন অ্যাকাউন্ট-এর লিস্টটা আমাকে দিয়ে সহযোগিতা করবেন, আমি শপথ করে বলছি — সমস্ত ব্যাপারটাই অত্যন্ত গোপনে রাখা হবে।
গারবার– আমি দুঃখিত। এ ব্যাপারে
আমি আপনাকে কোনো সাহায্যই করতে পারবো না। আপনি যদি ইচ্ছে করেন, পররাষ্ট্র
দপ্তরে আমার নামে অভিযোগ জানাতেই পারেন, আর সেক্ষেত্রে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
আপনাকে নিশ্চয়ই যথোচিত ভাষায় বুঝিয়ে বলবেন যে, এদেশের ব্যাঙ্কের নিয়মাবলী কারও ব্যক্তিগত ইচ্ছা
বা অনিচ্ছা’র দ্বারা চালিত হয় না। তাঁর ক্ষমতা নেই এ নিয়ম
বদলে দেবার।
ইগনাসিয়াস- যদি পরিস্থিতি
সেইরকমই হয়, তবে আমি আমাদের বাণিজ্যমন্ত্রককে আদেশ করবো, আপনাদের সরকারের সঙ্গে
সমস্ত বাণিজ্যিক লেনদেন বন্ধ করে দেবার জন্য। এমন কী যে সব ক্ষেত্রে সহযোগিতা করা
হচ্ছে, তাও। যে সমস্ত কন্ট্রাক্ট সই হয়ে
গেছে, তাও যেন এখুনি বাতিল করে দেওয়া হয়।... এর ফলে আপনাদের সরকারের যে আর্থিক ক্ষতি হবে, তা
যাতে না দেওয়া হয়, সেটা আমি নিজে দেখবো।
গারবার– আপনার কি মনে হয়
না — সেটা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে একটা আইন ভঙ্গের ঘটনা হয়ে দাঁড়াবে?
ইগনাসিয়াস- তাতে আমার কিছু
আসে যায় না মিঃ গারবার — যে সরকার লাইজিরিয়ার সঙ্গে
সৌহার্দ্যপূর্ণ ব্যবহার করতে অস্বীকার করেছে, তারা যখন লাইজিরিয়ার কালো টাকা
নিজেদের ব্যাঙ্কে লুকিয়ে রাখে, আমাদের সরকারের
সঙ্গে সহযোগিতা করে না, তাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক ব্যবহার করা কি অস্বাভাবিক?
আমি আশা করি, আর পাঁচ মিনিটের মধ্যে নামধামগুলো আপনি আমাকে দেবেন — নইলে
পরবর্তী ঘটনাগুলোর জন্য আপনি দায়ী থাকবেন। মনে রাখবেন, আমি লাইজিরিয়ার
রাষ্ট্রপ্রধানের প্রতিনিধি। যা সিদ্ধান্ত নিচ্ছি, বা
নিতে বাধ্য করছেন — তা আমার দেশের মঙ্গলের জন্য — এবং তাতে আমার কোনো দ্বিধা নেই।
গারবার– মাননীয়
রাষ্ট্রপ্রধানের প্রতিনিধি, আবার বলছি — বিশ্বাসযোগ্যতাই
আমাদের একমাত্র মূলধন। কোনো কিছুর বিনিময়েই তা আমরা বিকিয়ে দিতে পারবো না। আমাদের ব্যাঙ্কের নিয়ম বদলানো যায় না -- সম্ভবপর নয়।
ইগনাসিয়াস- বেশ, সেক্ষেত্রে
আমি এখান থেকে বেরিয়েই আপনাদের এমব্যাসীতে যাব
এবং রাষ্ট্রদূতকে আদেশ করে বলবো, তিনি যেন আজই লাইজিরিয়ান এমব্যাসী বন্ধ
করে দেশে ফিরে যান আর রাষ্ট্রপ্রধান ওটাবো আপনাদের রাষ্ট্রদূতকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
করে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে দেশ ছেড়ে চলে যেতে বলেন। এরপর কাল লন্ডনে এক
আন্তর্জাতিক প্রেস কনফারেন্স ডেকে দুনিয়ার সমক্ষে জানাবো, কী
পরিপ্রেক্ষিতে এ কাজ করতে হয়েছে এবং আমাদের প্রেসিডেন্ট, জেনারেল ওটাবো কেন
ক্ষুব্ধ আপনাদের দেশের ব্যবহারে --। বুঝতেই পারছেন, যারা আপনাদের ব্যাঙ্কে গোপনে
অ্যাকাউন্ট রেখেছে, তারা তা বন্ধ করে দেবেন এবং যারা ভেবেছিল, দু-নম্বর টাকা রাখার এটা
স্বর্গোদ্যান, তারাও অন্য ব্যাঙ্কের খোঁজে যাবে।
গারবার– আমি এইটুকুই আপনাকে জানাতে চাই — আমি সত্যিই অপারগ।
ইগনাসিয়াস- এটাই আপনার শেষ
সিদ্ধান্ত? জানাবেন না? তাহলে আসুন, শেষ মোলাকাতটাও করে ফেলা যাক!
গারবার– ওকি! পিস্তল কেন? না, না, মিঃ আগারবি, এটা ঠিক
নয়...
ইগনাসিয়াস- এই পিস্তল আপনার
কপালে ঠেকিয়ে রাখলাম — অনেক চেষ্টা করেছি, আপনি রাজি হননি — তবে আমি হেরে ফিরে যাব না মিঃ চেয়ারম্যান! লাইজিরিয়ার যে সব মানুষ
আপনার ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট রেখেছে তার লিস্ট আমার চাইই। আমি তা নেবোই! আর তার জন্য
প্রয়োজনে গুলি করে আপনার মাথা উড়িয়ে দিতে
একবিন্দু দ্বিধা করব না।
গারবার– আপনি কিন্তু ঠিক
কাজ করছেন না... আপনি... আপনি... পিস্তলটা
সরিয়ে নিন...
ইগনাসিয়াস- নিন, আমার রুমাল
দিয়েই আপনার মুখের বিন্দু বিন্দু ঘামের ফোঁটাগুলো মুছে ফেলুন। আমি দশ পর্যন্ত
গুনবো, তার মধ্যে হয় বেনামী অ্যাকাউন্ট-এর
লিস্ট দিন, না হয়... এক... দুই... তিন... চার...
গারবার– তা সম্ভব নয় মিঃ আগারবি... আপনি
বোঝার চেষ্টা করুন...
ইগনাসিয়াস- পাঁচ... ছয়... সাত...
আপনি বলতে পারবেন না মিঃ চেয়ারম্যান যে, আমি আপনাকে সুযোগ দিইনি।
গারবার– না, না, মাননীয় অর্থমন্ত্রী... আমার অনুরোধ...
ইগনাসিয়াস- আট... নয়...দশ...
গারবার– (চীৎকার ক’রে) ন্ ন্ নাহ...
(কিছুক্ষণ চুপচাপ)
ইগনাসিয়াস- চোখ খুলুন মিঃ
চেয়ারম্যান! আপনি এখনও জীবিত। এবারে আমি যা বলবো — তা মন দিয়ে শুনুন! ওই ব্রিফকেসটা খুলুন--
গারবার– একি! অ্যাঅ্যাতো ডলার! সব পাঁচশোর নোট... কত আছে?
কী করবো আমি?
ইগনাসিয়াস- পঞ্চাশ লক্ষ
ডলার তো আছেই! আমি আপনাদের ব্যাঙ্কে একটা বেনামে অ্যাকাউন্ট খুলতে চাই। এখুনি ব্যবস্থা করুন। প্লিজ!
গারবার– ওঃ কী সাঙ্ঘাতিক
লোক আপনি মিঃ অর্থমন্ত্রী! আপনার মনে এই ছিল? তবে আমি ভবিষ্যদ্বাণী করছি — আপনাদের দেশে আপনি একজন সৎ অর্থমন্ত্রী হিসাবে তকমা পাবেন এবং দেশের
সর্বোচ্চ সম্মানে ভূষিত হবেন।
ইগনাসিয়াস- ধন্যবাদ মিঃ
চেয়ারম্যান! বুঝতে পারছি, রতনে রতন চেনে!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন